মারুফুল আলম : আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ আলম সারওয়ার বলেছেন, এদেশের খেটে খাওয়া মানুষ, কৃষক-শ্রমিকরা কিন্তু দুর্নীতিবাজ নয়। দুর্নীতিবাজ তারাই, যারা শর্টকাট পন্থায় কিছু করতে চায়। বৃহস্পতিবার এটিএন নিউজ’র এক অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, শর্টকাট পন্থায় বড় লোক হওয়া বা রাজনৈতিক নেতা হওয়া এবং এ রকম কিছু করে দেশকে কন্ট্রোলে নিয়ে যাওয়ার এই মানসিকতাই দুর্নীতির পথ খুলে দেয়।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, যদি কেউ বলে যে, আমি কম চোর ছিলাম, আমার চেয়ে সে বেশি চোর ছিলো সত্যিকার অর্থে এটি কোনো প্রসঙ্গই নয়। এসব কথা পত্রিকায় আসা বা আলোচনার বিষয় হওয়া দুঃখজনক।
তিনি আরো বলেন, দুভ্যাগ্যজনকভাবে যে দেশগুলো আমাদের স্বাধীনতা প্রত্যাশা করেনি, তাদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে আমরা একটি বিপদগ্রস্ত জাতি হিসেবে পরিগণিত হয়েছিলাম। সমাজে সম্পদহীনতার কারণে সম্পদ-বণ্টনে অস্থিরতা দেখা দিয়েছিলো। কিন্তু যখন সামাজিক উন্নয়ন ও দেশপ্রেমের মাধ্যমে আমরা একটি সমাধানের দিকে যাচ্ছিলাম, তখন দেশের প্রতিষ্ঠাতাদের হত্যা করে ক্ষমতায় যাওয়া হয়েছে। যখনই রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রক্রিয়াকে রুদ্ধ করে জোরপূর্বক ক্ষমতায় যাওয়া হয়, তখন ওই ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে কিছু সুবিধা দিতে হয়। সে সময়ই এ দেশে প্রথম দূর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকিকরণ শুরু হয়েছিলো।
শাহ আলম বলেন, তখন রেভিনিউ সেক্টরে বিলি করার মতো টাকা ছিলো না। কারণ, ১৯৭৫ সালে এমন কোনো রেভিনিউ ছিলো না, যার কারণে বিলি করা শুরু হলো ব্যাংকের দরজা খুলে দিয়ে। রাজনৈতিক দল ভাঙতে বা গড়তে প্রত্যেকটি থানায়, উপজেলায়, জেলায় এবং শহরে মধ্যবিত্ত শ্রেণী সৃষ্টি করার জন্য ব্যাংকগুলো থেকে সিনেমা হল, রাইস মিল এ সমস্ত জিনিসের নামে যাদের কোনো অভিজ্ঞতা ছিলো না, তাদেরকে টাকা দেয়া হয়েছিলো। সেই শুরু প্রথম ব্যাংক লুটের ঘটনা।
আজকে যারা বলেন যে, তাদের সময় দূর্নীতি কম ছিলো। তাদের সরকার প্রথম এসে একটি হোয়াইট পেপার করেছিলেন সেদিকে তাদেরকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে বলবো। ক্ষমতায় থেকে সুযোগ বুঝে দুর্নীতি সৃষ্টি করার যে বিষয়, এ দেশে এখন স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।