আশরাফ আহমেদ, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: [২] "পথের কিনারে মোর ধানক্ষেত, সবুজ পাতার পরে, সোনার ছড়ায় হেমন্তরানী সোনা হাসিখানি ধরে। মাঝে মাঝে এর পাকিয়েছে ধান ,কোন খানে পাকে নাই, সবুজ শাড়ি অঞ্চলে যেন ছোপ লাগিয়েছে তাই।"পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের কবিতায় এভাবেই চিত্রিত হয় সবুজ মাঠ জুড়ে ধান ক্ষেতের দৃশ্য।
[৩] বর্তমানে গ্রাম বাংলার মাঠ জুড়ে কৃষকের ফলানো ধানের ছড়াছড়ি। বোরো ধানের চনমনে গন্ধে মাতোয়ারা কৃষক। দিগন্তজোড়া মাঠ সেজেছে এজন্য হলুদ- সবুজ রঙে। ঘাম ঝরানো স্বপ্নের ফসল গড়ে তুলে আনতে কৃষক এখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই ধান বিক্রির পর কিষাণীর গায়ে উঠবে নতুন শাড়ি, শিশুরা পাবে ভালো মানের খাবার, রঙিন জামা। কৃষাণ ,কৃষাণির বাড়ি বাড়ি শুরু হবে পিঠা-পায়েস, ক্ষির ,ফিন্নি ও নানান রকমের খাবারের মহোৎসব।
[৪] বিশ্বে করোনার ভয়াবহ ছোবলের পর ও অনুকূল আবহাওয়া কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও মাঠ পর্যায়ের তদারকির কারণে চলতি বোরো মৌসুমে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক ধান উৎপাদন হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের।
[৫] বোরো ধান আবাদে কৃষকের উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি অনেকেই চাষের প্রশিক্ষণ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। তবে চলতি মৌসুমে উচ্চ ফলন ও হাইব্রিড ধান আবাদ লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করার অন্যতম কারণ।
[৬] উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, চারিদিকে এখন বোরো ধানে শীষ ছেড়ে আছে মাঠের পর মাঠ। মাঠে মাঠে সোনার ধান দেখে হাসি ফুটছে কৃষকের মুখে।নতুন করে আর কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার বোরো ফলনের রেকর্ড ছাড়াবে বলে আশা ব্যক্ত করেন স্থানীয় কৃষক।
[৭] কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৭হাজার ৯ শ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার মেট্রিক টন। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর আবাদ হয়েছে অধিক জমিতে।
[৮] উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের চরকাটিহারী গ্রামের চাষি সাইফুল ইসলাম, সাহেবের চর গ্রামের চাষি লোকমান, হেলালসহ অনেকেই জানান, দেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত ও পর্যাপ্ত উন্নত ধরনের বীজ, সার ও কীটনাশক প্রয়োগে ধানের ফলন অধিক হওয়ার কারণ। সপ্তাহখানেকের মধ্যে শুরু হয়ে যাবে ধান কাটা। কান্দা জমিতে যে ধান চাষাবাদ করা হয়েছিল তা পাকায় কাটা শুরু হয়েছে। এবছর ধানের অধিক ফলন হবে। তবে ধানের দামে বেজায় খুশি কৃষক।
[১০] এ ব্যাপারে উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ইমরুল কায়েস জানান, এ বছর দেশে ভয়াবহ করোনার প্রাদুর্ভাবের পরেও কৃষকদেরকে পরামর্শ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করেন। তবে আর কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বিগত বছরের তুলনায় অধিক উৎপাদন হবে বলে জানান তিনি। সম্পাদনা: ইস্রাফিল হাওলাদার
আপনার মতামত লিখুন :