মাসুদ আলম : শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) ভোর ৪টা ৯মিনিটে মিরপুরের ওই বস্তিতে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট পৌনে ৬টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে আগুনের কারণ ও ক্ষতির পরিমান জানা যায়নি। এঘটনায় এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগুনের বেশ কয়েজন আহত হয়েছে। এরমধ্যে পারভীন নামে এক নারী দগ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় চারিদিকে পড়ে আছে পোড়া টিন-আসবাবপত্র। পোড়া ধ্বংসস্তূপে হাতড়ে মূল্যবান জিনিসপত্র খোঁজার চেষ্টা করছেন। অনেকে মাথায় হাত দিয়ে বিলাপ করছেন।
বস্তির একাধিক বাসিন্দা জানান, গোটা বস্তিবাসী যখন ঘুমিয়ে, ঠিক সেই সময় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুন আগুন চিৎকারে ঘুম ভাঙ্গে তাদের। দ্রæত আগুন ছড়িয়ে পড়ায় পরনের জামা-কাপড় ছাড়া আর কিছু নিয়ে বের হতে পারেনি তারা। আগুনে বসত ঘর ছাড়াও বেশ কিছু দোকান ও রিকশা পুড়েছে। প্রায় চার শতাধিক মানুষ আশ্রয়হীন। অনেকের কপালে সকালের খাবারও মেলেনি। পরিকল্পীতভাবে বস্তিতেই আগুন লাগানো হয়।
ষাটোর্ধ্ব হনুফা খাতুন জানান, ১৯৮৫/১৯৮৬ সাল থেকে ওই বস্তিতে থাকেন তিনি। একটা দোকান ছিল। ওই দোকান দিয়েই সংসার চলত। আড়াই লাখ টাকার মালামাল ছিল দোকানে। সব পুড়ে গেছে। ছেলেকে নিয়ে বস্তিতে থাকেন তিনি। সবকিছু হারিয়ে এখন নি:স্ব তিনি।
রহিমা নামে আরেক নারী জানান, ছেলে-মেয়ের সঙ্গে বস্তিতে থাকেন তিনি। একটা এনজিও থেকে এক লাখ টাকা লোন নেন। সব টাকা ঘরে ছিল। এখন লোনের কিস্তিই দিবো কিভাবে? চোখের সামনে সবকিছু শেষ হয়ে গেলো।
বস্তিটি ঝিলের উপর কাঠের পাটাতন দিয়ে তৈরি। বিশাল জায়গা জুড়ে গড়ে উঠেছে তিনটি আলাদা বস্তি। যার নিয়ন্ত্রক স্থানীয় তিনজন প্রভাবশালী। অবৈধ গ্যাস, বিদ্যুত ও পানির সংযোগও রয়েছে। মাসে কোটি টাকা চাঁদাবাজি হয় বস্তিকে ঘিরে।