শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৯ মে, ২০২০, ০৯:২৪ সকাল
আপডেট : ০৯ মে, ২০২০, ০৯:২৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রণাম রবীন্দ্রনাথ, আমার ঈশ্বর, আমার সখা হে

অজয় দাশগুপ্ত : কখনো শুনিনি শেক্সপিয়ারের লেখা নিয়ে কুটতর্ক বা কৌতুক করেছে ইংরেজ। শুনিনি গোর্কীকে নিয়ে রাশিয়ানদের মজা করার কথা। কিন্তু আমরা বাঙালিরাই একমাত্র জাতি যারা নিজেদের অপমানে এক পা এগিয়ে। বাংলাদেশে একদিকে যেমন তাকে ঘিরে জীবন প্রবহমান আরেকদিকে অপপ্রচার নিন্দা আর ধর্মীয় বিদ্বেষের শিকার তিনি। মনে মনে জাতীয় সংগীতটি নিয়ে কতোজনের দ্বিধা আছে সেটা তার ভাষায়, ‘মনই তাহা জানে’। ইদানীং নতুন প্রজন্মে মানে যৌবন ও তারুণ্যে তার চরিত্র নিয়ে সংশয়। কৌশলে ঢোকানো হয়েছে ভাতৃষ্পুত্রী ইন্দিরার গল্প। কিন্তু মজার ব্যাপার এই এতোসব নিন্দাটিন্দা শেষে ক্লান্ত হয়ে নিজে নিজে গুণগুণ করে, ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো প্রভু। ওপার বাংলায়ও কঠিন অবস্থা। তার গান নিয়ে কদিন আগে কী সব কা- হলো। তাদের অক্ষম ও অবাধ যৌন রুচির সঙ্গে মিলিয়ে চাঁদ উঠেছিলো গগনে গানটির বিকৃতি অবক্ষয়ের দলিল। জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়ির কাছের দোকানদারটি বলে, কোন সা ঠাকুর ভাইয়া? পাতা নেহী জী। এতোসব কিছুর পরও তিনিই আছেন। বুকে হাত দিয়ে বলুন তো এমন আর কে আছে যিনি রোজ একবার হলেও মনে দোলা দিয়ে যায়? গল্প গদ্য কবিতা বাদ দিলে, কঠিন মন খারাপের সময়ে কে হাত রাখে মাথায়? কার কথায় চোখ ভিজিয়ে ডাকতে পারি, জীবন যখন শুকায়ে যায় করুণা ধারায় এসো। ছবিটি দেখুন, তিনি তার শান্তিনিকেতনের আশ্রমে তরু ছায়ায় আয়েশ করে বসে। তাকে কোথাও যেতে হয়নি ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নেহেরু স্বয়ং পায়ের কাছে বসে আছেন কাঁচুমাচু হয়ে। তার কন্যা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সাহসী নেতা ইন্দিরা গান্ধীর জীবন গড়ে দিয়েছিলো তার এই শান্তিনিকেতন। অমর্ত্য সেন, শান্তিদেব ঘোষ, সৈয়দ মুজতবা আলী থেকে অমিয় চক্রবর্তী কে ছিলেন না সেখানে? কী এক অদ্ভুত মানুষ। শুধু গান কবিতা নাটক গদ্যেও থামেননি। বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের সঙ্গে দেখা হয়েছিলো তার। সখ্যতা ছিলো তাদের। সে দেখায় আইনস্টাইন জানতে চেয়েছিলেন সত্যেন বোসের কথা। কিঞ্চিৎ বিব্রত কবি লজ্জা পেয়েছিলেন। তিনি সত্যেন বোসের কথা তেমন জানতেন না। এরপর দেশে ফিরে কি করলেন জানেন? বিজ্ঞানের উপর রীতিমতো পড়াশোনা করে নিজে একখানা বিজ্ঞান বিষয়ক বই লিখে ফেললেম যার উৎসর্গপত্র হয়েছিলো বিজ্ঞানী সত্যেন বোসের নামে। এই তার শ্রদ্ধা ও পাপ মোচনের প্রক্রিয়া। যতোদিন বাঙালি থাকবে ততোদিন পরম বিস্ময়ে আনন্দে বেদনায় মনে করবে, আজি এই প্রভাতে রবির করো, কেমনে পশিলো প্রাণের পর। প্রণাম রবীন্দ্রনাথ, আমার ঈশ্বর, আমার সখা হে। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়