শিরোনাম
◈ প্রবাসীদের কাছে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো শুরু, যে প্রক্রিয়ায় ভোট দেবেন তারা ◈ বিশ্ব গণমাধ্যমে শহিদ ওসমান হাদির জানাজায় জনস্রোতের খবর ◈ শহীদ হাদির কবর দেখতে মানুষের ভিড়, রাতেও থাকবে পুলিশি প্রহরা ◈ হা‌দির মৃত‌্যু‌তে গ‌র্জে উ‌ঠে‌ছে বাংলা‌দেশ, যৌথবাহিনীর অভিযান আর গানম্যানে কি আইন-শৃঙ্খলা ফিরবে? ◈ প‌শ্চিমব‌ঙ্গে মোদীকে গোব্যাক ব‌লে, বাংলা‌দে‌শি অনুপ্রবেশকারীদের বলে না- অভিযোগ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর  ◈ মৃত্যুর কিছুদিন আগে সাক্ষাৎকারে যেসব কথা বলেছিলেন ওসমান হাদি (ভিডিও) ◈ তফসিলের ২ বিষয়ে সংশোধনী এনে ইসির প্রজ্ঞাপন ◈ হাদি হত্যার বিচার দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম, আজকের মতো শাহবাগ কর্মসূচি স্থগিত (ভিডিও) ◈ প্রথম আলো, ডেইলি স্টার অবশ্যই বন্ধ করতে হবে: রাকসুর ভিপি ◈ ওসমান হাদির লড়াইটা যেন আমরা পরিপূর্ণ করতে পারি: আখতার হোসেন

প্রকাশিত : ২২ মে, ২০২০, ০৭:১৩ সকাল
আপডেট : ২২ মে, ২০২০, ০৭:১৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া ও রাশিয়ার ভাইরাসের সঙ্গে মিলেছে চট্টগ্রামের করোনার ধরন

ডেস্ক রিপোর্ট : [২] চট্টগ্রাম বিভাগে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ৭ব্যক্তির নমুনা নিয়ে ভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জিন বিন্যাস উন্মোচনের করার কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রামের একদল গবেষক। এই ৭টি নমুনার মধ্যে ৩টি সৌদি আরব,২টি সিঙ্গাপুর, ১টি অস্ট্রেলিয়া ও ১টি রাশিয়ার ভাইরাসের সাথে মিল পাওয়া গেছে। এসব রোগীদের সাথে ওই দেশগুলোর কারও যোগাযোগের ইতিহাস রয়েছে কিনা তা বের করার চেষ্টা চলছে।

[৩] চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু), বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) এবং ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসের (বিআইটিআইডি) যৌথ গবেষণায় এ জিন বিন্যাস উন্মোচন হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন সিভাসুর প্যাথলজি অ্যান্ড প্যারাসাইটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. জুনায়েদ ছিদ্দিকী। সাতকানিয়ার একটি ও মহানগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে নেয়া ৬টি নমুনায় পাওয়া এসব জিন বিন্যাসের সঙ্গে ওইসব দেশে ছড়িয়ে পড়া নতুন করোনা ভাইরাসের জিন বিন্যাসের মিল পাওয়ার গেছে।

[৪] সিভাসুর প্যাথলজি অ্যান্ড প্যারাসাইটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. জুনায়েদ ছিদ্দিকী বলেন, এই গবেষণার ফলে কোন্ জেলায় কোন্ ধরনের ভাইরাস বিস্তার লাভ করছে, স্বরূপ, প্রকৃতি ও উৎপত্তিস্থল কোথায়, সময়ের সাথে সেগুলো কিভাবে পরিবর্তন হচ্ছে এসব গতিবিধিগুলো সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যাবে। এরফলে নিয়াময়ের বিষয়েও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়া সহজ হবে। ভবিষ্যতে টিকা উৎপাদনে কোন প্রজাতির করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন এখানকার জন্য প্রযোজ্য সেটা ঠিক করা যাবে।

[৫] তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামে কোন ধরনের ভাইরাস ছড়িয়ে যাচ্ছে, কোন দেশ থেকে আসছে এগুলা সব এখান থেকে ধারনা পাওয়া যাচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে ৭ টা নমুনা পরীক্ষায় আমরা সফল। কিন্তু অন্তত প্রত্যেকটা জেলা থানা থেকে যদি ১/২টা করে নমুনা পাওয়া যেত, তা হলে এটা আরো বেশি বোঝা যেতো। আমরা আরও ২০টি নমুনা ঢাকায় পাঠিয়েছি। আমরা আরও দেখতে পেয়েছি, ৩০ হাজার বেস পেয়ার জিনোম এর ৫ জায়গায় মিউটেশন হয়েছে। অর্থাৎ চট্টগ্রাম অঞ্চলে ভাইরাসটি কমপক্ষে ৫বার নিজেকে পরিবর্তিত (মিউটেশন) করেছে।

[৬] যে ৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় এই জিন বিন্যাস উন্মোচন করা হয়েছে তারা জীবিত এবং সুস্থ আছেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে যে ভাইরাসগুলো ছড়িয়েছে সেগুলোর চরিত্র বিশ্লেষণ করার কাজ করছি। কোন ধরনের ভাইরাস এখানে ছড়িয়েছে সেটা জানার চেষ্টা করছি। যেহেতু আমাদের ৭ জন পেসেন্টই বেঁচে আছে কেউ মারা যায়নি সুতরাং আমারা ধরে নিচ্ছি এগুলো খুব বেশি ক্ষতিকর না। তাছাড়া ঢাকার করোনা ভাইরাসগুলোর সাথে চট্টগ্রামের ভাইরাসের মিল পাওয়া যায়নি।

[৭] এই দাবির পক্ষে জোর দিয়ে তিনি বলেন, ৭ জনের মধ্যে ৮৫ বছরের একজন মহিলাও আছে অন্যদের বয়স হচ্ছে ৪২, ৪৩, ৩২ ও ৫৫। যেহেতু ৮৫ বছরের মহিলা এখনও জীবিত আছেন। সুতরাং আমরা মনে করছি এটা ভালো লক্ষণ। এই ভাইরাসটা অতটা ক্ষতিকর না।

[৮] এই গবেষণার কাজ চালু রাখার আগ্রহের কথা জানিয়ে সিভাসুর প্যাথলজি অ্যান্ড প্যারাসাইটোলজি বিভাগের এই অধ্যাপক বলেন, এই ধরনের গবেষণা কাজে আমরা পিছিয়ে আছি। চট্টগ্রামে আমরা প্রথম এমন একটা কাজ করলাম। আমরা এখন ৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪ ধরনের ভাইরাস পেয়েছি। যদি ১০০ করতাম, তবে আরো বেশি পেতাম হয়তো। এটা চালিয়ে নিতে চাই আমরা। আশা করছি সবাই এক্ষেত্রে সহযোগিতা করবেন।

[৯] এই গবেষণা কাজ চালিয়ে নিয়ে অর্থ সরবরাহ সবচেয়ে জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের ৪ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। কাজটা এগিয়ে নিতে ফান্ড প্রয়োজন। এটাতে যত টাকা পয়সা লাগে সরকার যেন দেয়। তাহলে আমাদের জন্য কাজ করা সহজ হবে।

[১০] দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর গত ২৫ মার্চ বিআইটিআইডি এবং ২৫ এপ্রিল সিভাসু শনাক্তকরণ কার্যক্রম শুরু করে। পরবর্তীতে সিভাসুর উপাচার্য অধ্যাপক গৌতম বুদ্ধ দাশের সমন্বয়ে ৩টি প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা ২ সপ্তাহ ধরে অত্যাধুনিক নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিং (এনজিএস) পদ্ধতিতে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণাগারে এই জিন বিন্যাস উদ্ধারে কাজ করেন। গবেষক দলের সদস্যরা হলেন সিভাসুর প্যাথলজি অ্যান্ড প্যারাসাইটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. জুনায়েদ ছিদ্দিকী, মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড ভেটেরিনারি পাবলিক হেলথ বিভাগের অধ্যাপক ড. পরিতোষ কুমার বিশ্বাস, ডা. ইফতেখার আহমেদ রানা, ডা. সিরাজুল ইসলাম, বিআইটিআইডির পরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ হাসান চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. শাকিল আহমেদ এবং বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের ড. মো. শহীদুল ইসলাম ও সাব্বির হোসেন।

[১১] সিভাসুর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিআইটিআইডির ল্যাবে পাওয়া নমুনা সংগ্রহ করে বিভিন্ন জেলার ১২টি নমুনা ঢাকার বিজেআরআই-এর জিনোম সিকোয়েন্সিং ল্যাবে পাঠানো হয়। এই পদ্ধতিতে ইলুমিনা নেক্সটসেক প্ল্যাটফর্মে প্রায় ২৩ গিগাবাইট জিনোম ডেটা সংগৃহীত হয়। পরবর্তীতে বায়োইনফরমেটিক্স অ্যানালাইসিসের মাধ্যমে মানব কোষের আরএনএ এবং করোনাভাইরাসের আরএনএ পৃথক করা হয়। এরপর সবগুলো সিকোয়েন্সকে জিনোম অ্যাসেম্বলি সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিশ্লেষণপূর্বক নভেল করোনা ভাইরাসের জিন বিন্যাস উদঘাটন করা হয়।

[১২] বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, চট্টগ্রাম ও এর পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে বিভিন্ন করোনা ভাইরাস পজিটিভ রোগী কোন ধরনের ভাইরাসে সংক্রমিত হচ্ছে, তা এই গবেষণার ফলে জানা সম্ভব হবে। দ্যা ডেইলিস্টার, চট্টগ্রাম প্রতিদিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়