জামাল হোসেন খোকন : চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম নিধিকুন্ডু এই গ্রামের ওমর ফারুক খাঁন “খাঁন নার্সারীর প্রতিষ্ঠাতা” আজ থেকে প্রায় আড়াই বছর আগে খুলনার এক আত্নীয় বাড়িতে গিয়ে প্রথম চায়না লেবু গাছ দেখতে পান। সেখান থেকেই কিনে আনেন চায়না লেবুর চারা।
নিজের প্রতিষ্ঠিত খাঁন নার্সারির পাশেই পরীক্ষামূলক এক বিঘা জমিতে চায়না কমলার চাষ করে এখন একজন সফল চাষি। তার কমলা বাগানে গিয়ে গাছে থোকা থোকা কমলা লেবু দেখে কিছুক্ষণের জন্য দৃষ্টি আবদ্ধ হয়ে গেলো। চোখ জুড়িয়ে, মন ভরিয়ে দিলো কমলালেবুগুলো।
নিধিকুন্ডু পুরাতন পাড়া গ্রামের মৃত মঙ্গল আলী খাঁনের ছেলে ওমর ফারুক খাঁন জানান, তিনি একজন মৌসুলি সবজি চাষি। আজ থেকে ৬-৭ বছর আগে অনেকটাই শখের বসে একটি ছোট্ট অনাবাদি জমিতে একটি নার্সারী শুরু করে। সরকারের কৃষি বিভাগের কোনো শিক্ষা-সহযোগিতায় ছাড়াই তিলে তিলে গড়ে তোলেন স্বপ্নের এই বাণিজ্যিক খাঁন নার্সারী।
তার এই নার্সারীতে এখন প্রতিদিন গড়ে ১৪-১৫জন শ্রমিকের রুটি রুজির কর্মসংস্থান। এখানে প্রায় অর্ধশতাধিক প্রজাতির ফল ও ফুলের চারা আছে। তার সৌখিন চাষের মধ্যে এখন আছে কাশ্মীরের আপেল কুল,মালতা,ড্রাগন,বারোমাসি আম ও চায়না কমলা লেবু। তার নার্সারীতে এখন প্রতিদিন দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের সৌখিন চাষীরা চারা নিতে আসেন।
এই সৌখিন চাষি অনেকটাই শখের বসে খুলনার এক আত্নীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে আড়াই বছর আগে নিয়ে আসে চায়না কমলা লেবুর চারা । এক বিঘা জমিতে ১০০শ গাছের চারা রোপণ করেন প্রথম বছর অল্প কমলা ধরলেও এই বছর কমলার বাম্পার ফলন হইছে।
তিনি জানান, কমলা চাষে কম খরচে অধিক লাভ। একটি গাছে এবছর গড়ে ৫০-৫৫ কেজি কমলা ধরেছে। ১০০-১২০ টাকা দরে ঢাকা কাউরান বাজারসহ স্থানীয় বাজারের ক্রেতারা বাগানে এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। তাতে একটি গাছে প্রায় ৫ হাজার টাকার কমলা লেবু বিক্রি হচ্ছে।
এ কমলা স্বাদে কিছুটা টক, তবে পাকলে যেমন মিষ্টি তেমনি সুগন্ধি। এছাড়া লেবুর গায়ের রং তখন হয় গাঢ় কমলা।তিনি আশাবাদী ১ বিঘা জমিতে সব খরচ বাদে সাড়ে চার লক্ষটাকা আয় করবেন। তিনি এই কমলা লেবুর গাছ থেকে কমল চারা তৈরি করছে তার নার্সারীতে ৬মাসের চারা ১০০শ,১বছরে চারা ২০০শ টাকা দরে বিক্রি করছেন।
আবহাওয়াসহ বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সাধারণত ব্যাপকভাবে কমলালেবুর ফলন হয় না। কিন্তু সে ধারণা পাল্টে দিয়েছেন সৌখিন কমলা লেবু চাষি ফারুক খাঁন । তার মতে, সৌখিনতার বশে অনেকে জমির পাশাপাশি টবেও কমলা লেবুর গাছ রোপন করছে। সেখানে ফলনও হচ্ছে আশানুরূপ। খেতে যেমনই হোক, নিজ হাতে-নিজ বাড়িতে ফলনকৃত কমলা লেবুর প্রতি আকর্ষণ থাকবে আলাদাই।
সৌখিন ও সফল লেবু চাষি ফারুক খাঁন মনে করেন, সরকারের কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্টদের সহয়তা, সঠিক দিকনির্দেশনা ও পারিপার্শ্বিক অন্যান্য সুবিধা পেলে ভবিষ্যতে এ অঞ্চলে ব্যাপক ও বানিজ্যিকভাবে কমলা উৎপাদন সম্ভব।
আর এ সম্ভাবনা উদ্ভাসিত হলে লেবু রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।