অনলাইন ডেস্ক: যশোরে পরীক্ষার মধ্যে একটি উপকেন্দ্র পরিবর্তন করা হয়েছে। হঠাৎ করে কেন্দ্র পরিবর্তন করায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। অবশ্য স্থানীয় প্রশাসন বলছে, মূলকেন্দ্রের অনেক কক্ষ ফাঁকা, সেক্ষেত্রে উপকেন্দ্রের প্রয়োজন পড়ছে না। এদিকে বিষয়টি যশোর শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানে না বলে জানানো হয়েছে। তথ্য- বাংলা ট্রিবিউন
ঘটনাটি ঘটেছে যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধীন অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পাইলট বালিকা বিদ্যালয় উপকেন্দ্রে। রবিবার (৩ ফ্রেব্রুয়ারি) এসএসসি পরীক্ষার দ্বিতীয় দিন এই উপকেন্দ্রের শিক্ষার্থীদের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়। নতুন কেন্দ্র হচ্ছে (মূলকেন্দ্র) নওয়াপাড়া শংকরপাশা সরকারি মাদ্যমিক বিদ্যালয় এবং সম্প্রসারিত কেন্দ্র নওয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ওই উপকেন্দ্রের শিক্ষার্থীদের বাকি পরীক্ষা এই দুটি কেন্দ্রে দিতে হবে।
নওয়াপাড়া পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপকেন্দ্রের সহকারী কেন্দ্র সচিব মো. নূরুজ্জামান জানান, ১৯৮০ সাল থেকে এই উপকেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে আসছে শিক্ষার্থীরা। পরে জেএসসির উপকেন্দ্রেও হয়। এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ৪৫৬ জন এবং ভোকেশনাল পরীক্ষার্থী ২৩০ জন।
তিনি আরও জানান, গত ২৪ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সংক্রান্ত একটি বৈঠক হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. শাহীনুজ্জামান। বৈঠকে কেন্দ্র সচিব, সহকারী কেন্দ্র সচিবসহ উপজেলার সব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
সেদিন উপকেন্দ্র পরিবর্তনের কোনও সিদ্ধান্ত না নেওয়া হলেও পরীক্ষার প্রথম দিন (২ ফেব্রুয়ারি) ইউএনও উপকেন্দ্র পরিবর্তনের নোটিস দিতে নির্দেশনা দেন। নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পরীক্ষা তিনটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নওয়াপাড়া শংকরপাশা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এবং চারটি বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা নওয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় সম্প্রসারিত কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে। অবশ্য, ভোকেশনাল কেন্দ্রটি নওয়াপাড়া পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ে বহাল রয়েছে। উপকেন্দ্র থেকে ৩০টি বেঞ্চ মূলকেন্দ্র ও সম্প্রসারিত কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এদিকে, পরীক্ষার মধ্যে হঠাৎ করে উপকেন্দ্র পরিবর্তন হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। আজিজুর রহমান নামে এক অভিভাবক জানান, কী এমন সমস্যা হয়েছে যে কেন্দ্র পরিবর্তনের মতো ঘটনা ঘটলো? পরিবর্তন করতে হলে আগেই করা উচিত ছিল। এমন সিদ্ধান্ত তাদের সন্তানতদের পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতে প্রভাব ফেলবে।
আরেক অভিভাবক নাজমুল হক জানান, তার মেয়ে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরে কান্নাকাটি করছে। এখন বেশ দূরের কেন্দ্রে তাদের পরীক্ষা দিতে যেতে হবে।
যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র বলেন, ‘পরীক্ষা উপকেন্দ্র পরিবর্তনের বিষয়টি আমাদের জানানো হয়নি। হঠাৎ করে কেন্দ্র পরিবর্তন হলে বাচ্চাদের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।’
অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার- ইউএনও মো. শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘এসএসসির মূলকেন্দ্র নওয়াপাড়া শংকরপাশা সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আর ভেন্যুকেন্দ্র নওয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং নওয়াপড়া পাইলট বালিকা বিদ্যালয়। একসময় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি ছিল, সে কারণে ভেন্যুকেন্দ্রের প্রয়োজন ছিল। এখন পরীক্ষার্থী কম, তাই বাড়তি ভেন্যুর প্রয়োজন নেই। তাছাড়া ভেন্যুকেন্দ্র মূলকেন্দ্র থেকে বেশ দূরে। পরীক্ষা শুরুর আগে মূলকেন্দ্রে প্রশ্নপত্র খোলা হয়। এরপর ভেন্যুকেন্দ্রে ওই খোলা প্রশ্নপত্র নিয়ে যাওয়া হয়। সেক্ষেত্রে ঝুঁকি থেকে যায়। মূলকেন্দ্র নওয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিচতলার সবকটি কক্ষ ফাঁকা পড়ে আছে; তাই দূরবর্তী ওই উপকেন্দ্রের প্রয়োজন নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘লোকাল ম্যানেজমেন্ট উপকেন্দ্র পরিবর্তন করতে পারে; সে কারণে শিক্ষা বোর্ডকে বিষয়টি না জানিয়ে এটি করা হয়েছে।’