শিরোনাম
◈ যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় রণক্ষেত্র, পুলিশ মোতায়েন ◈ খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে মেডিকেল বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সিদ্ধান্ত ◈ চুয়াডাঙ্গায় পানের বরজে আগুন ◈ মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবে ডিবি ◈ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি ◈ নির্বাচনের প্রস্তুতি ও প্রচারণা দেখতে আওয়ামী লীগকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বিজেপি ◈ মানবপাচার ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রিসহ বিভিন্ন অভিযোগে মিল্টন সমাদ্দারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে: ডিবি প্রধান ◈ চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ৪৩ ডিগ্রি ◈ কুমিল্লায় শিশু ধর্ষণ ও হত্যার আসামি গ্রেপ্তার  ◈ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব: প্রধান বিচারপতি 

প্রকাশিত : ০৯ মে, ২০১৯, ০৮:৩৫ সকাল
আপডেট : ০৯ মে, ২০১৯, ০৮:৩৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জিপিএ-৫ এর মরণনেশা আমাদের হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মত অজানা গন্ডিতে নিয়ে যাচ্ছে

মৌরী সিদ্দিকা : সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরে সব বাবা-মা’ই বলেন, সন্তানের জন্য দোয়া করবেন যেন মানুষের মত মানুষ হয়। যেন ভালো একটা স্কুলে সুযোগ পায়। শিক্ষার্থীদের এতোটাই চাপে রাখা হয় যে, মাঝে মাঝে তা আত্মহত্যায় রূপ নেয়। চাপ একটাই যেকোনো মূল্যে জিপিএ-৫ পেতে হবে। শিশুদের মনে এমনভাবে গেঁথে যাচ্ছে যে জীবনের একমাত্র লক্ষ্য জিপিএ-৫। -ডেইলি স্টার

শিক্ষকদের অবস্থা আরেক কাঠি সরেস। রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিজ্ঞাপনের ছড়াছড়ি ‘জিপিএ-৫ পাওয়ার গ্যারান্টি সহকারে পড়াই’। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে পড়ালেখা মানেই জিপিএ-৫। ভালো ছাত্রের সংজ্ঞা ওই জিপিএ-৫। ভালো ছেলে মানেই পড়ালেখায় ভালো অর্থাৎ আবারো সেই জিপিএ-৫। অভিভাবক ও শিক্ষার্থী সবারই চিন্তা, চেতনায়, ধ্যানে, জ্ঞানে, মননে- সর্বত্র ওই একই চিন্তা জিপিএ-৫।

পড়াশোনা করতে হবে নিজেকে জানার জন্য, সমাজকে বোঝার জন্য, রাষ্ট্রের প্রতি কর্তব্য পালনের জন্য, বিশ্বকে চেনার জন্য। নতুন কিছু শেখার জন্য।

ভারতের বিখ্যাত তরুণ লেখক চেতন শর্মার বই ‘ফাইভ পয়েন্টস সামওয়ান’। যার উপর ভিত্তি করে বলিউড পরিচালক রাজকুমার হিরানি ‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবিটি তৈরি করেন ২০০৯ সালে। তিন বন্ধুর ভূমিকাই অভিনয় করেছিলেন আমির খান, মাধবন এবং শারমন যোশী। সিনেমার মধ্য দিয়ে ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাকে আমূল নাড়া দেয়া ‘থ্রি ইডিয়টস’। গৎবাঁধা পড়ালেখার মুখে দুর্দান্ত চপেটাঘাতও এই ছবিটি। মুখস্থ বিদ্যার ভয়াবহতা, সঙ্গে ত্রুটিপূর্ণ পরীক্ষা ব্যবস্থার এক করুন চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল সিনেমায়।

জিপিএ-৫ এর নামে ছোট ছোট শিশুদের মাথায় ঢুকিয়ে দিচ্ছি অসুস্থ প্রতিযোগিতা। এতো জিপিএ-৫, এতো মেধাবী জাতি আমরা ভাবতেই কেমন গায়ে শিহরণ দিচ্ছে। এই যে বছর বছর এতো জিপিএ-৫ পায় তাতে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা কতটুকু এগুলো আর প্রতিষ্ঠানগুলোরই বা কী অবস্থা?

যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক উচ্চশিক্ষা নিয়ে গবেষণা করে এমন একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা টাইমস হায়ার এডুকেশন এশিয়াতে উচ্চমানের বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা করেছে। প্রকাশনাটি ২০১৯ সালের যে তালিকা দিয়েছে সেখানে এশিয়ার ৪১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম রয়েছে। তার মধ্যে বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নেই। যদিও দেশে অনুমোদিত ৪২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রায় একশোর মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। কাজাখিস্তান, আফ্রিকার তানজানিয়া কিংবা ইরাকের মতো দেশ জায়গা করে নিয়েছে। পাকিস্তানের ৯টি, ভারতের প্রায় ৫০টি এমনকি ছোট দেশ নেপালের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের নামও রয়েছে। নেই শুধু উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশের নাম।

জিপিএ-৫ এর এই মরণ নেশা আমাদেরকে হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো নিয়ে যাচ্ছে অজানা গন্তব্যে।
জিপিএ-৫ আসক্ত একটি প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশে। দায় শিক্ষার্থীদের নয়। দায় রাষ্ট্রীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনার। একটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা চলে শিক্ষানীতি ছাড়া।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়