আশরাফ চৌধুরী রাজু, সিলেট: গত বছরের মত এবারো হাকালুকিতে রেকর্ড পরিমান মাছ উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বিগত বেশ কয়েক বছর হাকালুকি হাওরে মাছের গড় উৎপাদন ছিল ১৪ হাজার মেট্রিক টন কিন্তু গত বছর প্রায় তা ২০ শতাংশ বেড়ে রের্কড ১৭ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়। এবছর এখনো মাছ ধার শেষ না হলেও মাছের পরিমানের উপর ভিত্তিকরে এবারো ১৬ থেকে ১৭ হাজার মেট্রিকটন মাছ উৎপন্ন হবে বলে আশাবাদী মৎস্য বিভাগ।
মৎস্য বিভাগের সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের বৃহৎ হাওর হাকালুকি দেশের ৪টি মাদার ফিসারিজের অন্যতম । ২০১৭ সালে হাওরে প্রায় ২৮ লাখ টাকার পোনা মাছ অবমুক্ত করা হয়। এর পরই মাছ উৎপাদনের রেকর্ড সৃষ্টি করে। পরের বছর প্রাকৃতিক ভাবেই মাছ উৎপাদনের রেকর্ডে তৃপ্ত মৎস বিভাগ।
কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ জানান, হাওয়াবর্নী, ফুট বিল, নাগুয়া বিল চকিয়া বিলসহ বেশ কয়েকটি বিলে এখনো মাছ ধরা বাকী আছে তবে আমরা আসা করছি এবারো মাছের উৎপাদন ২ বছর আগের যে গড় উৎপাদন ছিল তার থেকে বেশী হবে।
গত বছরের মত এবছরও দেখা মিলছে প্রায় বিপন্ন অনেক প্রজাতির মাছ। যার মধ্যে সংকটাপন্ন ১৩ প্রজাতির মাছ এবং চরম বিপন্ন ৮ প্রজাতির মাছ রয়েছে।
বর্তমানে হাকালুকির বিভিন্ন বিলে মাছ ধরার উৎসব চলছে। বিভিন্ন সাইজের মাছের পাশাপাশি ২০ থেকে ৩০ কেজি ওজনের মাছও ধরা পড়ছে। স্থানীয় জেলেরা জানায়, এ বছর বড় বড় রুই, বোয়াল, আইড়, কমন কার্প, মৃগেল মাছের আধিক্য বেশি হলেও অন্য জাতের দেশি মাছও ধরা পড়ছে। আর চাপিলা, টেংরা, মলা ও চিংড়িসহ বিভিন্ন জাতের প্রচুর ছোট মাছ ধরা পড়ছে। ছোট ও বড় মাছ পৃথকভাবে ঘাটে বিক্রি হচ্ছে। আছে বিলুপ্ত প্রজাতির মাছও।
উৎপাদন বেড়েছে বিপন্ন প্রজাতির মাছের। প্রায় বিপন্ন প্রজাতির মাছ- পাবদা, ফলি, চিতল, আইড়, কালিবাউশ ও গুলশা মাছ এবার বেশি দেখা যাচ্ছে। এছাড়া রানি মাছ, কাকিলা, ছোট চিংড়ি, কাজলি, মলা, পুঁটি, টেংরা, পটকা, ভেদা, গনিয়া, কানি পাবদা ইত্যাদি গত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর অনেক বেশি দেখা মিলছে হাকালুকিতে।
এছাড়া বিপন্ন প্রজাতির মাছ টিলা, খোকশা, অ্যালং ও কাশখাইরা রয়েছে। চরম বিপন্ন প্রজাতির মধ্যে আছে ভাঙন, বাটা, নান্দিনা, ঘোড়া মুইখ্যা ও সরপুঁটি।
পাশাপাশি সংকটাপন্ন মাছের মধ্যে ফলি, বামোশ, টাটকিনি, তিতপুঁটি মাছের দেখা মিলছে হাকালুকিতে। যা জেলা ও উপজেলার কার্যালয়ের সঠিক উদ্যোগের ফসল বলে মনে করছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তারা।
আপনার মতামত লিখুন :