প্রিয়াংকা আচার্য্য : শিকল ভাঙার পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল ভারতের প্রাচীনতম নারী শিক্ষালয় বেথুন কলেজ। বিপ্লবী প্রীতিলতা, কল্পনা দত্তসহ বহু অগ্রগামী নারীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই ধর্ম নিরপেক্ষ কলেজ। আজকের সময়ে যেখানে দেশটির এবারের নির্বাচনে রাজনৈতিক নেতাদের হাতিয়ার ছিল ধর্ম, সেখানে কলেজ কর্তৃপক্ষ হিন্দু বা মুসলিমের আগে ‘মানবতা’-কে ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে এবার রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অনার্সের ভর্তির সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটিই অনলাইন পদ্ধতিতে করার নিয়ম হয়। বেথুন কলেজ কর্তৃপক্ষ ভর্তি হতে ইচ্ছুক ছাত্রীদের জন্য তাদের ওয়েবসাইটে ফর্ম প্রকাশ করেছেন। সেই ফর্মে সংশ্লিষ্ট পড়য়ার ধর্মবিশ্বাস সংক্রান্ত একটি কলাম রয়েছে। সেখানে মোট ৮টি অপশন রেখেছেন।
তার প্রথমটি হলো- মানবতা। কোনও পড়–য়া যদি নির্দিষ্ট কোনও ধর্মমতে বিশ্বাস না করেন, তাহলে তিনি প্রথম অপশনটি বেছে নিতে পারেন। ওয়েবসাইটে পরবর্তী অপশনগুলি হলো- হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন এবং অন্যান্য।
শিক্ষামহলের একাংশের বক্তব্য, এমন পদক্ষেপ কার্যত নজিরবিহীন। প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘বেথুন কলেজের কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত আধুনিক মানসিকতার পরিচয় দিলেন। শিক্ষাজগতের একজন হিসাবে আমি ওঁদের জন্য গর্বিত। মানুষের প্রাথমিক পরিচয় সে মানুষ। মানবতাই তার সর্বশ্রেষ্ঠ পরিচয়। বেথুন কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা হবু পড়–য়াদের সুযোগ করে দিলেন সেই পরিচয়টিকে সবার সামনে তুলে ধরার।’
বেথুন কলেজের অধ্যক্ষ মমতা রায় বলেন, ‘আমাদের ভর্তি কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোনও ছাত্রীর মনে হতেই পারে সে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মমতগুলিতে নয়, মানবতার ধর্মে বিশ্বাসী। তার জন্য ওই অপশনটি রইল। তবে ধর্মবিশ্বাস আর মানবতার মধ্যে কোনও দেওয়াল আছে বলে আমরা মনে করি না।’ সূত্র : আই ই বাংলা, বঙ্গদর্শন
আপনার মতামত লিখুন :