শিরোনাম
◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ উন্নয়ন সহযোগীদের একক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ০১:৪৫ রাত
আপডেট : ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ০১:৪৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সম্মানকে সম্মানীর দ্বারা বিক্রি করলে সেটা আর সম্মানের থাকে না!

কামরুল হাসান মামুন: শিক্ষকতা ও গবেষণা পেশায় কিছু কাজ আছে যা বিক্রয়যোগ্য না। এইজন্যই এই পেশা সম্মানের। অনেকের আরাধ্যের।

বেশ কিছুদিন আগে এক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেকশন বোর্ড মিটিং-এ গিয়েছিলাম। মিটিং চলাকালীন সময়েই একজন একটি এনভেলপ নিয়ে হাজির। জিজ্ঞেস করলাম এটা কি? বললেন "স্যার সম্মানী"! আকাশ থেকে পরলাম ভাবলাম: সম্মানকে টাকা দিয়ে কিনে ফেললে কি কাজটা আর সম্মানের থাকে? আমি অপারগতা জানাই। এতে বোর্ডের অন্য সদস্যরা বেশ মনোকষ্ট পেয়েছেন বলে মনে হয়েছে। পরবর্তীতে বাসায় এসে এটি নিয়ে আরো চিন্তা করলাম। আসলে এইরকম পরিস্তিতে আমার যা করা উচিত ছিল সেটা আমি করেছি। আমি ভাবছিলাম এই অপারগতার মাধ্যমে আমি কি আমার সহকর্মীদেরকে লজ্জায় ফেলছি না? আসলে লজ্জাতেই ফেলা উচিত। এরপরের বার আবার একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বোর্ডের মিটিং ডাকা হয়। আমি স্থির করেছিলাম যাব না। তখন আরেক জ্বালা শুরু হলো। প্রার্থী নিজে ফোন করা শুরু করল। সেটা ছিল আরেক বিড়ন্বনা। সেইবার গিয়ে বাধ্য হয়ে এনভেলপ নিতে হয়েছিল কারণ ওই বোর্ডে অন্য দুইজন সদস্য ছিলেন বয়োজ্যেষ্ঠ এবং একজন আমার সরাসরি শিক্ষক। তাই ঠিক করেছি এখন থেকে যেখানে সিটিং মানির ব্যবস্থা সেখানে যাব না কখনো। এইরকম নজির অন্যত্রও আমি রেখেছি। আসলে আমরা গোটা সিস্টেমটাকেই কুলষিত করে ফেলেছি।  ফেসবুক থেকে

শিক্ষকতা ও গবেষণা এমন একটি পেশা যেখানে অনেক কাজ করতে বিনা পারিশ্রমিকে। যেমন ছাত্র সুপারভিসন, নিজ কোর্সের প্রশ্ন প্রণয়ন ও উত্তর মূল্যায়ন, সেমিনার বা কনফারেন্সে লেকচার দেওয়া, জার্নালে প্রকাশের জন্য আর্টিকেল রিভিউ করা ইত্যাদি। কিন্তু ইদানিং শুনছি এবং দেখছি এইগুলোর জন্য সম্মানী বা টাকার ব্যবস্থা হচ্ছে। এই দেশের শিক্ষকদের আকালে রেখে এইভাবেই তাদের চরিত্র হনন করা হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষকদের মাঝে আমি কোন অহমবোধ দেখি না। আমরা এখন মিলাদ মাহফিলের হুজুরদের মত বা সরকারি আমলা বা ব্যবসায়ীদের মত হয়ে যাচ্ছি। সব কিছুকে টাকা দিয়ে মূল্যায়ন শিখে গেছি। শুনেছি হুজুররা নাকি ইদানিং প্রতি ওয়াজের জন্য অনেক টাকা পান। এটা নাকি এখন অনেকটা ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। আপনারা হুজুর। আল্লাহকে খুশি করার জন্য কাজ করেন। আপনার কাজের জন্য যদি সম্মানী নিয়ে ফেলেন সেই কাজের জন্য কি আল্লাহর কাছ থেকে আর কোন সওয়াব আশা করতে পারেন?

আজ থেকে ৩০ বছর আগেও শিক্ষকরা অনেক কিছু করেই টাকা নিতেন না। তবে দিন যেইভাবে বদলাচ্ছে তাতে এমন দিন আসবে যখন শিক্ষকরা ক্লাসের বাহিরে টাকা ছাড়া ছাত্রকে সময় দিবে না। আসলে ধীরে ধীরে এই সমাজটা নষ্টদের দখলে চলে গেছে। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো শিক্ষকরা এখন চরম ধান্দাবাজ হয়ে গেছে। বর্তমান বাংলাদেশের চরম দুর্নীতি, নীতিহীনতা, অসততার মূল কারণ এখানেই। শিক্ষক যখন অসৎ ধান্দাবাজ হন তখন দেশে অসৎ আর ধান্দাবাজের চাষাবাদ হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়