সারয়ার তুষার: গোটা পৃথিবী করোনাভাইরাসের থাবায় পর্যুদস্ত। ইতোমধ্যেই অসংখ্য মানুষ নিহত ও আরও বেশি সংখ্যক মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। থমকে গেছে গোটা পৃথিবী। সব রকমের সামাজিক-রাজনৈতিক তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। ক্লেইন এই সাক্ষাৎকারে দাবি করছেন তার দুই দশকের গবেষণালব্ধ অভিজ্ঞতা থেকে তিনি আঁচ করতে পারছেন, এ রকম একটা নজিরবিহীন সংকট ও সংকট-পরবর্তী সময়কে কীভাবে বিশ্বের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক এলিটরা তাদের ফায়দা লোটার কাজে লাগাতে পারে। যে নীতিগুলো হয়তো স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে গ্রহণ করলে প্রবল বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হতো রাষ্ট্রসমূহকে, সেই নীতিগুলোই এখন দুর্যোগের অজুহাতে অনায়াসে চাপিয়ে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ‘বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসের আতঙ্ককে কাজে লাগিয়ে ‘জরুরি অবস্থা’ জারির পাঁয়তারা চলছে। সরকারের সমালোচক কোনো কোনো রাজনীতিবিদকেও দেখা যাচ্ছে ‘জরুরি অবস্থা’ জারির দাবি জানাচ্ছেন। সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে ‘জরুরি অবস্থা’ জারির আবেদন জানিয়েছেন। অথচ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসনাত কাইয়ূম বলছেন, ‘মেডিকেল ইমার্জেন্সি’ আর ‘প্রক্লেমেশন অব ইমার্জেন্সি’ এক কথা নয়। আমাদের একদিকে ‘মেডিকেল ইমার্জেন্সি’ ঘোষণা করা দরকার এবং অন্যদিকে মানুষ যাতে সরকারের উপর নজরদারি এবং সরকারের ত্রুটি-বিচ্যুতি ও ঘাটতি নিয়ে আরও বেশি কথা বলতে পারে তার জন্য স্বাধীনতাও দরকার।
মেডিকেল ইমার্জেন্সির অজুহাতে ‘জরুরি অবস্থা’ জারি করে মানুষের যতোটুকু বাক স্বাধীনতা আছে তাও কেড়ে নিলে এ বিপর্যয় থেকে এখানকার মানুষদের রক্ষা করা যাবে না। ‘জরুরি অবস্থা’ জারি করার অর্থ হচ্ছে সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকারসমূহ রদ করা যাবে এবং এ নিয়ে আদালতে চাইলেই রিট করা যাবে না। করোনার মতো দুর্যোগে আমাদের দরকার নিরাপদ থেকে পারস্পরিক সহযোগিতা বজায় রাখা। সামাজিক সংহতিকে সুদৃঢ় করা। কোনোভাবেই এমন কোনো দাবি জানানো উচিত নয় যা আদতে রাষ্ট্রের কেন্দ্রীভূত ক্ষমতাকে আরও সুসংহত করে। করোনারকালে আমাদের দরকার শারীরিক দূরত্ব ও সামাজিক সংহতি। আমাদের দরকার আতঙ্কগ্রস্ত না হয়ে সর্বোচ্চ সক্রিয়তা ও সতর্কতা। ভিন্নভাবে সমাজকে সংগঠিত করতে পারার মতো একাগ্রতা ও রূপকল্প। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :