জান্নাতুন নাঈম প্রীতি : লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশিকে গুলি করে মেরে ফেলার শোকপ্রকাশ করার সময় এও জেনে রাখুন, লিবিয়া বা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে আমাদের শ্রমিকরা গিয়ে কী নিরাপত্তা আমাদের এম্বাসি দেয় সেইটার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হচ্ছে গতবছর সৌদি আরব থেকে নির্যাতিত মেয়েটার ভিডিও কল আর তার লাশ হয়ে ফেরা। আমাদের এম্বাসি শ্রমিকদের ব্যাপারে দায়সারা থাকলেও যে শিকদার গ্রুপের সেই দুই ভাই যারা এক্সিম ব্যাংকের এমডিকে গুলি করে জন্মের মতো খোঁড়া করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে, তাদের নিজস্ব এয়ার এম্বুলেন্সে পালিয়ে যাওয়ার পরে থাইল্যান্ডের বাংলাদেশি দূতাবাস তাদের শেল্টার দিয়েছে! মনে করে দেখে করোনায় প্রথম আক্রান্ত হয়ে মরা ডাক্তার মঈন এয়ার এম্বুলেন্স চেয়েও পান নেই, কিন্তু দুইজন তরতাজা অপরাধী বাংলাদেশের আকাশসীমা ব্যবহার করে পালিয়ে গেছে। পালানোর পরে আবার দেশের এম্ব্যাসি সবচেয়ে বেশি সাপোর্ট দিয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থাই সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে এই দুজন বিশেষ অপরাধীবাহী এয়ার এম্বুলেন্সকে যেন ল্যান্ড করার অনুমতি দেয়া হয়!
ইতালির সিসিলি যখন মাফিয়াদের স্বর্গরাজ্য ছিলো, তারাও সম্ভবত বাংলাদেশের শিকদার গ্রুপের কাজ দেখলে ইন্সপিরেশন পেতো। অপরাধের শেল্টারে রাষ্ট্রীয় এমন অভূতপূর্ব সুব্যবস্থা আর কারা দেবে? যে দেশের এম্বাসিগুলো তার শ্রমিকদের নিরাপত্তা দিতে পারে না, গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত সমীক্ষায় যে দেশে আট মাসে ২০৮৯ জন বিদেশে কর্মরত শ্রমিকের লাশ এসেছে, সেই পর্যন্ত প্রতি ৩ ঘণ্টায় যেদেশে একজন করে শ্রমিকের লাশ বিদেশ থেকে ফিরে, সৌদি আরব থেকে ফেরা শ্রমিক মেয়েদের লাশকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়া সৌদি এম্বাসিকে যে দেশের এম্বাসি ‘রেপের আলামত’ নিয়ে প্রশ্ন করতে পারেনি, তারা তাদের এম্বাসির পূর্ণ সমর্থন দিয়ে পার করে দিয়েছে নিজেদের মাফিয়াদের।
হাজার হোক শ্রমিকের রক্ত দিয়ে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি করে উন্নয়নের জোয়ার এনে সেই জোয়ারে অপরাধীদের অভয়ারণ্য প্রতিষ্ঠার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করতে সরকারকে আর তার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে একটা ধন্যবাদ দেয়াই যায়! এমন দেশটি দ্বিতীয়টি আপনি বিশ্বের আর কোথায় পাবেন? ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :