রাজু আলাউদ্দিন : [২] হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তোলার ব্যাপারে দ্বিমত। বাংলাদেশে লকডাউন কাজ না করায় হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তোলাই করোনা মোকাবেলার বিকল্প উপায় মনে করছেন বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। তবে তার বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন আরেক সাবেক উপাচার্য কামরুল হাসান খান ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মুশতাক হোসেন। আর স্বাস্থ্য সচিব বলছেন, বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিবে সরকার।
[৩] হার্ড ইমিনিউনিটি বলতে বোঝায় ভাইরাসের বিরুদ্ধে মানব শরীরে শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। যারা একবার ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়, তাদের মধ্যে ওই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়।
[৪] এভাবে বেশি মানুষ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে থাকলে এক সময় বড় সংখ্যক মানুষের মধ্যে ভাইরাসের প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। যার কারণে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যে সুরক্ষা বলয় তৈরি হয় এবং ওই রোগটির সংক্রমণ থেমে যায়। করোনাভাইরাসে হার্ড ইমিউনিটি হতে হলে অন্তত ৭০ থেকে ৯০ ভাগ মানুষ সংক্রমিত হতে হবে।
[৫] বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক নজরুল ইসলামের মতে, করোনা মোকাবেলায় হার্ড ইমিউনিটিই এখন বিকল্প উপায়। তিনি বলেন, করোনা প্রতিরোধ করতে গিয়ে আমরা যেসব পদক্ষেপ নিয়েছি সেগুলো তেমন সফল হয়নি। এখন আমাদের হার্ড ইমিউনিটির উপর নির্ভর করতে হবে।
[৬] তবে এই বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা। বরং আরো কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার পরামর্শ তাদের। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান বলেন, হার্ড ইমিউনিটি কোন সমাধান না। এর জন্য অপেক্ষা করতে করতে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা আরও অনেক বেড়ে যাবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যে নির্দেশনাগুলো দেয়া হয়েছে, যারা সেগুলো মেনে চলছে তারাই কিন্তু সফল হয়েছে।
[৭] আইইডিসিআর উপদেষ্টা ড. মুশতাক হোসেন বলেন, হার্ড ইমিউনিটি মারাত্মক ভুল ধারণা। এটির কথা আমাদের চিন্তা করাই উচিত না। যারা বিভিন্ন সমস্যার কারণে লকডাউনে মানতে পারছেন না তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য করা উচিত। কোন কারণেই লকডাউন শিথিল করা যাবে না। আর না হলে আমরা মারাত্মক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বো।
[৮] আর স্বাস্থ্য সচিব মোহাম্মদ আসাদুল ইসলাম বলেন, বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে সঠিক সিদ্ধান্তটিই নেয়া হবে। বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়টি দেখছেন। তারা বিভিন্ন উপায় খুঁজে বের করছেন। বাংলাদেশে হার্ড ইমিউনিটি গড়ে তুলতে হলে প্রায় ১৫ কোটি মানুষকে করোনায় আক্রান্ত হতে হবে। উন্নত বিশ্বের কোন কোন দেশ এরকম চিন্তা করলেও পরে পিছিয়ে আসে। ডিবিসি নিউজ