যুগান্তর : [২] বিশ্বের প্রায় ১৭০টির বেশি দেশে বিস্তার লাভ করেছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। মহামারী আকার ধারণ করা এ রোগে ইতিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ১২ হাজার মানুষ। বাংলাদেশেও করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ জন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখনই সচেতন না হলে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে ঘনবসতির বাংলাদেশ।
[৩] এ দিকে শনিবার দুপুরে রাজধানীর মিরপুরের উত্তর টোলারবাগের দারুল আমান নামের একটি ভবন ঘিরে রেখেছিল পুলিশ। ওই ভবনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজন মারা যাওয়ার পর আইইডিসিআরের নির্দেশে ভবনটি থেকে কাউকে বের হতে দিচ্ছিল না পুলিশ। এমনকি ভবনটির আশপাশে চলাচলও সীমিত করা হয়।
[৪] শনিবার বিকালে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের ডিসি মোস্তাক আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, মিরপুরের এক ভবনে একটি পরিবারকে হোম কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলকভাবে পালনের নির্দেশনা দিয়েছে আইইডিসিআর। সে জন্য ভবনটি নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ওই ভবন থেকে যেন কেউ বের হতে না পারেন। ওই ভবনে প্রবেশ সংরক্ষিত ও এলাকায় চলাচল সীমিত করা হয়েছে।
[৫] তবে বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতেই ওই বাড়িতে সেভাবে নজরদারি চোখে পড়েনি। এমনকি সেই বাড়ির দারোয়ানকেও বের হতে দেখা যায়। গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী যাওয়ার সময় ৭০ বছর বয়সী খলিল মিয়া এই প্রতিবেদকের মুখোমুখি হন। এ সময় তিনি বলেন, আমি এইহানে থাকি কি করুম। রাইতেই নোয়াখালীর পূর্ব চুল্লিকা চলি যামু।
তবে তিনি ছাড়া আর কেউ বাসা থেকে বের হননি বলে জানান। তাকে কোনো ধরনের পরীক্ষা করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি সুস্থ আমার কিছু হয়নি। আল্লাহ ভরসা কিছু হবে না। এরপরই তিনি তার মাল-সামান নিয়ে চলে যান।
[৬] ২০১৬ সাল থেকে দারোয়ান হিসেবে কাজ করা খলিল মিয়ার কাছ থেকে অত্যন্ত ছোঁয়াছে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পরতে পারে এমন আশঙ্কা করছেন টোলারবাগের স্থানীয় বাসিন্দারা। অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আমরা তো জানি সাত তলার সেই পরিবারটিকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। বাসাটি থেকে কাউকে বের হতেও নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু এভাবে কোনো নজরদারি না থাকলে রোগটি ছড়িয়ে পরতে পারে।
[৭] বিষয়টি দারুস সালাম থানার ওসিকে অবহিত করা হলে তিনি বিষয়টি দেখছেন বলে জানান। পরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কন্ট্রোল রুমের এক চিকিৎসক জানান, এভাবেও রোগটি ছড়াতে পারে। এরপর তিনি কভিড-১৯-এর কন্টোল রুমের ০১৩১৩-৭৯১১৩০ নাম্বারে কল দিতে বলেন। সেই নাম্বারে কল করা হলে তারা বিষয়টি দেখছেন বলে জানান।
[৮] জানা গেছে, বাসাটির সাত তলায় মেয়েজামাই প্রবাস থেকে সম্প্রতি দেশে ফেরেন। এরপর তার মাধ্যমে পুরো পরিবার আক্রান্ত হয়। এমনকি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান বাড়ির বৃদ্ধ গৃহকর্তা। ওই ভবনের অন্যদের নিরাপত্তা ও মৃতের পরিবারকে বাধ্যতামূলকভাবে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখতে পুরো ভবনটি লকডাউন করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :