রাশিদ রিয়াজ : ইরান থেকে তেলের আমদানি নিষেধাজ্ঞায় ভারতের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। শুধু ভারত নয় আরো সাতটি দেশের ওপর ইরান থেকে তেল আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিতে চাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও চীন ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এধরনের উদ্যোগের কঠোর সমালোচনা করেছে। ইরানও বলছে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করে রেখেছে দেশটি। সোমবার যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে আগামী ১ মে থেকে কাউকেই আর তেহরানের তেল আমদানিতে ছাড় দেবে না তারা। এই ঘোষণার পরেই এক সময়ে বিশ্ব বাজারে পাঁচ মাসে সর্বোচ্চ অঙ্কে পৌঁছায় অশোধিত তেলের দাম। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধারা বজায় থাকলে বিরূপ প্রভাব পড়বে ভারতের উপরে। ভারত সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের এধরনের সিদ্ধান্তের প্রভাব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘাটতি পোষাতে বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি আছে।
পারমাণবিক অস্ত্রের বিষয়ে চাপ তৈরির জন্য আর্থিক ভাবে ইরানকে একঘরে করতে গত ৪ নভেম্বর থেকে তাদের উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে তেল আমদানিতে ছাড় দেওয়া হয় ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, তাইওয়ান, তুরস্ক, ইতালি, গ্রিসকে। অনেকের মতে, ছাড় তোলার সিদ্ধান্তে এদের মধ্যে সব চেয়ে বেশি ধাক্কা খাবে এশীয় দেশগুলিই।
অশোধিত তেলের দর বাড়লে ভারতে তার কিছুটা প্রভাব পড়বে। মধ্যে বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমা ও ডলারের সাপেক্ষে টাকা বাড়ায় আমদানি খরচ কমার সুফল মিলেছিল। কিন্তু আজই পড়েছে টাকার দাম। ১ ডলারের দর ৩২ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৬৯.৬৭ টাকা। অনেকের আশঙ্কা, তেল আরও দামি ও টাকা দুর্বল হলে আমদানি খরচ বাড়বে। তখন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার শুল্ক ছাড় না দিলে পেট্রল, ডিজেলের দামের রাশ টানা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আর জ্বালানির দাম বাড়লে জের পড়তে পারে মূল্যবৃদ্ধির উপরেও।
ইরানের পাশাপাশি ভেনেজুয়েলার তেল রফতানিতেও মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় বিশ্বে তেলের জোগান নিয়ে অস্থিরতা রয়েছে। এর আগে দাম কমায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আর্জিতে সাড়া না-দিয়ে উত্তোলনে রাশ টেনেছিল তেল রফতানিকারীদের সংগঠন ওপেক ও তাদের সহযোগীরা। এখন ইরানের উপরে নিষেধাজ্ঞা পুরো কার্যকর হলে জোগান নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়বে। জোগান না-বাড়লে আরও চড়া হবে তেলের দর। অবশ্য টুইটে ট্রাম্পের দাবি, সৌদি আরব-সহ ওপেক দেশগুলি তেলের জোগানে ঘাটতি পুষিয়ে দেবে। উল্লেখ্য, জুনেই উত্তোলন নিয়ে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে ওপেকের।
এ দিকে, তেল নিয়ে অস্থিরতায় সোমবার পড়ছে ভারতের শেয়ার বাজার। সেনসেক্স ৪৯৫.১০ পয়েন্ট পড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮,৬৪৫.১৮ অঙ্কে। নিফ্টিও পড়েছে ১৫৮.৩৫ পয়েন্ট।