হ্যাপি আক্তার : বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং বলেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য প্রাক-প্রাথমিক বই ছাপানো হলেও তাদের নিজস্ব ভাষার কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। এই মুহূর্তে আদিবাসীদের নিয়ে আলাদা ৫টি জাতির জন্য ৫টি কমিটি করা হোক। গত তিন বছরেও কাজের কোনো অগ্রগতি হয়নি। সেজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ে গবেষণা হোক। বিবিসি বাংলা ৭:০০
সঞ্জীব দ্রং বলেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ৫টি ভাষায় বই হয়েছে কিন্তু মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট বলছে, বাংলাদেশে ৪১টি ভাষা আছে। বাংলা ও ঊর্দূ ভাষা বাদে বাকি ৩৯টি ভাষা হলো আদিবাসীর ভাষা। তাহলে, ৫টিকে বাদ দিয়ে আরো ১০টি ভাষায় বই ছাপার উদ্যোগ নিতে হবে।
শিক্ষা নীতিমালার কথা উল্লেখ করে সঞ্জীব দ্রং বলেন, আমাদের যে শিক্ষানীতি ছিলো ঐ শিক্ষানীতিতে আদিবাসী শিশুদের প্রাথমিক পর্যন্ত মাতৃভাষায় পড়াশোনার ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছিলো। কিন্তু পাঠ্যবই নিয়ে কোনো রকম নির্দেশনা ও নীতিমালা হয়নি। একটি মনিটরিং টিম হবে সহযোগিতার জন্য। যারা এই বিষয়টিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমরা স্বেচ্ছায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে সহযোগিতা করছি।
তিনি বলেন, সরকার ২০১৬ সালে ৬টি আদিবাসী ভাষায় পাঠদানের উদ্যোগ গ্রহণ করে, সমতল অঞ্চলে গারো, সাঁওতাল ও উড়াও এবং পার্বত্যঅঞ্চলে চাকমা, মারমা ত্রিপুরা। সাঁওতাল বাদে ৫টি মাতৃভাষায় বই রচিত হয়। দুর্ভাগ্য হলো, বই বের হয়েছে মাতৃভাষায় কিন্তু কোনো শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। এটি হলো চূড়ান্ত রকমের অবহেলা, উপেক্ষা ও দুঃখজনক। বই বের হলো কিন্তু তিন বছরে ৫টি ভাষার ৫টি জাতির কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি।
তিনি আরো বলেন, আদিবাসীদের বইটি কখন পড়ানো হবে, স্কুলের শুরুতে শেষে নাকি মাঝে পড়ানো হবে তা উপজেলা বা জেলা থেকে বলা হয়নি। মাতৃভাষার শিক্ষক না হলে তো সে ভাষা পড়াতে পারবে না।
তিনি বলেন, একজন আদিবাসী কিংবা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিশু প্রথম স্কুলে গিয়ে বাংলা বা ইংরেজি শিখতে গিয়ে ধাক্কা খায়। বিষয়টি আন্তর্জাতিকভাবে প্রমাণিত। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে একজন শিশু তার মাতৃভাষায় স্কুলের জীবন শুরু করলে তার ঝড়ে পড়ার হার কমে যায়। সাংস্কৃতিক একটি পরিবেশ সে পায়। সম্পাদনা : কায়কোবাদ মিলন