মাজহারুল ইসলাম : [২] রাজধানীর মিরপুর দক্ষিণ পাইকপাড়ার ৬ নম্বর সড়কে দোতলা মসজিদের কাছে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। সময়টিভি
[৩] এখানেই আশ্রয়ে রয়েছে ৫ বছর বয়সী শিশু রাতুল। কোনও এক অজানা কারণে তার মা তাকে রাস্তার এক চায়ের দোকানে ফেলে রেখে যান। রাতুল জানায়, বরিশালের কোনও এক গ্রামে তার বাড়ি।
[৪] মা তাকে বলেছিলেন, ঢাকা বেড়াতে নিয়ে যাবেন। সে অনুযায়ী ঢাকা এসে মায়ের সঙ্গে শিশুপার্কের উদ্দেশে রওনা হয় রাতুলের। মাঝপথে মা তাকে বলেন, বাবা তুমি এখানে একটু বসো, আমি চিপস নিয়ে আসছি। তাপর সেই যে মা গেছে, আর ফেরে আসেনি। এরপর চা দোকানির মাধ্যমে থানা এবং থানার মাধ্যমে চাইল্ড কেয়ারে আশ্রয় পায় মিলটন সামাদ্দারের ।
[৫] তারপরও রাতুলের কোনও অভিনাম বা রাগ নেই মার ওপর। সে এখনো বিশ্বাস করে, বাবা-মা এসে তাকে নিয়ে যাবে। বড় হয়ে ডাক্তার হতে চায় রাতুল। ডাক্তার হয়ে চেম্বার বন্ধ করে, মায়ের জন্য ভাত আর মাছের ঝোল কিনে নিয়ে যাবে। মা প্রাণ ভরে তা খাবে, আর সে মাকে আদর করবে।
[৬] আড়াই বছরের ফুটফুটে শিশু সোয়াদ এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে আসে কিছু পুরুষরূপী পশুর লালসার কারণে। তার মাও এ পাপের দায় নিয়ে চলতে নারাজ। তাই তারও ঠিকানা হয় ওই চাইল্ড কেয়ার। আর তার মাকে পাচার করা হয় ভারতে। সোয়াদ বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী। দেড় লাখ টাকা হলে তাকে পুরো স্বাভাবিক করে তোলা সম্ভব বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
[৭] ৩ বছর বয়সী ময়নাকে পাওয়া যায় ডাস্টবিনে পলিব্যাগে মোড়ানো অবস্থায়। ১ বছর বয়সী টিয়ার মা তাকে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান। ৩ বছরের আরেকটি মেয়েকে রিকশায় বসিয়ে চিপস কিনে আনার কথা বলে আর ফেরেনি।
[৮] মানুষ এতো অমানুষ হয় কীভাবে। সভ্যতা ও উন্নয়ন কি দিন দিন আমাদের মানব থেকে দানব করে তুলছে। শ্রদ্ধা, স্নেহ, ভালোবাসা নামক শব্দগুলো আজ বিপর্যয়ের মুখে। একজন মা অথবা বাবা নিজ সন্তানকে ফেলে দিতে পারেন কিভাবে।
[৯] শিশুগুলোর কথা ও তাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা শুনে কোনও সুস্থ মানুষের পক্ষে নিজেকে ধরে রাখা সম্ভব না।
আপনার মতামত লিখুন :