আক্তারুজ্জামান : [২] সব পাওয়া এক সিরিজ শেষ করলো বাংলাদেশ। প্রথমবার প্রতিপক্ষকে তিন ফরম্যাটে হোয়াইটওয়াশ করার স্বাদ পেয়েছে টাইগাররা। টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টি কোনো ফরম্যাটেই বাংলাদেশের সামনে দাঁড়াতে পারেনি সফরকারীরা। ব্যাটে-বলে সমানভাবে রাজত্ব করেছেন তামিম লিটন সৌম্য মুশফিক মুস্তাফিজ আল আমিনরা। তাতে আনন্দ ফিরেছে টাইগারদের ড্রেসিংরুমে। কিন্তু পরিবেশ কতদিন থাকবে এটাই এখন বড় প্রশ্ন।
[৩] সফলভাবে সিরিজ শেষ করে জাতীয় টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ জানিয়েছেন এটা বড় অর্জন। এই অর্জনে পারফরম্যান্সের চেয়ে মানসিক শক্তির অর্জনটা আরও বেশি। ক্রিকেটাররা নিজেদের ছন্দ ফিরে পেয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে দলের মানসিকতারই জয়গান গাইলেন অধিনায়ক, ‘মানসিকতা, প্রথমে মানসিকতা এরপর পারফরম্যান্স। সবাই যে মানসিকতা ও খিদে নিয়ে খেলেছে, সেটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
[৪] তবে সামাজিক মাধ্যমজুড়ে টাইগারদের প্রশংসার চেয়ে জিম্বাবুয়েকে বেশি ধন্যবাদ দিয়েছেন ভক্তরা। তাদের মন্তব্যগুলো হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। টাকা নেই, বেতন নেই, অবকাঠামো নেই, অনুশীলন নেই, আলাদা আলাদা পেশায় থাকার পরও দেশের ডাকে সাড়া দিতে চলে আসেন মাঠে। এরপর প্রতিপক্ষের কাছে নাকানি-চুবানি খাওয়ার দগদগে ঘা নিয়ে মাঠ ছাড়া। তবুও তারা ক্রিকেটকে ভালোবাসে। আর তাদেরকে হারিয়েই আমরা মনোবল চাঙ্গা করি। ধন্যবাদ জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলকে। এভাবেই প্রশংসায় ভেসেছে সিকান্দার রাজা, টেইলর আর উইলিয়ামসরা।
[৫] কিন্তু সবকিছুতে পরিপূর্ণ বাংলাদেশ দল হয়তো পরের সিরিজেই খেই হারাবে। তামিম-লিটনের এই ব্যাটিং দৌরাত্ম আগামী কত ম্যাচে দেখা যাবে সে প্রশ্নও ছুঁড়েছেন ভক্তরা। আত্মবিশ্বাসে টুইটম্বুর হয়ে, খিদে বাড়িয়ে, মানসিক শক্তিতে তেজদীপ্ত হয়ে আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি করেছে নিজেদের ড্রেসিংরুমে। কিন্তু সেটা কি পরের সিরিজে অব্যহত থাকবে? নাকি আবারও চূর্ণ-বিচূর্ণ হবে? প্রশ্নটা আপাতত প্রশ্নই থাক। পরের সিরিজ পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করি।
[৬] তবে এমন দাপুটে জয় বাংলাদেশের যে খুব দরকার ছিল। বিশ্বকাপের পর থেকেই কেমন যেন ছন্নছাড়া মনে হচ্ছিল দলকে। টানা হারে চিড় ধরে ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাসে। জিম্বাবুয়ে সিরিজ ছিল আত্মবিশ্বাসের গাঁথুনি শক্ত করার সিরিজ। জিম্বাবুয়কে তিন সংস্করণের ক্রিকেটে ধবল ধোলাই করে বাংলাদেশ দেখিয়েছে নিজেদের দয়ামায়াহীন চেহারা। এটাই যেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যতের বাস্তব চেহারা হয়।