কামরুল হাসান মামুন: আমার শাশুড়ি ৭৮ বছরের বৃদ্ধা। তিনি এখনো গাড়ি চালিয়ে বাজারে যান, নাতিনকে স্কুল থেকে নিয়ে আসেন, ঘরের কাজ করেন। অর্থাৎ স্বাভাবিক যা কাজ আগে করতেন এখনো করেন। ইতালিতে ৮০ বছর হলে ড্রাইভিং টেস্ট করাতে হয়। সেই টেস্টে পাস করলে ৮০ বছরের পরও গাড়ি চালানো সম্ভব। ইতালিতে তাই বৃদ্ধের সংখ্যা বেশি। আমার শাশুড়ি মা ১০০ বছর বয়সে মাত্র কয়েক বছর আগে মারা যান এবং শাশুড়ির বাবাও ১০২ বছর বয়সে মারা গেছেন। ইতালিতে নারীদের গড় আয়ু ৮২ এবং পুরুষের ৮০। ইতালির গ্রামাঞ্চলে প্রায় প্রতি ঘরেই বৃদ্ধ আছে। যেইসব জায়গায় করোনায় মৃত বেশি পাওয়া গেছে সেইসব জায়গায় বৃদ্ধের সংখ্যাও বেশি। ইতালির গড় আয়ু বেশি হওয়ার কারণ তারা আমাদের মতো সয়াবিন তেল খায় না। তারা খায় এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ তেল। তারা পান করে আঙুরের জুস দিয়ে তৈরি ওয়াইন।
আমাদের দেশের মানুষরা ৭০ বছর বয়সেই বার্ধক্যের পূর্ণ ছাপ। গাড়ি চালানো দূরে থাক নিয়মিত হাঁটাচলা করতেই পারে না। হাঁটুতে ব্যথা, হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিক ইত্যাদি নানা রোগে কাবু। হবে না কেন? কী পরিমাণ বিষ আমরা সেবন করছি? একদিকে এ সব দূষিত বাতাস সেবন, বিষাক্ত পানি পান আর ভেজাল খাদ্য খেয়ে আমাদের শরীর ইমিউন পাওয়ার ঠিকই অর্জন করেছে, কিন্তু এর বিনিময়ে জীবনীশক্তি হারিয়ে ফেলছি। অল্প বয়সেই নানা মরণব্যধিতে ভুগে মারা যাচ্ছি। ওইদিকে চিকিৎসার উন্নতি ও সচেতনতা বাড়ার কারণে আমরা শিশু মৃত্যু কমিয়েছি। এ জন্য আমাদের করোনা হয়তো কাবু করতে পারবে না, কারণ আমাদের শরীরে বিষ ঢুকে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দিয়েছে, কিন্তু তাড়াতাড়ি রোগে ভুগে ৮০ বছরের মধ্যেই পরপারে চলে যাই। ফেসবুক থেকে