নিউজ ডেস্ক: আলোচনা-সমালোচনা, বিতর্ক, সরকারের নানা আশ্বাসরবাণী, নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদারকি, কোনো কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না পুঁজিবাজারের পতন। ফলে প্রায় প্রতিদিনই অব্যাহত পুঁজি হারিয়ে হাহাকার করছেন বিনিয়োগকারীরা। কালের কন্ঠ
২০১৯ সালটা ভালো যায়নি। পতনের ভারে তিন বছর আগে ফিরে গেছে পুঁজিবাজার। আর ২০২০ সালে নতুন আশাবাদ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও আশা খুঁজে পাচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা। ফলে হতভম্ব বিনিয়োগকারী এখন বাজার ছাড়ছেন। তাঁদের প্রশ্ন, আর কত তলানিতে নামবে পুঁজিবাজার? এই পতনই বা ঠেকাবে কে?
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে আস্থা হারিয়েছেন বিনিয়োগকারী। দুর্বল কম্পানির শেয়ার, বছর শেষে লভ্যাংশ কমে যাওয়া বিনিয়োগকারীর ভীতকে নড়বড়ে করে দিয়েছে। গ্রামীণফোনের সঙ্গে সরকারের বকেয়া আদায় দ্ব›দ্ব বাজারকে অস্থির করে তুলেছে। বিদেশীরাও অব্যাহত শেয়ার ছেড়ে মূলধন তুলে নিচ্ছেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তথ্যানুযায়ী, বকেয়া আদায় নিয়ে সরকারের সঙ্গে গ্রামীণফোনের দ্ব›দ্ব পুঁজিবাজারকে অস্থির করে তুলেছে। মূলত বিদেশি বিনিয়াগকারীরা মৌলভিত্তির কম্পানিতে বিনিয়োগ করে। কিন্তু গত বছর থেকে বকেয়া আদায় নিয়ে টানাপড়েন সৃষ্টি হলে বাজার অস্থির হয়ে যায়। সমঝোতায় দ্ব›দ্ব নিরসন না হওয়ায় আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে বিষয়টি।
পুঁজিবাজারের ক্রমাগত পতন ও নিন্মমুখী অবস্থান নিয়ে সর্বশেষ গত ২ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে বৈঠক করেছে পুঁজিবাজারের প্রাইমারি নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (ডিএসই)। ওই বৈঠকে বাজার পরিস্থিতি তুলে ধরার পাশাপাশি সরকারের কাছে একগুচ্ছ প্রস্তাবনা তুলে ধরে প্রতিষ্ঠানটি।
পুঁজিবাজারে সবচেয়ে বড় মূলধনী কম্পানি গ্রামীণফোন। এক হিসাব অনুযায়ী, সরকারের ১২ হাজার কোটি টাকা আদায় নিয়ে টানাপড়েনে বিনিয়োগকারীর ক্ষতি হয়েছে ২১ হাজার কোটি টাকা।
এপ্রিলের শুরুতে গ্রামীণফোনের বাজার মূলধন ছিল ৫৬ হাজার ৩০৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আর গতকাল বুধবার সেই বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৩৪ হাজার ৪৮৬ কোটি ৬৬ লাখ ১৫ হাজার টাকায়। এ সময় গ্রামীণফোনের বাজার মূলধন কমেছে ২১ হাজার ৮২০ কোটি ৮৪ লাখ ৮৩ হাজার টাকা।
গতকাল গ্রামীণফোনের শেয়ার দাম কমেছে ৬.১০ শতাংশ। দিনের শুরুতে ২৭২ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে শেষ হয়েছে ২৫৫ টাকায়। এক দিনেই শেয়ারপ্রতি দাম কমেছে ১৬.৬ টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছর পুঁজিবাজারে এ পর্যন্ত ছয় কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে চার দিনই বড় পতন ঘটেছে। দুই দিন শেয়ার কিনতে সামান্য চাপ থাকায় মূল্যসূচক বাড়ে। এই ছয় দিনে ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ২২৪ পয়েন্ট। চার দিনের পতনে কমেছে ২৩০ পয়েন্ট। অন্য দুই দিনে সূচক বেড়েছে ৬ পয়েন্ট।
এ সময় বাজার মূলধন কমেছে ১৩ হাজার ১২৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। পুঁজিবাজারে বিক্রয়যোগ্য শেয়ারের দাম কমলে বাজার মূলধন হ্রাস পায়। আর ২০১৯ সালজুড়ে পুঁজিবাজারে মূলধন কমেছে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা, মূল্যসূচক কমেছে প্রায় এক হাজার পয়েন্ট।
এক অনুষ্ঠানে পুঁজিবাজারের পতনে বিটিআরসি ও গ্রামীণফোনের দ্ব›দ্বকে মূল কারণ হিসেবে তুলে ধরেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন। ওই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘গ্রামীণফোনের সঙ্গে বিটিআরসির ঝামেলায় শুধু গ্রামীণফোনের ক্ষতি হয়নি, পুরো বাজার কাঠামো ধ্বংস হয়েছে।কারণ বিদেশিরা যখন আসেন, তখন ফান্ডামেন্টাল শেয়ার দেখে আসেন। অনুুলিখন রাকিবুল
আপনার মতামত লিখুন :