মুসবা তিন্নি : [২] মহামারী করোনার প্রভাবে সারা বিশ্ব আজ প্রায় অচল। সারা পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক দেশ আজ লকডাউন। হিমশিম খাচ্ছে আমদানি রপ্তানি। বাংলাদেশেও বর্তমানে করোনার প্রভাবে বাড়ছে মৃতের হার, তবে এদেশের কিছু অংশের মানুষ রয়েছে যাদের কাছে করোনার চেয়ে পেটের ক্ষুধার মূল্য অনেক বেশি। রাজশাহী অঞ্চলের মর্জিনা, বয়স ৫০ এর কোঠায়। তার জোড়ালো দাবি দেশে এতো খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে কিন্তু সে যেখানে থাকে সেখানে তার খোঁজ নেয়ার কেউ নেই।
[৩] আমাদের নতুন সময় এবং আওয়ার টাইমের স্টাফ রিপোর্টার সরজমিনে তার সাথে কথা বললে সে জানায়, সে হোটেলে কাজ করতো কিন্তু বর্তমানে হোটেল বন্ধ হওয়ায় তার আর কোনো কাজ নেই। ছেলে, মেয়ে এবং এক নাতি সহ চারজনের পরিবার এখন প্রায় অভুক্ত বলে সে জানায়। রাজশাহী জাহাঙ্গীর স্মরণির রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল ইউনিট কমান্ড কার্যালয়ের বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদে অনেক আগে এক ভদ্রলোক তাকে থাকার জন্য একটু জায়গা দিয়েছিলো বলে সে জানায়। সময় খুব একটা খারাপ যেতোনা তার, কার্যালয়ের ভেতরের অফিসগুলো খোলা থাকলে তার সমস্যা তেমন একটা ছিলোনা। তবে বর্তমানে হঠাৎ করেই ১৫ দিনের মতো পুরো শহর লকডাউনে চলে যাওয়ায় তার নিজের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে ঘরে খাওয়ার মতো কিছু নেই।
[৪] মর্জিনা জানায়, কিছুদিন আগে ত্রানবাহী গাড়ির কাছে সে সহায়তা নেয়ার জন্য গেলে তাকে ত্রান না দিয়ে অপমান করে অকথ্য ভাষায় ধাক্কা দেয়া হয় এবং সেখান থেকে চলে যেতে বলা হয় । সে জানায় এমন জায়গায় সে থাকে যেখানে তাদের খোঁজ নেয়ার কেউ নেই। কারও ভাবনাতেও নেই মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভেতরে মানুষ থাকে।
[৫] কথা প্রসঙ্গে তিনি জানান, একবার ক্ষুধার তাড়নায় পথচারী এক মোটরসাইকেল আরোহীর কাছে টাকা চেয়েছিলো সে, পথচারী তাকে দশটাকা দিয়ে সাহায্য করেছিলো এবং বলেছিলো আমরাও চাকরি করি চাচী আমাদেরও বেতন হয়নি দেশটা হঠাৎ থেমে গেছে সামনে কি হবে বলা মুশকিল।
মর্জিনা বলে, আমরা তো রোগ বুঝিনা পেটের ক্ষুধায় বুঝি, পেটের ক্ষুধা নিয়েই জন্ম আমাদের, পেটের জন্যই খাটি। রোগ আমাদের মারতে না পারলেও ক্ষুধা আমাদের ঠিকই মেরে ফেলবে।
আপনার মতামত লিখুন :