শিরোনাম
◈ লটারিতে নির্ধারিত ৬৪ জেলার এসপি: সুষ্ঠু নির্বাচনে সরকারের নতুন উদ্যোগ ◈ মোহাম্মদপুরে ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা, বাবা গুরুতর আহত ◈ জাতীয় অর্থনীতি ও কৌশলগত সম্পদে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার শুধু জনগণের নির্বাচিত সরকারের: তারেক রহমান ◈ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ সম্পর্কে যা বললেন আইনজীবী পান্না ◈ দক্ষিণ এশিয়ায় জলবায়ু বিপর্যয়ের সতর্কবার্তা: ৯০% বাংলাদেশি উচ্চ ঝুঁকিতে ◈ নতুন আইনে বাতিল হচ্ছে অসংখ্য দলিল, রয়েছে জেল ও অর্থদণ্ড ◈ পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিল: পাসপোর্টের নতুন নিয়মে চমক ◈ আনন্দ বেদনার নারী কাবাডি বিশ্বকাপের পর্দা নাম‌লো ◈ মব ভাইরাসের তাণ্ডবে অতিষ্ট দেশ: ইসলামী বক্তা তাহেরী (ভিডিও) ◈ অনলাইন মার্কেটপ্লেসে নতুন দিগন্ত: অ্যামাজন-ইবে হয়ে রপ্তানির অনুমতি দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

প্রকাশিত : ২৪ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:৩৩ রাত
আপডেট : ২৫ নভেম্বর, ২০২৫, ০৭:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দক্ষিণ এশিয়ায় জলবায়ু বিপর্যয়ের সতর্কবার্তা: ৯০% বাংলাদেশি উচ্চ ঝুঁকিতে

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে পরিণত হবে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলো। বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানকে এর ভয়াবহ প্রভাব মোকাবেলা করতে হবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ঝুঁকি থেকে স্থিতিস্থাপকতা: দক্ষিণ এশিয়ায় মানুষ ও প্রতিষ্ঠানের অভিযোজনে সহায়তা’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি। সেখানেই উঠে এসেছে এ তথ্য।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ মানুষ চরম জলবায়ু ঝুঁকির মুখে পড়বে। উচ্চ তাপমাত্রা, ভয়াবহ বন্যা, উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততা বৃদ্ধি—সব মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে গ্রামীণ অর্থনীতি, কৃষি উৎপাদন ও কর্মসংস্থান। পারিবারিক পর্যায়েও ঝুঁকি বাড়বে বহুগুণ।

জরিপে দেখা যায়, আগামী ১০ বছরে আবহাওয়াজনিত ধাক্কার আশঙ্কা করছে দক্ষিণ এশিয়ার তিন-চতুর্থাংশ পরিবার ও প্রতিষ্ঠান।

এর মধ্যে ৬৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এবং ৮০ শতাংশ পরিবার কোনো না কোনোভাবে অভিযোজনমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা উন্নত প্রযুক্তি বা অবকাঠামোর বদলে কম খরচের সাধারণ সমাধানের ওপর নির্ভর করছে।

বাংলাদেশের উপকূলের ২৫০টি গ্রামে পরিচালিত জরিপে দেখা যায়, জলবায়ু-সহনশীল অবকাঠামোই এখন সবচেয়ে বড় অপূর্ণ চাহিদা। দীর্ঘ মেয়াদে ৫৭ শতাংশ পরিবার পর্যাপ্ত দুর্যোগ-সুরক্ষা অবকাঠামোর অভাবকে প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করেছে; ৫৬ শতাংশ পরিবার বলেছে, আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে তারা প্রয়োজনীয় অভিযোজন করতে পারছে না। এর প্রভাব শুধু পরিবেশগত নয়—সবচেয়ে বেশি ভুগছে দরিদ্র ও কৃষিনির্ভর পরিবার।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের বাঁধ, সাইক্লোন শেল্টারসহ সরকারি বিনিয়োগ অনেক প্রাণ বাঁচিয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের বিভিন্ন কেস স্টাডিতে দেখা গেছে—সঠিকভাবে লক্ষ্যভিত্তিক সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি এবং হালনাগাদ তথ্য দ্রুত সম্প্রসারণযোগ্য; যা দুর্যোগের সময় দরিদ্র মানুষের বড় সহায়ক হতে পারে। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে সরকারি উদ্যোগের পরিধি সীমিত—এ অবস্থায় জলবায়ু অভিযোজনে বেসরকারি খাতকে সামনে এনে একটি সমন্বিত নীতি-প্যাকেজ প্রয়োজন।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশের ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর জ্যাঁ পেসমে বলেন, বাংলাদেশের জলবায়ু সহনশীলতা বারবার নতুনভাবে পরীক্ষিত হচ্ছে। অভিযোজন ব্যাপক হলেও ঝুঁকি দ্রুত বাড়ছে, ফলে আরো কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন। দেশের সহনশীলতা গড়ে তুলতে আগাম সতর্কবার্তা ব্যবস্থা, সামাজিক সুরক্ষা, জলবায়ু-স্মার্ট কৃষি এবং ঝুঁকিভিত্তিক অর্থায়ন বাড়াতে হবে। শহরাঞ্চলে লক্ষ্যভিত্তিক হস্তক্ষেপও জরুরি।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনটি সমন্বিত ও বহুমুখী অভিযোজন কৌশল গ্রহণের তাগিদ দেয়। এতে বলা হয়—আগাম সতর্কবার্তা ব্যবস্থা, বীমা ও আনুষ্ঠানিক ঋণপ্রাপ্তি সহজ করা গেলে জলবায়ুজনিত ক্ষতির প্রায় এক-তৃতীয়াংশই এড়ানো সম্ভব। বেসরকারি খাত যদি প্রয়োজনীয় স্থানে দ্রুত বিনিয়োগ ও সম্পদ স্থানান্তর করতে পারে, তাহলে অভিযোজনের গতি আরো বাড়বে। বাজেট সংকটের মধ্যেও সরকার পরিবহন ও ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়ন, অর্থায়নে প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি এবং নমনীয় সামাজিক সুরক্ষা কাঠামো প্রবর্তনের মাধ্যমে বেসরকারি খাতকে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে দিতে পারে।

প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ অতীতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতের জন্য শক্ত ভিত্তি তৈরি করতে পারে। আগাম সতর্কবার্তা ও সাইক্লোন সেন্টারে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের সুফল ইতিমধ্যে মিলেছে—প্রাণহানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এটি দেখায়, সঠিক বিনিয়োগ ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারলে স্থানীয় অভিযোজনে সাফল্য আরো বাড়ানো সম্ভব।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় শক্তি, অবকাঠামো উন্নয়ন ও তথ্য সংগ্রহ সবই ব্যয়বহুল। জলবায়ু অভিযোজন মোকাবেলায় বাংলাদেশের অনেক পলিসি রয়েছে, তা বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জিং।

তিনি আরো জানান, এ বিষয়ে পাইলট প্রকল্প চলমান রয়েছে। তবে, সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগের সমন্বয়ে বাংলাদেশ বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছে। উৎস: নিউজ24

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়