শিরোনাম
◈ পারস্পরিক শুল্ক সংকট: চূড়ান্ত দর-কষাকষিতে বাংলাদেশ ◈ আরব আমিরাতের আবুধাবিতে প্রবাসী বাংলাদেশির ভাগ্যবদল: লটারিতে জিতলেন ৮০ কোটি টাকা ◈ ২৪ ঘণ্টায় গাজায় নিহত ১১৮, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পর্যালোচনায় হামাস ◈ ‘মব এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হলে কঠোর পদক্ষেপ নেবে সেনাবাহিনী’ ◈ হোটেলে নারীকে মারধর করা বহিষ্কৃত যুবদল নেতার বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তারের চেষ্টায় পুলিশ ◈ বনানীর জাকারিয়া হোটেলে ঢুকে নারীদের ওপর যুবদল নেতার হামলা, ভিডিও ◈ দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ জামায়াতের নিবন্ধন পুনর্বহালের গেজেট প্রকাশ ◈ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও শহীদ দিবস পালনের নির্দেশ ◈ তিন দিনের ছুটিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, পাবেন না যারা ◈ উচ্চ ও নিম্ন আদালতকে ফ্যাসিস্টমুক্ত করতে হবে: সালাহউদ্দিন

প্রকাশিত : ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৩:১৭ রাত
আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৩:১৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশে অপরাধ পরিস্থিতি ও আইন

তাসমিয়াহ আহমেদ : বাংলাদেশে অপরাধের হার দিন দিন বাড়ছে। আইনের সংশোধন, আধুনিকায়ন ও পরিবর্তনের সাথে সাথে অপরাধের ধরনেও পরিবর্তন এসেছে। দাঙ্গা, নারী ও শিশু নির্যাতন, অপহরণ, পুলিশের হামলা বা হয়রানির মতো অপরাধ বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ঘটে।

২০১০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ঘটে যাওয়া অপরাধের পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখা যায়, পুলিশের রেকর্ড অনুযায়ী ২০১০ সালে বাংলাদেশে দাঙ্গা ঘটেছে মোট ১৩০টি। নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ১৭ হাজার ৭৫২টি, অপহরণের ঘটনা ৮৭০টি এবং পুলিশি হামলার মতো অপরাধ হয়েছে ৪৩৭টি। ২০১১ সালে দাঙ্গা ১০৯টি, নারী ও শিশু নির্যাতনের হার বেড়ে হয়েছে ২১ হাজার ৩৮৯টি, অপহরণ ৭৯২টি ও পুলিশি হামলা হয়েছে ৫৮১টি। ২০১৭ সালে দাঙ্গা ২৩টি, নারী ও শিশু নির্যাতন ১৭ হাজার ৭৩টি, অপহরণ ৫০৯টি ও পুলিশি হামলা ৫৪৩টি। ২০১৮ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দাঙ্গার হার অনেকটাই কমে দাঁড়িয়েছে ২৬টি। নারী ও শিশু নির্যাতনের হারও বেশ খানিকটা কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ২৫৩টিতে, অপহরণ ৪৪৪ টি ও পুলিশি হামলার ঘটনা ঘটেছে ৮১১টি। এই পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত চার বছরে পুলিশি হামলা ছাড়া অন্যান্য অপরাধের হার কমেছে।

বাংলাদেশের অপরাধ আইনে এই অপরাধগুলোর সংজ্ঞা, ভিত্তি ও শাস্তির বিধান রয়েছে। দাঙ্গার ক্ষেত্রে প্রয়োগযোগ্য আইনগুলো হলো- দ-বিধি-১৮৬০, পুলিশ অ্যাক্ট-১৮৬১, ঢাকা মহানগর পুলিশ অধ্যাদেশ-১৯৭৬, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ অধ্যাদেশ-১৯৭৮ ও খুলনা মহানগর পুলিশ অধ্যাদেশ-১৯৮৫। নারী ও শিশু নির্যাতনের ক্ষেত্রে যে আইনটি প্রয়োগ করা হয় সেটি হলো- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০। আইনটি ২০১২ সালে সংশোধন করা হয়েছে। অপহরণের ক্ষেত্রে দ-বিধি-১৮৬০, কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর-১৮৯৮ ও দ্যা হুইপিং অ্যাক্ট-১৯০৯ এবং পুলিশি হামলার ক্ষেত্রে দ-বিধি-১৮৬০ আইনটি প্রয়োগ করা হয়।

সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন শাস্তি: দাঙ্গার জন্য সর্বনিম্ন শাস্তি হলো দুই বছরের জেল ও জরিমানা, কিংবা উভয় সাজা। নারী ও শিশু নির্যাতনের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন শাস্তি হলো এক বছরের জেল আর সর্বোচ্চ শাস্তি হলো যাবজ্জীবন কারাদ- এবং মৃত্যুদ-। শাস্তির মাত্রাটা নির্ভর করে অপরাধের প্রকৃতি, নারী বা শিশুর বয়স ও অপরাধের চিত্র ও ধরণ অনুযায়ী। জরিমানার বিধানও রয়েছে। অপহরণের ক্ষেত্রেও সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- হতে পারে। তবে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন শাস্তি যাই হোক না কেন সেটা অপরাধের প্রকৃতি, ধরণ ও অপহৃতের বয়স অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়। জরিমানা তো রয়েছেই। দ-বিধি-১৮৬০ অনুযায়ী, পুলিশি হামলার জন্য কোন নির্দিষ্ট শাস্তির ব্যবস্থা নেই।

২০১০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত পাওয়া অপরাধের হার ও তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশের সর্বত্র অপরাধের হার এক নয়। এলাকাভেদে অপরাধের হারের তারতম্য রয়েছে। ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে অপরাধের হার সবচেয়ে বেশি। এই অপরাধগুলোর মধ্যে দাঙ্গার হার তুলনামূলক কম। অন্যদিকে, নারী ও শিশু নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি। আর অপহরণ ও পুলিশি হামলার মতো অপরাধের হার সবচেয়ে কম। তবে পরিশেষে একথা বলা যায় যে, নির্যাতনের দিক দিয়ে বাংলাদেশের নারী ও শিশুরা বিপদের মধ্যে রয়েছে। দেশের প্রায় সর্বত্রই এই অপরাধের হার অনেক বেশি। তবে আশার কথা এই যে, গত কয়েক বছরে এই অপরাধের হারও কিছুটা কমেছে। কিন্তু অপরাধের হার কমাটাই যথেষ্ট নয়। বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে আরো কঠোর ও যথাযথ আইনের প্রয়োগও করতে হবে। সময়ের সাথে সাথে আইন ও শাস্তির বিধানেও সংশোধন ও পরিবর্তন আনতে হবে।

লেখক : এডভোকেট, সুপ্রিম কোর্ট ও দৈনিক আওয়ার টাইমের নির্বাহী সম্পাদক। (মূল ইংরেজি লেখা থেকে অনূদিত ও ঈষৎ সংক্ষেপিত) সম্পাদনা : নুসরাত শরমীন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়