শিরোনাম
◈ তিন মাসের মধ্যে সালাম মুর্শেদিকে বাড়ি ছাড়তে হবে: হাইকোর্ট  ◈ সরকারের হাত থেকে রক্ষা পেতে জনগণকেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে: বিএনপি ◈ সরকারের ফাঁদে পা দেইনি, দল ছাড়িনি, ভোটেও যাইনি: মেজর হাফিজ ◈ আমার একটাই চাওয়া স্বাস্থ্যসেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ জিম্মি জাহাজ উদ্ধারে অভিযান নয়, আলোচনা চায় মালিকপক্ষ ◈ বিএনপিকে আমরা কেন ভাঙতে যাবো, প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের  ◈ হলমার্ক মামলায় তানভীর-জেসমিনসহ ৯ জনের যাবজ্জীবন ◈ ভোরে গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলা, নিহত ২০ ◈ রাখাইনে আরো একটি শহর দখল করেছে আরাকান আর্মি ◈ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির অভিযোগ, দেশে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত রাজউক

প্রকাশিত : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৩:৫৯ রাত
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৩:৫৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভাব বিনিময়ের ভাষায় কোনো রকম দুর্নীতি কেউ মানতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন আহমদ রফিক

নাঈমা জাবীন : কবি, প্রাবন্ধিক ও ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক বলেছেন, এই যে আমাদের কোনো কোনো শ্রেণিসচেতন লেখক একুশের শ্রেণিচরিত্র বিচার-ব্যাখ্যায় একে যাচাই করতে যুক্তিতর্ক তথ্যের ধোপাখানায় পাঠান, তারপর সাফাই শেষে এর চারিত্রিক যে বড় দিকটা স্বচ্ছ শুভ্র হয়ে ওঠে তাহলো বাংলা রাষ্ট্রভাষার বিষয়টি। যে দাবি ভাষা আন্দোলনের মূল স্লোগান হিসেবে শুধু রাজধানী ঢাকায় নয়, জেলা-মহকুমা-থানা শহর হয়ে গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে গিয়েছিলো। সূত্র: কালের কণ্ঠ
তিনি বলেন, সেসব ক্ষেত্রে প্রধান স্লোগান ছিলো ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’। গ্রামের মানুষ, নিরক্ষর মানুষ রাষ্ট্রভাষার তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য বোঝে না। বোঝে লোকসংগীতে বয়ানেÑ ‘ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়’Ñএটুকুই। এটা তাদের কাছে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মাতৃভাষায় কথা বলে ভাব বিনিময়, চিত্তবিনিময়ের প্রয়োজন সারে। এই ভাষিক সংস্কৃতির মধ্যে তাদের বসবাস, জীবনযাপন। এর মাধ্যমেই তারা দিন, তারিখ, মাস, বছরের হিসাব-নিকাশ করে, সংখ্যাগত গোনাগুনতি করেÑহোক তা টাকা-পয়সা বা অন্য কিছু। মাতৃভাষা-সংস্কৃতি এভাবে তাদের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রেখেছে। শিক্ষিত বাঙালি বঙ্গাব্দের দিন-তারিখের কথা জিজ্ঞেস করলে বিব্রত হয়, গ্রামের মানুষ ঠিক দিন-তারিখটি বলে দেয়, শিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত বা নিরক্ষর মানুষ। এসব কারণে মাতৃভাষার বিষয়টি তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ, যা তাদের অস্তিত্বের অংশ বৈ কিছু নয়। শহরের বা শিক্ষিত মানুষের কাছে মাতৃভাষা উল্লিখিত নিরিখে ধৃত নয়। তারা এর গুরুত্ব বোঝে রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক স্বার্থের পরিপ্রেক্ষিতে। সেখানে রয়েছে ইতি ও নেতিÑএই দুইয়েরই প্রভাব। এই পার্থক্যটুকু মনে রেখে ভাষা আন্দোলনে আমাদের শিক্ষিত শ্রেণি বা তাদের সন্তানদের ভূমিকা বিচার করতে হবে। এটাই বাস্তবতা। তবে ব্যতিক্রম নেহাত কম নয়, যারা একুশকে রাজনৈতিক শ্রেণিচরিত্রের সঙ্গে মিলিয়ে আন্দোলনের চরিত্র বিশ্লেষণ করেন। করেন আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ভাষাসংগ্রামীদের ভাষিক চরিত্র বিচার। সেখানে যেমন রয়েছে স্ববিরোধিতা, তেমনি ভিন্ন চরিত্রের বৈশিষ্ট্য।
তিনি আরো বলেন, আমরা জানি, একুশের আন্দোলনকে বাস্তবায়িত করেছিলো মূলত শিক্ষায়তনের ছাত্রছাত্রীরা। ঢাকায় যদি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাধান্য পেয়ে থাকে, তাহলে নিশ্চিত করে বলা যায় বড় শহরে কলেজছাত্রদের প্রাধান্য এবং ছোট শহর ও গ্রামাঞ্চলে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা ভাষা আন্দোলনের মূল কারিগরÑটেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, বাজিতপুর থেকে চাটমোটর বা আক্কেলপুর। এ বিভাজনে রয়েছে শ্রেণি বিভাজনের দিকটি বিশেষ তাৎপর্যে, মধ্য বা উচ্চবর্গীয় পরিবারের সন্তানদের এতে যোগদান মননশীল বিচার-ভাবনার মাধ্যমে। অবশ্য আবেগ যে সেখানে ছিলো না, তা নয়। তাদের বিচার-ব্যাখ্যায় প্রাধান্য ছিলো দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সামাজিক বৈষম্যের গুরুত্ব। অন্যদিকে নিম্নবর্গীয়দের হিসাবে ভাষিক আবেগটি ছিলো প্রধান বিষয়। তা ছাড়া ছিলো বড়দের তাৎপর্য ব্যাখ্যা, রাষ্ট্রভাষার গুরুত্ব ব্যাখ্যাÑযা না হলে বাঙালির রাষ্ট্রিক স্বার্থ সব নষ্ট হয়ে যাবেÑঅবাঙালি স্বার্থ প্রাধান্য পাবে, বাঙালি আবার দাসে পরিণত হবে। ভাব বিনিময়ের ভাষার (মুখের ভাষা) কোনো প্রকার দুর্গতি কে মানতে চায়? প্রতিবাদ তাই অনিবার্য হয়ে ওঠে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়