ইউসুফ আলী বাচ্চু : জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, ‘পার্টির চেয়ারম্যানের শরীরের অবস্থা ভালো না। তার বয়স হয়েছে, তিনি বর্তমানে আছেন কিন্তু তার ভবিষৎ নিয়ে আমি চিন্তিত। তাকে নিয়ে স্বাভাবিক একটা শঙ্কা আসতে পারে । তার অবর্তমানে পার্টির হাল কে ধরবে, পার্টি টিকবে কিনা এই শঙ্কা অনেকের মাঝে আছে, আপনারা বলেছেন কিন্তু আমাকে যেহেতু দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমি আপনাদের লক্ষ্যকে সামনে এগিয়ে নিতে আপনাদের সহায়তা করার জন্য এখানে এসেছি এবং থাকবো। আপনাদের কর্তৃত্ব করার জন্য আসিনি।’
সোমবার দুপুরে মতিঝিল এজিবি কলোনীর কমিউনিটি সেন্টারে ঢাকা, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি ২৯ বছর ক্ষমতার বাইরে। অনেক ষড়যন্ত্র ও অনেক প্রতিকূল অবস্থা মেকাবেলা করে দল একটি শক্তিশালী অবস্থান সৃষ্টি করতে পেরেছে। দল এখন একটি সন্ধিক্ষনে দাঁড়িয়ে আছে। সম্ভাবনাময় একটি রাজনৈতিক দলে হিসেবে জাতীয় পার্টিকে প্রতিষ্ঠিত করতেই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে। নেতা-কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে আগামী দিনে জাতীয় পার্টি চলবে। আর এ জন্যই জাতীয় পার্টি আটটি বিভাগের নেতা-কর্মীদের মতামত ও পরামর্শ শুনতে বিভাগীয় সাংগঠনিক সভার আয়োজন করা হয়েছে। নেতা-কর্মীরা যেন মনে করে জাতীয় পার্টিতে তাদের মালিকানা আছে। শুধু কর্মসূচি বাস্তবায়ন করলেই হবেনা। নেতৃত্ব নির্বাচন ও কর্মসূচি প্রনয়নে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। একটি সফল রাজনৈতিক দলের দৃষ্টান্ত হিসেবে জাতীয় পার্টিতে তৈরী করা হবে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি বলেছেন, আমার জোটবদ্ধ ভাবে নির্বাচন করেছি। নির্বাচন শেষ, নির্বাচনী জোটও শেষ। আমাদের কর্মীদের যদি গায় হাত তোলা হয় তাহলে আমরা তোমাদের সঙ্গে নেই। আমরা ক্ষমতার বাইরে আছি সেখান থেকে চেষ্টা করে দেখব আবার আমরা ক্ষমতায় যেতে পারি কিনা। জাতির পিতা বঙ্গুবন্ধু ৩ বছর সংগঠন করেছেন। জাতির পিতা বলতে কি কোন দ্বিমত আছে আমাদের? বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা বলতে কোন আপত্তি নেই। জিয়াউর রহমান ৩ তিন বছর ছিলো আর হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ৯ বছর ক্ষমতায় ছিলো তা হলে আমাদের দলে এই অবস্থা কেন? এটা আমি-আপনি সবাই জানি। মামা ভাগিনা নামছি এবার চেষ্টা করে দেখি। আমাদের কর্মীদের ওপর অত্যাচার হলে আমরা রাস্তায় থাকবো। প্রতিবাদ করবো।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টিতে কোন বিভেদ নেই। আজকেন প্রোগ্রামে বেগম রওশন এরশাদ আসতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ওনার শরীরটা খারাপ বলে আসতে পারেননি। দলে কোন বিশৃঙ্খলা মেনে নেয়া হবে না। আজ বগুড়ায় নির্বাচন হচ্ছে, জাতীয় পার্টি লাঙ্গল নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছে। এখন আর কোন জোট নেই। আগামীতে আমরা এককভাবে নির্বাচন করবো। আর সেজন্যই দলকে আরো শক্তিশালী করতে আট বিভাগের নেতৃবৃন্দের মতামত গ্রহণ করতেই এই আয়োজন। এখনই মূল্যায়ন করতে হবে কেন আমরা একাদশ জাতীয় নির্বাচনে মাত্র ২২টি আসনে জয়ী হলাম। কোথায় আমাদের ভুল ও ব্যর্থতা সেগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ১৯৯৬ সালে জাতীয় পার্টির সহায়তায় আওয়ামী লীগ ২১ বছর পর ক্ষমতার স্বাদ পেয়েছে। আগামীতে জাতীয় পার্টি যাতে এককভাবে সরকার গঠন করতে পারে, সেজন্য দলকে আরো শক্তিশালী করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান জিএম কাদের।