আমিরুল ইসলাম : সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের ৮৪তম জন্মবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন পঞ্চাশের দশকের এই লেখক। কবিতা, উপন্যাস, নাটক, ছোটগল্প, কাব্যনাটক, প্রবন্ধ, অনুবাদ তথা সাহিত্যের সব শাখায় তার সাবলীল পদচারণা ছিলো। তার স্ত্রী আনোয়ারা সৈয়দ হকও একজন প্রথিতযশা লেখক, পেশায় যিনি চিকিৎসক।
সৈয়দ শামসুল হকের ভাষ্য অনুযায়ী তার রচিত প্রথম পদ তিনি লিখেছিলেন এগারো-বারো বছর বয়সে। টাইফয়েডে শয্যাশায়ী কবি তার বাড়ির রান্নাঘরের পাশে সজনে গাছে একটি লাল টুকটুকে পাখি দেখে দু’লাইনের একটি পদ ‘আমার ঘরে জানালার পাশে গাছ রহিয়াছে/ তাহার উপরে দুটি লাল পাখি বসিয়া আছে’ রচনা করেন। এরপর ১৯৪৯-৫০ খ্রিস্টাব্দের দিকে ম্যাট্রিক পরীক্ষার পরে ব্যক্তিগত খাতায় ২০০টির মতো কবিতা রচনা করেন। সৈয়দ শামসুল হকের প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে। ফজলে লোহানী সম্পাদিত ‘অগত্যা’ পত্রিকায়।
সেখানে ‘উদয়াস্ত’ নামে তার একটি গল্প ছাপা হয়। সৈয়দ হকের প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা শতাধিক। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘বৈশাখে রচিত পংক্তিমালা’, ‘পরানের গহীন ভিতর’, ‘জলেশ্বরীর গল্পগুলো’, ‘নীল দংশন’, ‘খেলারাম খেলে যা’, ‘বৃষ্টি ও বিদ্রোহীগণ’, ‘নিষিদ্ধ লোবান’, ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’, ‘নূরলদীনের সারাজীবন’ ইত্যাদি। মাত্র ২৯ বছর বয়সে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। স্বাধীনতা-পূর্বকালেই তিনি আদমজী পুরস্কার অর্জন করেন। এ ছাড়া বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ বহু সম্মাননা ও স্বীকৃতিতে তিনি ভূষিত হয়েছেন।