ডেস্ক রিপোর্ট : [২] মাস্ক না পরার অপরাধে নড়াইল সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মানিককে ঘণ্টাব্যাপী পেটানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় শেখহাটি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ, সহকারী ইনচার্জ ও কয়েকজন পুলিশের বিরুদ্ধে। আহত মানিককে চিকিৎসার জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।দেশ রূপান্তর, সমকাল, পুর্বপশ্চিম
[৩] এ ঘটনার বিচারের দাবিতে শনিবার নড়াইলের পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন আহতের মা লতিফা বেগম। লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, তরিকুল ইসলাম মানিক ঢাকায় একটি আসবাব তৈরির প্রতিষ্ঠানের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত। করোনাভাইরাসের কারণে প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিজ বাড়ি সদর উপজেলার শেখহাটি গ্রামে আসেন তিনি।
[৪] অভিযোগে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে তিনি কাঁচা বাজার করে ফেরার পথে শেখহাটি বাজারের মধ্যে সাদা পোশাকধারী শেখহাটি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই এনামুল ও অন্য একজন কনস্টেবল মাস্ক না পরায় তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন এবং মারতে ফাঁড়িতে নিয়ে যান। ফাঁড়িতে নেয়ার পর এসআই এনামুল, এএসআই আলমগীরসহ কয়েকজন কনস্টেবল প্রায় ১ ঘণ্টা থেমে থেমে রুল দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারতে থাকেন। পরে ফাঁড়ির সহকারী ইনচার্জ আলমগীরসহ তিন পুলিশ মানিককে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে নসিমনে সদর থানার ওসির কাছে আনলে তিনি এলাকায় গিয়ে বিষয়টি মীমাংসার কথা বলে ছেড়ে দেন।
[৫] এতে আরো বলা হয়, দুপুর ১টার দিকে মানিক সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে গেলে বিষয়টি এএসআই আলমগীর টের পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে বাধা দেন। এ সময় মানিকের ভাই রতনের কাছ থেকে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনসহ মানিককে নিয়ে শেখহাটি চলে যান। পরে রাত ৮টার দিকে মানিকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে অ্যাম্বুলেন্সযোগে মানিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়।
[৬] হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তরিকুল ইসলাম মানিক বলেন, ‘ফাঁড়ির পুলিশ স্থানীয় এক লোকের মাধ্যমে প্রস্তাব দিয়েছিল বিষয়টি টাকা দিয়ে মীমাংসা করতে। কিন্তু আমি কোনো অন্যায় করিনি। তাই কোনো আপসে যাইনি। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’
[৭] শেখহাটি বাজার কমিটির সভাপতি মনিরুল ইসলাম সরদার বলেন, ‘৬/৭ জন পুলিশ মানিকের মাস্ক না থাকার অভিযোগে প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে বেধড়ক মারধর করে। আমরা বাজার কমিটির লোকজন পুলিশের হাত-পা ধরলেও তারা কোনো কথা শোনেনি।’
[৮] অভিযুক্ত শেখহাটি ফাঁড়ি ইনচার্জ এনামুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘সরকারি নির্দেশ মোতাবেক আমরা ডিউটি পালন করছিলাম। তার মাস্ক পরা ছিল না। তাকে এসব বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সে পুলিশের সঙ্গে বেয়াদবি করে। তাকে মারা হয়নি। সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়েছে’।
[৯] তিনি টাকার বিনিময়ে মীমাংসার বিষয়টি অস্বীকার করেন। এএসআই আলমগীর মানিককে চিকিৎসা নিতে বাধা দিয়েছে বিষয়টি ঠিক নয় বলে জানান।
[১০] নড়াইল পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম (বার) সাংবাদিকদের কাছে এ ব্যাপারে বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। দেশের এই অবস্থায় হয়তো কিছুটা ধাক্কাধাক্কি হতে পারে। তারপরও বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।