মাজহারুল ইসলাম : এ বরাদ্দ পাচ্ছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগান। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই বরাদ্দ চেয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। এই টাকা আমবাগানের মালিক বা ইজারাদারদের দেয়া হবে। এতে আর কেউ পাখিগুলোকে বাসা থেকে তাড়াতে পারবেন না। যতোদিন ইচ্ছা পাখিরা ওইসব বাসায় থাকবে। প্রতি বছর সরকার থেকে এই ব্যয় বহন করা হবে। যায়যায়দিন
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগানে শামুকখোল পাখিরা বাসা বেঁধেছে। গত চার বছর ধরে তারা এই বাগানে বর্ষার শেষে এসে বাচ্চা ফোটায়। শীতের শুরুতে বাচ্চারা উড়তে শিখলে নিয়ে চলে যায়।
এবারও পাখিরা বাসা বেঁধে বাচ্চা ফুটিয়েছে। বাচ্চারা এখনো উড়তে শেখেনি। কিন্তু ইজারাদার এ সময় বাগানের পরিচর্যা করতে চান। তিনি বাসা ভেঙে আমগাছ খালি করতে চান। গত ২৯ অক্টোবর তিনি একটি গাছের কিছু বাসা ভেঙেও দেন। স্থানীয় পাখিপ্রেমী কিছু মানুষ তাকে বাসা না ভাঙার জন্য অনুরোধ করেন। তাদের অনুরোধে তিনি পাখিদের বাসা ছাড়ার জন্য ১৫ দিন সময় বেঁধে দেন। ১৫ দিনের মধ্যে বাসা না ছাড়লে পাখিদের বাসা ভেঙে দেয়ার ঘোষণা দেন। ওইদিন রাতেই একটি জাতীয় দৈনিকের অনলাইনে পাখিদের বাসা ছাড়তে সময় দেয়া হলো ১৫ দিন' শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরের দিন বিষয়টি আদালতের নজরে এনে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়ার আরজি জানান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রজ্ঞা পারমিতা রায়। আদালত স্বপ্রণোদিত রুলসহ এক আদেশে বলেন, কেন ওই এলাকাকে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হবে না। এটিকে অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হলে বাগান মালিক ও বাগানের ইজারাদারের ক্ষতির সম্ভাব্য পরিমাণ নিরূপণ করে ৪০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক ও বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে বাঘা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শফিউলল্লাহ সুলতান বলেন, এই বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেছেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তিনি ও বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন রেজা বাগানে গিয়ে জরিপ করে দেখেছেন, ৩৮টি আমগাছে পাখিরা বাসা বেঁধেছে। তারা এই গাছগুলোর আমের সম্ভাব্য দাম ও পরিচর্যার ব্যয় নিরূপণ করেছেন। তাদের হিসাব অনুযায়ী, প্রতি বছর ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা ক্ষতি হতে পারে। ক্ষতির এই পরিমাণ নির্ধারণ করে তারা রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক বলেন, তিনি গত মঙ্গলবার প্রতিবেদন ঢাকায় পাঠিয়েছেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গেও তার কথা হয়েছে। বাগান মালিক বা ইজারাদারেরা টাকা পাবেন বলে তিনি আশা করছেন।
আপনার মতামত লিখুন :