তাসলিমা আকতার : দশ লাখ শ্রমিক কাজের অনিশ্চয়তা আর ছাঁটাইয়ের সম্ভাবনা। ইতোমধ্যে ছাঁটাই শুরু হয়েছে। মধ্যবিত্তের দায় সরকার নিলেও শ্রমিকদের ‘বসে বসে খাওয়া’ (মালিকদের ভাষ্য) উপায় নেই। ১১ তারিখ পর্যন্ত ছুটিও শ্রমিকদের নয় এ ছুটি মধ্যবিত্তের। মালিকরা নিজেদের ব্যবসার ক্ষয়ক্ষতির হিসাব কষছেন। কিন্তু এতোদিন যে লাভ শ্রমিকের পুষ্টি, ক্যালোরি এবং কম মজুরির বিনিময়ে পেলেন তা হিসাব করলেন না। আজ বিপদের সময় তাদের ছুড়ে ফেলতে বাধছে না। লে অফের মধ্য দিয়ে বহু কারখানা অর্ধেক বেতন দেবে আর বাসাভাড়া। করোনার প্রভাবে তিন বিলিয়ন ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল হওয়ায় চাপ পড়ছে শ্রমিকদের কাঁধে। কতো নিষ্ঠুর ব্যবস্থা। যার কাঁধে চেপে ব্যবসায় লাভের পাহাড় গড়ে মালিকরা তাকে ছুড়ে ফেলছে বিপদে। আমরা প্রথম থেকে বলেছি আগাম বেতন দিতে হবে এবং কোনো শ্রমিক এই সময় ছাঁটাই করা যাবে না।
লে-অফ বা ছাঁটাই বা বরখাস্ত নয়। মালিক বায়ার দায়িত্ব না নিতে পারলে সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে। কিন্তু যাদের শ্রমে অর্থনীতির উন্নয়ন। ৮৪ শতাংশ রপ্তানি আয়, তাদের দায় একাঁধ ওকাঁধ করা হলো। সরকারও দায় নিলো না। ওয়ার্কার্স রাইটস কনসোর্টিয়াম এবং সেন্টার ফর গ্লোবাল ওয়ার্কার্স রাইটসের রিপোর্ট ও গবেষণায় দেখা যাচ্ছে দশ লাখ শ্রমিক কাজ হারাতে যাচ্ছে। করোনায় শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তো রইলোও একইসঙ্গে এখন না খেয়ে মরার দশা হবে। সরকার এবং মালিকপক্ষকে এখনো আহ্বান করছি শ্রমিকদের বিপদে না ফেলে দায়িত্ব নিন, তাতে আপনাদের জমানো লাভের টাকায় অল্পই টান পড়বে। বিদেশীয় ক্রেতাদেরও চাপ দিন। আর ভোক্তারা ২/৩ মাস নতুন জামা না পরলে কিছু হবে না। শ্রমিক ছাঁটাই না হলে করোনা আক্রান্ত না হলে ভবিষ্যতে আপনারা আরও লাভ করতে পারবেন। আর এখন এ সব অব্যাহত রাখলে ভবিষ্যতে এই শিল্পই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শ্রমিকরা কারও করুণা প্রার্থী নয়, তাদের হক হচ্ছে এই সময়ে ছাঁটাই না হয়ে বেতন পাওয়া ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার অধিকার পাওয়া। ফেসবুক থেকে