এস এম নূর মোহাম্মদ : [২] নির্দেশ অনুযায়ী শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে দলে দলে ঢাকা আসায় সমালোচনার মুখে কারাখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সাভার, আশুলিয়া এবং গাজীপুরে কিছু কারখানা খোলা রেখে শ্রমিকদের কাজ করানোর পর শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। এরপর সোমবার প্রধানমন্ত্রী সব কারখানা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। তবে কারখানা বন্ধ হলেও বকেয়া বেতন না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন শ্রমিকরা। এদিকে করোনা পরিস্তিতিতে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে বলেছেন আইনজ্ঞরা। তারা বলেন, এই পরিস্থিতিতে বেতন না দেয়াটা খুবই অমানবিক।
[৩] সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, শ্রমিকদের নিয়ে আগে থেকেই পরিকল্পনা করা উচিৎ ছিল। কারা শ্রমিকদের আসতে বললো তাদের খোঁজে বের করে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। আর মনে হচ্ছে সরকারের পরিকল্পনাতেও ভুল ছিল। সামনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। যারা চলে এসেছে তাদের আইসোলেশনে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। যাতে কেউ আক্রান্ত হলেও তা ছড়াতে না পারে। তাই শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দ্রুত পরিশোধ করতে মালিকদের বাধ্য করতে সরকারের হস্তক্ষেপ করা দরকার বলে মনে করেন তিনি।
[৪] ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, যেসব শ্রমিক ঢাকায় এসে পড়েছেন তাদের নিরাপদে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে, রাস্তায় ঠেলে দেয়া যাবে না। শ্রমিকদের জীবন কোন কারণেই সস্তা নয়। তাদের খাবারের দায়িত্ব সরকার ও মালিক পক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে। সেইসঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে সবার বেতন-ভাতা পরিশোধে প্রয়োজনে মোবাইল ব্যাংকিং এর সাহায্য নেয়া যেতে পারে। আর এ সময়েও কারখানা খোলা রাখা দ্বৈত নীতি এবং বেআইনি বলে উল্লেখ করেন তিনি। এছাড়া ২০১৮ সালের রোগ প্রতিরোধের আইনেও মালিকরা কারখানা খোলে অপরাধ করেছেন বলে জানান জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
[৫] ব্যারিস্টার সাইয়েদুল হক সুমন বলেন, কারখানা খোলা লকডাউনের কনসেপ্টের সঙ্গে যায়না। বিষয়টি সংবিধান অনুযায়ী সমান অধিকারের লংঘন। আর সুরক্ষা না দেয়াটা রাষ্ট্রের জন্য অবৈধ বলে বিবেচিত হবে। যেসব মালিক কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে লকডাউন ভাঙ্গার অপরাধে ব্যবস্থা নেয়া যাবে। করোনা পরিস্তিতিতে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়াটা হত্যা চেষ্টা হিসেবেও অভিহিত করা যায়। আর সরকার ব্যবস্থা না নেয়াটাকে তাদের ব্যর্থতা বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :