শিরোনাম
◈ শ্রীলঙ্কার কা‌ছে আফগা‌নিস্তান হে‌রে যাওয়ায় সুপার ফো‌রে খেলার সু‌যোগ পে‌লো বাংলাদেশ ◈ বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে টিউলিপের মিথ্যাচার, নতুন সংকটে স্টারমার: ডেইলি এক্সপ্রেসের রিপোর্ট ◈ শুধু অতীতের নয়, বর্তমানের দুর্নীতি থামাতেও নজর দিতে হবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা ◈ বাংলাদেশ ও চীন সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিতে একসাথে এগিয়ে যাবে : প্রধান উপদেষ্টা  ◈ সাফ চ‌্যা‌ম্পিয়নশী‌পে নেপালকে ৪-০ গো‌লে হারা‌লো বাংলাদেশ ◈ শ্রীলঙ্কার প্রতি বাংলা‌দে‌শের সমর্থন, চোখ এড়ায়নি লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের ◈ আফগানিস্তান-শ্রীলংকা ম্যাচের ফল যেমন হলে লাভ বাংলাদেশের ◈ নির্বাচনী দায়িত্বে অপরাধের সাজা বাড়ছে: অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন ◈ দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত সম্পূর্ণভাবে পৃথক করলো সরকার ◈ কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার পক্ষে নয় বিএনপি : সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ২৫ মার্চ, ২০১৯, ০৪:১২ সকাল
আপডেট : ২৫ মার্চ, ২০১৯, ০৪:১২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

২৫ মার্চ : ‘কালরাতে’ আলোর মিছিল

প্রফেসর ড. এম শাহ্ নওয়াজ আলি : একাত্তর আমাদের অনেক চাওয়া না পাওয়ার গল্প। অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার ইতিহাস। যে ইতিহাস রচনা করেছিলেন আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা, নিজের প্রাণের বিনিময়ে। দেশের তরে যে প্রাণ বলি দানে কোনো দ্বিধা তারা করেননি। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের প্রশ্নের দ্বিতীয়বার ভাবেননি, কোনো পিছুটানও তাদের পিছু হটাতে পারেনি। যার ফল ইতিহাস সৃষ্টি হলো। পৃথিবীর মানচিত্রে একটি স্বাধীন ভূখ- যুক্ত হলো। আমরা স্বাধীনতা পেলাম। তবে কীভাবে পেলাম আমরা স্বাধীনতা? একাত্তরের ১ মার্চ থেকে ২৬ মার্চের কীভাবে কাটছিল এদেশের মানুষের দিনগুলো? বিশেষ করে ২৫ মার্চ রাতে যে গণহত্যা চালিয়েছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অপারেশন সার্চ লাইট নামে তার আগের সময়গুলো কিভাবে কাটিয়েছিল দেশের মুক্তিকামী মানুষ। কেমন ছিল সেই সময়ের পরিবেশ?

৭ মার্চ জাতির জনক ঐতিহাসিক ভাষণ দিলেন। জনতা উদ্বেলিত হলো। উৎসাহ-উদ্দীপনা কাজ করছিল। মুক্তির বার্তা জনক তাদের দিয়েছেন। মুক্ত এদেশকে করতেই হবে। মানুষের চেতনায় স্বাধীন দেশ পাওয়ার আকাক্সক্ষা। কারও অনুগ্রহণ, শোষণ-বঞ্চনার মধ্যে দিয়ে বসবাস করতে চায় না। জাতির জনক স্বাধীনতার ডাক দিয়েছেন, প্রয়োজনে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। জনকের ভাষণের সেই বাণী মানুষের মনে অনুরিত হচ্ছিল প্রতিটি মুহূর্তে। একটি সাহসী, আত্মপ্রত্যায়ী মনোভাব কাজ করছিল সাধারণ ছাত্রী-কৃষক-শ্রমিক সব শ্রেণির মনে। পরাধীনতার শিকল আমাদের ভাঙতেই হবে। ভাবনা ও পরিকল্পনায় এগোল বাঙালি স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য। নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক পথেই হাঁটতে থাকল সতর্কতার সঙ্গে। সামান্য ভুলে বিচ্ছিন্ন জাতির কালো দাগ না জোটে।

আমি তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলাম। দেখেছিলাম মানুষের শঙ্কা-আতঙ্ক-উদ্বেগ। এবং একইসঙ্গে আনন্দ, উচ্ছ্বাস, আলোর মিছিলও চোখে পড়ছিল। সবার মধ্যে উদ্বেগ কাজ করলেও আলোর মিছিল, আলোর পথের যাত্রীদের সাহসে ভরপুর ছিল গোটা বাংলাদেশ। আশা ছিল আলাপ-আলাপ আলোচনায় সমাধনসূত্র বের হবে। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকেরা আলোচনার নামে টালবাহানা করে ২৫ মার্চ রাতে গণহত্যা চালাল। স্তব্ধ হলো গোটা দেশ এবং সারা দুনিয়া।

আমাদের জন্য ছিল ভয়ংকর এক অভিজ্ঞতা। পাকিস্তানিরা আমাদের স্তব্ধ করে দিতে চাইল। গণহত্যার মাধ্যমে আমাদের আঁধারের মধ্যে ডুবিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করল। কিন্তু ঘাতক বাহিনীর আশা পূরণ হলো না, ব্যর্থ করে দিল মুক্তিকামী মানুষ। স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার প্রয়াস রুখে দেওয়ার পণ করা বাঙালি রুখে দাঁড়ায়। প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হয়। ২৫ মার্চের কাল রাতেই আমরা আলোর মিছিল বের করেছিলাম। আলোর পথের যাত্রীরা আলো ছিনিয়ে আনে ১৭৯১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। লাল সবুজ পতাকা আমাদের, আমরা লাল সবুজের পতাকার মালিক এখন। সম্ভব হয়েছে ওই কাল রাতের আলোর পথের যাত্রীদের আলোর মিছিলের কারণেই।

লেখক : সদস্য, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়