তরিকুল সুমন: সরকার পায়রা বন্দরের মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় ২০২১ সালের মধ্যে পায়রা বন্দরের জন্য দু’টি টার্মিনাল নির্মাণের লক্ষ্যে ছয়টি বার্থসহ টার্মিনাল নির্মাণ এবং ১০ দশমিক ৫০ মিটার গভীরতার চ্যানেল সংরক্ষণকার্যত্রমের অংশ হিসেবে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং কোরিয়ার তিনটি কোম্পানির (জয়েন্ট ভেঞ্চার) মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। মঙ্গলবার নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে । ২০২১ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৩৯৮২.১০ কোটি টাকা।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুস সামাদের উপস্থিতে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর এম জাহাঙ্গীর আলম, কুনহা ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনসাল্টিং কোম্পানি লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট জিয়ং লানোহ, দায়েইয়ং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের ডাইরেক্টর দায়ে জিনকিম এবং হেরিম আর্কিটেক্টস এন্ড প্লানার্স কোম্পানি লিমিটেডের কান্ট্রি ম্যানেজার ইউন স্যাঙজো ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়েছে, পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাজকে দু’টি ফেইজে ভাগ করা হয়েছে। ডিজাইন ফেইজ এবং সুপারভিশন ফেইজ। ডিজাইন ফেইজ অনুযায়ি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের প্রতিটি অঙ্গের পরিকল্পনা প্রণয়ন, ডিজাইন, ড্রইং, প্রাক্কলন, টেন্ডার ডকুমেন্ট এবং বিভিন্ন যন্ত্রপাতির স্পেসিফিকেশন ইত্যাদি প্রস্তুত করবে। সিভিল, ইলেক্ট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল ও আনুষাঙ্গিক কাজ সুপারভিশন করবে সুপারভিশন ফেইজ। পরামর্শক কাজের চুক্তিমূল্য ৭৯,৫২,২৩,৭৮৪.৮০ টাকা। চুক্তি স্বাক্ষরের পর কাজ সম্পন্ন করার সময় ৩৬ মাস। ডিজাইন ফেইজের জন্য ৬ মাস এবং সুপারভিশন ফেইজের জন্য ৩০ মাস সময়।
পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পটি একটি ‘ভোরের পাখি’ প্রকল্প। প্রকল্পের আওতায় স্লোপ প্রোটেকশনসহ জেটি; ইউটিলিটি সার্ভিস এবং ইয়ার্ড সুবিধাসহ টার্মিনাল; অস্থায়ী জেটি এবং বিদ্যমান পানি উন্নয়ন বোর্ড রোড পুনঃনির্মাণ; মেরিন ক্রাফ্ট এবং ইয়ার্ড ইক্যুইপমেন্ট ক্রয়; ছয়-লেন বিশিষ্ট সাড়ে ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘের পোর্ট এক্সেস রোড এবং ছয়-লেন বিশিষ্ট মিডিয়াম সেতু (৫২০ মিটার) এবং প্রায় ১০৫০ মিটার দীর্ঘ ছয়-লেন বিশিষ্ট রিভার ক্রসিং ব্রীজ নির্মাণ করা হবে ।
উল্লেখ্য, পায়রা বন্দর বর্তমান সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারে বাস্তবায়নাধীন ১০টি ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ প্রকল্পের আওতাধিন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। সরকার পায়রা বন্দরের জন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় স্বল্প পরিসরে বন্দরের কার্যক্রম শুরু করার লক্ষ্যে বহিঃনোঙ্গরে বড় জাহাজ থেকে মালামাল খালাস করে বিভিন্ন নৌ-রুটের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরে পরিবহন করা হচ্ছে।