শিরোনাম
◈ উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত বিএনপির ◈ কেউ যেন নিরাপত্তাহীনতায় না থাকি, আইনের শাসনে জীবনযাপন করি: ড. ইউনূস ◈ মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে ঢাকা ফিরছিলেন রফিক, পথে প্রাণ গেল সবার ◈ স্থায়ী জামিন না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছি: ড. ইউনূসের আইনজীবী ◈ উপজেলার ভোটে এমপি-মন্ত্রীদের হস্তক্ষেপ না করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ : ওবায়দুল কাদের  ◈ শ্রম আইন লঙ্ঘন: ড. ইউনূসসহ ৪ জনের জামিন ২৩ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি ◈ ময়মনসিংহে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ২৬ ◈ ফরিদপুরে বাস-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত বেড়ে ১৩  ◈ ইরানের হামলার জবাব দেবে ইসরায়েল: সেনাপ্রধান ◈ সৌদিতে কোরবানি ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা

প্রকাশিত : ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৫:৪০ সকাল
আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ০৫:৪০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমেরিকায় ঈমান বাঁচাতে আধুনিক শহর ছেড়ে গভীর বনে বসতি গড়ছে মুসলিমরা!

ক্যাটসকিল পর্বতমালার কাছে গভীর বন্। কাছাকাছি কোনো জনবসতিও নেই। কয়েক দশক আগে এখানেই এসে আবাস গড়ে তোলেন কয়েকটি মুসলিম পরিবার। তারা আফ্রিকান বংশোদ্ভূত আমেরিকান এবং এসেছিলেন নিউইয়র্ক সিটি থেকে। তারা আধুনিক এই শহর ছেড়ে এসেছিলেন শহর সভ্যতার ভয়াবহতা থেকে নিজেদের ঈমান ও ইসলামকে রক্ষা করতে। তারা ভয় পাচ্ছিলো হয়তো তাদের আগামী প্রজন্ম নগর সভ্যতার স্রোতে হারিয়ে যাবে।

ইসলামবার্গ নামের এই বসতি গড়ে তোলার উদ্দেশ্য ছিলো মুসলিম শরণার্থীদের জন্য আশ্রয় প্রদান, প্রার্থনার পবিত্র আবহ তৈরি এবং মুসলিম শিশুদের জন্য নিরাপদ ঈমানি পরিবেশ নিশ্চিত করা। এজন্য তারা এই বিচ্ছিন্ন ভূমিকে বেছে নিয়েছেন এবং স্থানীয় প্রশাসন ও নিকটবর্তী শহরগুলোর অধিবাসীদের সঙ্গেও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলছেন। ইন্টানেটের মতো আধুনিক সমাজব্যবস্থার অনুষঙ্গগুলো এখনও ছায়া ফেলেনি এই মুসলিম বসতিতে। যদিও তারা প্রয়োজনে শহরের ক্লিনিক ও অফিসে যান এবং তাদের সন্তানদের কেউ কেউ শহরের সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলেন।

অবশ্য সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসলামবার্গের উপর সরকারি কর্তৃত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়। তাকে ইন্টারনেট সেবার আওতায় আনার উদ্যোগ নেয় স্থানীয় প্রশাসন। তবে শেষ পর্যন্ত তা প্রত্যাখ্যাত হয়।

তবে এরপর ইসলামবর্গের এই রক্ষণশীল পরিবেশ সম্পর্কে ভুল ধারণা ছড়িয়ে পড়ে আমেরিকান সমাজে। প্রচার করা হয় এখানে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য গড়ে উঠেছে। এসব ভুল তথ্যের কারণে কয়েকদিন পূর্বে তিন কিশোর ইসলামবার্গের উপর হামলার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। যদিও তারা কখনও ইসলামবার্গে যায়নি।

স্থানীয় প্রশাসনও এই বিষয়ে মানুষকে সতর্ক করে বলেন, ইসলামবার্গ সম্পর্কে ছড়িয়ে পড়া তথ্য ছিলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

ইসলামবার্গের অধিবাসী হুসাইন আদম বলেন, আমরা মানুষের বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সবার জন্য ভালোবাসা পোষণ করি।

নিউইয়র্ক সিটি থেকে ১৫০ মাইল দূরে অবস্থিত এবং ৬০ একর জমির উপর গড়ে ওঠা এই গ্রামে বর্তমানে ২০০ মুসলিম বসবাস করেন। এদের মধ্যে কয়েকটি পরিবার দুই বা তিন প্রজন্ম ধরে এখানে বসবাস করছে। এখানে আছে একটি সংযোগ সড়ক, গবাদি পশুর চারণভূমি ও একটি পাহাড়ি নদী।

তবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য আবাসযোগ্য ভূমির সংকট তৈরি হয়েছে। আবাসনের জন্য বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ তৈরি এবং ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আরও বেশি ভূমি প্রয়োজন ইসলামবার্গ অধিবাসীদের জন্য। এছাড়াও এখানের প্রতিকূল আবহাওয়া গ্রামটি বছরের অধিকাংশ সময় অন্য এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে। বরফ ও তুষারে ঢেকে থাকে সবকিছু।

ইসলামবার্গের যাত্রা শুরু হয় ১৯৮০ সালে একদল আফ্রিকান বংশোদ্ভূত আমেরিকান মুসলিমদের মাধ্যমে। যারা মাত্র এক যুগ আগে ইসলাম গ্রহণ করেন শায়খ মোবারক আলি শাহ গিলানির মাধ্যমে।

তিনি তার অনুসারীদের শহর ছেড়ে দূরে নিরাপদ অঞ্চলে আবাস গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধ করতেন। যেনো তারা শহরের পাপ ও অন্যায় এবং মুসলিম বিদ্বেষীদের বৈরী আচরণ থেকে আত্মরক্ষা করতে পারেন। তার অনুসারীরা আমেরিকায় ইসলামবার্গের মতো এমন অনেকগুলো নিজস্ব গ্রাম গড়ে তুলেছেন।

অবশ্য দিনদিন ইসলামবার্গের সংরক্ষণশীল পরিবেশ শিথিল হচ্ছে। এখানকার শিশুরা উচ্চ শিক্ষার জন্য দূরের শহরগুলো যাচ্ছে এবং প্রতিবেশীরাও ইসলামবার্গে অবাধ চলাচলের অনুমতি পাচ্ছে। উগ্রবাদের প্রসার হতে পারে এমন শঙ্কা থেকে স্থানীয় প্রশাসনও এই গ্রামটিকে বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে এসেছে। (সংক্ষেপিত)

সূত্র : দ্য নিউইয়র্ক টাইমস অবলম্বনে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়