যশোর প্রতিনিধি: [২] জেলার শহরতলীর শেখহাটি এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী জুয়েল বাহিনীর প্রধান জুয়েলের আস্তানা কাজী ছাত্রবাসে অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, বোমা, ধারালো অস্ত্র, মদ, গাঁজা ও ইয়াবাসহ তিন কলেজ ছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ।
[৩] মঙ্গলবার ২৫ ফেব্রæয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এসময় ৭ মামলার আসামি চিহ্নিত সন্ত্রাসী কাজি জুয়েলসহ তিনজন পালিয়ে যায়। জুয়েল শেখহাটি এলাকার কাজি আলমের ছেলে।
[৪] আটককৃতরা হলো যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে তৌফিক ইসলাম, চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বোরাখারাটি গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে আবু হেনা রোকন ও মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস গ্রামের ওসমান আলীর ছেলে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাফিউন।
[৫] যশোর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ২৫ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে তার নেতৃত্বে কোতোয়ালী থানা পুলিশের একটি টিম শেখহাটি কাজী ছাত্রবাসে অভিযান চালায়। এসময় ছাত্রবাসের কক্ষ থেকে একটি পিতলের শর্টগান, একটি ওয়ান শ্যুটার গান, ৫ রাউন্ড গুলি, ৫টি বোমা, তিনটি চাকু, দুটি রামদা, ৯টি রড, এক বোতল মদ, ৫টি খালি মদের বোতল, ১শ' পিস ইয়াবা ও কয়েক পোটলা গাঁজা, দুটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। একই সাথে ওই কক্ষ ব্যবহারকারী তিন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়।
[৬] তিনি আরো জানান, আটককৃতরা হলেন তৌফিক ইসলাম, রাফিউন, ও আবু হেনা রোকনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
[৭] এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, অস্ত্রগুলোর মূল মালিক শেখহাটি এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ নেতা জুয়েল। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। আটককৃতদের সাথে তাকেও মামলার আসামি করা হবে। জুয়েলের নামে কোতয়ালি থানায় অস্ত্র, হত্যা, বিষ্ফোরক, চাঁদাবাজিসহ ৭ টি মামলা রয়েছে।
[৮] ওই ছাত্রবাসটি জুয়েল ও তার সহযোগীদের গোপন আস্তানা ও অস্ত্রভান্ডার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। এখানে মাদক, জুয়া, ও নিয়মিত মেয়েলি কারবার হতো। এছাড়াও এখান থেকে অস্ত্র ও মাদক চোরাচালানের সিন্ডিকেট পরিচালনা করা হত বলে দাবি পুলিশের।
[৯] এদিকে, বুধবার রাত ১টার দিকে অভিযান সাময়িক স্থগিত করা হলেও বুধবার ২৬ ফেব্রুয়ারি পুনরায় ওই মেসসহ জুয়েলের পিতা কাজি আলমের বাড়িতে তল্লাশী কার্যক্রম চালানো হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
[১০] ১৭’ সালের দিকে জুয়েল ও তার স্ত্রী অস্ত্রসহ র্যাবের হাতে আটক হয়। পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে আবারো সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়। শেখহাটি এলাকার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে জুয়েল বাহিনীর হাতে জিম্মি হয়ে রয়েছে। এলাকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজি, বোমাবাজিসহ এমন কোনো অপরাধ মূলক কর্মকান্ড নেই যা জুয়েল বাহিনী করে না। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ