আসিফুজ্জামান পৃথিল : আমাদের বিশ্বকে বদলে দিয়েছিলো একটি আবিষ্কার। লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি আবিষ্কারের পর থেকে আমাদের ভ্রম্যমান বিদ্যুতের চাহিদা মিটিয়েই চলেছে। এই অনন্য আবিস্কারের জন্য মার্কিন বিজ্ঞানী জন গুজেনাফ, ব্রিটিশ বিজ্ঞানী স্ট্যানলি উইটিংহ্যাম এবং জাপানি বিজ্ঞানী আকিরা ইয়শহিনোকে সম্মানিত করলো নোবেল কমিটি এবং রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস। ২০১৯ সালে যৌথভাবে রসায়নে নোবেল পেয়েছেন এই ৩ বিজ্ঞানী।
এবার নোবেল কমিটি পুরস্কার দেয়ার জন্য এমন একটি বিষয় বেছে নিলো যা সরাসরি জনসংশ্লিষ্ট। কারণ লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি ব্যবহার করেন না এমন মানুষ পাওয়া কঠিন। এই ৩ রসায়নবিদ এই ব্যাটারি উদ্ভাবনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখেছিলেন। ১৯৭০ দশকের শুরুর দিকে উইটিংহাম প্রথম লিথিয়ামের বহি: আয়নকে প্রথমবারের মতো অবমুক্ত করে তৈরী করে ফেলেন লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি। গুডেনাফ এ ধরণের ব্যাটারির সক্ষমতা দ্বিগুণ করেন। তার আবিস্কারই এই ব্যাটারির ব্যবহার সহজ করে একে জনমুখী করে। ইয়শহিনো ব্যাটারি থেকে বিশুদ্ধ লিথিয়াম বাদ দিতে সক্ষম হন। এর বদলে শুরু হয় পূর্ণ আয়নের ব্যবহার। যা বিশুদ্ধ লিথিয়ামের চেয়ে অনেক নিরাপদ। এরফলে আজ আমাদের মোবাইল থেকে শুরু করে জীবনের সব ক্ষেত্রেই সম্ভব হচ্ছে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির ব্যবহার।
এই বিষয়ে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির অন্যতম সেরা গবেষক ও আধুনিক ব্যাটারির পথিকৃত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ও বাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর সাইফুল ইসলাম দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘আমি তাদের নোবেল পাওয়ায় অত্যন্ত খুশি। এটি বহুদিনের পাওনা ছিলো। কারণ তারা এক বিপ্লবের জন্ম দিয়েছিলেন।’ এই নোবেল তারও পাওয়া উচিৎ ছিলো কিনা এই প্রশ্নের জবাবে সাইফুল বলেন, ‘এই ৩ জন আমাদের পিতার মতো। তাদের প্রাথমিক আবিস্কারের উপর ভিত্তি করেই আমরা এতোদিন কাজ করে এসেছি। তারাই এই পুরস্কারের যোগ্য। এখান থেকে আমরা অনুপ্রেরণা পাবো।’