সাজিয়া আক্তার : পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে-ই সম্পন্ন করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজীর এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কারিগরি দিক থেকে অত্যন্ত জটিল এ সেতুর পাইল ড্রাইভিং চলাকালে সয়েল কন্ডিশনের কারণে কিছু পাইলের পুনরায় ডিজাইন সম্পন্ন করতে অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজন হয়েছে। এ সত্ত্বেও ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
ইতোমধ্যে পদ্মাসেতু প্রকল্পের ৬২ শতাংশ ভৌত কাজ সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে।
পদ্মাসেতুতে রেল সংযোগ স্থাপন এবং পদ্মাসেতু হয়ে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত রেল সংযোগ স্থাপনের কাজও চলছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ৫৮২ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অবশিষ্ট ১ হাজার ২০৩ একর ভূমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে।
বরিশাল জেলাকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আনার লক্ষ্যে ভাঙ্গা হতে বরিশাল হয়ে পায়রা সমুদ্র বন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
এসময় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, প্রতিটি সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষ যখন সমর্থন ব্যক্ত করে, তখন তার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়। আমাদের বেলায়ও তাই হয়েছে। এদেশের মানুষ আমাদের ইশতেহারের পক্ষে নিরঙ্কুশ রায় প্রদান করেছে।
সংসদ নেতা বলেন, বিএনপি-জামায়াত এবং তাদের দোসরদের পরিচালিত নেতিবাচক সকল কিছুর বিপরীতে আমরা ডিজিটাল মাধ্যমে সার্বক্ষণিক ইতিবাচক প্রচার চালিয়েছি। নির্বাচনী প্রচারকালে দেশের সকল শ্রেণি পেশার মানুষ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতি প্রকাশে সমর্থন জানিয়েছেন। এছাড়া নির্বাচনকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করে জনগণের রায় লাভের জন্য তাদের সামনে আমাদের যাবতীয় অর্জন এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেকোনো গণতান্ত্রিক নির্বাচন হলো পক্ষ এবং প্রতিপক্ষের মধ্যে ভোটারদের সর্মথন আদায়ের প্রতিযোগিতা। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী হলে প্রতিযোগিতা জোরালো হয়। যারা আমাদের প্রতিপক্ষ ছিলো, তাদের কোনো নির্বাচনী প্রস্তুতি কৌশল ছিলো বলে আমার মনে হয়নি।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ ছিলো। তারা দুর্বল প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছিলো। নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন সে বিষয়ে অনিশ্চিয়তা ছিলো। নিজেরা জনগণের জন্য কী করবে, সে কথা বলতে ব্যর্থ হয়েছিলো। সোশাল মিডিয়ায় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছাড়া নিজেদের সাফল্যগাঁথা তুলে ধরতে পারেনি। অবশ্য তাদের সাফল্য বলতে কিছু নেই। ধানের শীষ মার্কায় যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতাদের মনোনয়ন দেয়া, তরুণ ভোটাররা তা মেনে নিতে পারেনি। তরুণরা আর যাই হোক মুক্তিযুদ্ধাপরাধীদের মেনে নিতে পারে না। আর এসব কারণেই ভোটারগণ বিএনপির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন এবং নৌকার অনুক’লে এবার গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছিলো।