শাহীন চৌধুরী: দেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার অন্তত ১০ ভাগ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আনুষ্ঠানিকভাবে উৎপাদন শুরু হওয়ার পর এ ব্যাপারে দ্রুত তৎপরতা শুরু হবে। এজন্য আরও একাধিক পারমানু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। এ ব্যাপারে ইতোমধ্যেই জায়গা নির্বাচনের কাজ শুরু করা হয়েছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে দ্বিতীয় পারমানু বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মিত হবে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে দেশের বৃহত্তম প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কাজ চলছে। রাশিয়ার প্রযুক্তি, অর্থায়ন ও সার্বিক সহযোগিতায় দেশটির পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকারী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ‘এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট’ রূপপুর প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। দুই ইউনিটের পারমাণবিক বিদ্য‚ৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের নির্মাণ কাজ শেষ হবে ২০২৩ সালে এবং দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ শেষ হবে ২০২৪ সালে।
সূত্রমতে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ কাজ নির্দিষ্ট গতিতেই এগিয়েই চলছে। শুধু টেকনিক্যাল বিষয়ই নয়, নদী শাসন থেকে শুরু করে মাটি বর্ধন, মাটির ধারণশক্তি তৈরি করা। সেখানে একটি মিনি নদীবন্দর তৈরির কাজও একই গতিতে এগিয়ে চলছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রকে জাতীয় নিরাপত্তার পার্ট হিসেবে দেখতে হচ্ছে। এ কারণে এরই মধ্যে সেখানে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। তারা তাদের দায়িত্ব পালন করছেন। ভবিষ্যতে যাতে সেফটির ক্ষেত্রে কোনো সমসা না হয় সেজন্য কোরক্যাচার বসানো হয়েছে। এটা বাড়তি নিরাপত্তা। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এটা রাশিয়ার উদ্ভাবিত অত্যাধুনিক এবং সর্বশেষ প্রযুক্তি। এর জন্য কয়েক মিনিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত খরচ করতে হয়েছে। কর্মকর্তাদের দাবি, নির্বারিত সময়েই এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ শেষ হবে।
সূত্র জানায়, রূপপুরে প্রতিদিন ৫ হাজার মানুষ কাজ করছেন এর মধ্যে ১৫শ’ বিদেশি, বাকিরা বাংলাদেশী। প্রকল্পের কাজে প্রতিদিন ৫ হাজার টন সিমেন্ট ব্যবহার হচ্ছে। এর ফলে লোকবলের পাশাপাশি অন্য সেক্টরেও ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এখানে আবাসনের জন্য ২১টি ২০তলা ভবন হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১০টির কাজ শেষ হয়েছে। বাকীগুলোর নির্মাণ চলছে।
রূপুপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পর্কে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, শুধু এটাই নয় রূপপুরের পর আরো পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। আমরা প্রাথমিকভাবে জায়গায় নির্বাচন এবং সম্ভাব্যতা যাচাই করছি। তবে আগে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শেষ করে উৎপাদনে যাওয়ার পর অন্যগুলো নির্মাণের কাজ শুরু হবে। টানা তৃতীয়বার এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর সম্প্রতি নিজ কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার যে চ্যালেঞ্জ ছিল সেটা কাটিয়ে নির্মাণ কাজ সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রযুক্তির প্রসারে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেওয়া এবং দুর্নীতি পরিহার ও স্বচ্ছতা বজায় রেখে মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পরিচালনার দৃঢ়তার কথাও তিনি তুলে ধরেন।