সাত্তার আজাদ: সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার বুকচিরে বহমান কুশিয়ারা নদী। ভারতের বরাক থেকে নেমে আসা নদীটি জকিগঞ্জের অমলসীদে দু’ভাগ হয়ে সুরমা কুশিয়ারা নামে প্রবাহিত। উৎসমুখে সুরমায় পলি ভরাটের কারণে কুশিয়ারা দিয়ে পানি প্রবাহিত হয় বেশি। তাই কুশিয়ারা নদী খরস্রোতা। নদীর স্রোতের কারণে কুশিয়ারা পাড়ে নদী ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
দুবাগ, চরিয়া, মইয়াখালিসহ শেওলা ও কুড়ারবাজার ইউনিয়নের ১৩টি গ্রাম কুশিয়ারা নদীর তীব্র ভাঙনের মুখে পড়েছে। ইতিমধ্যে গ্রামের বেশকিছু বসতি ও বাজারের অংশবিশেষ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভাঙন রোধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার ৫ নম্বর কুড়ারবাজার ইউনিয়নের উত্তর আখাখাজনা, লাউঝারি, আঙুরা মোহাম্মদপুর, আঙুরা, গোবিন্দ্রশ্রী, দেউলগ্রাম ও গড়বন্দ গ্রামের বসতিগুলো তীব্র নদী ভাঙনের মুখে পড়েছে। ইতিমধ্যে গ্রামগুলোর পাশের উত্তর আখাখাজনা বাজার এবং ফাড়িরবাজার দুটির প্রায় অর্ধেক নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। দুবাগের চরিয়া গ্রামের অর্ধেক নদী গর্ভে। বিদ্যালয় সমজিদ কবরস্থান তলিয়ে গেছে।
কুড়ারবাজার উচ্চবিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়, পঞ্চখন্ড বালিকা উচ্চবিদ্যালয় এবং জামিয়া মাদানিয়া আঙুরা কওমি মাদ্রাসা ভবন ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। যেকোনো সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। গত পাঁচ বছর ধরে ভাঙনে শতাধিক গাছপালা, দোকানপাট, কবরস্থান নদীতে বিলীন হয়েছে।
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রবাহ সংঘের সহ সভাপতি শিব্বির আহমদ জানান, চলতি বছর ভাঙন তীব্র আকারে দেখা দেয়। এখন শীতেও ভাঙন থামছেনা। স্থানীয় প্রশাসন ও জন প্রতিনিধিদের কাছে গ্রামবাসী কয়েক বছর ধরে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু আজ অবধি কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
শুধু কুড়ারবাজারে ২০ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। অনেকে বসতি অন্যত্র সরিয়েছেন। চরিয়া গ্রামের আব্দুল মালিক জানান, আমাদের গ্রামের অর্ধেক নদীতে। বর্তমান প্রায় মধ্য নদীতে আমার বাড়ি ছিল। আমাদের পাড়ে ভাঙন থামছেই না। এভাবে চললে পুরো গ্রাম নদীতে হারিয়ে যাবে।
আখাখাজনা গ্রামের মাহমুদ হোসেন বলেন, নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে মাটি তোলার কারণে ভাঙন ভয়াবহ হচ্ছে। লাউঝারী গ্রামের বাসিন্দা সাবেক চেয়ারম্যান আলকাছ আলীর পুক্র জাকারিয়া আহমদ বলেন নদীভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসনকে একাধিকবার লিখিত ও মৌখিকভাবে অনুরোধ জানিয়ে কাজ হয়নি
বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানান, কুশিয়ারা নদীর ভাঙর রোধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতনদের জানানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :