সাজিয়া আক্তার : সাপ্তাহিক-এর সম্পাদক গোলাম মোর্তোজা বলেন, নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থার জায়গা কমে গেলো। যমুনা টেলিভিশনের রাজনীতি বিষয়ক টকশোতে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন বলেছিলো, সব দল যদি চায়, তাহলেই ইভিএম দেওয়া হবে। তবে সব দলের জায়গা থেকে বের হয়ে এসে ইভিএমের ব্যাপারে অতিরিক্ত আগ্রহ দেখানো শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন।
গোলাম মোর্তোজা বলেন, রাজনীতিতে যে সংকটগুলো আছে, সেটার সমাধান করা সম্ভব। রাজনৈতিক দল হিসেবে বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনায় কতটুক আন্তরিক এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যারা দল কষাকষি করছেন, সমঝোতার জায়গাতে যাওয়ার জন্য তারা কতটুকু ছাড় দেয়, সমাধান সেটার উপর নির্ভর করে। সবার সম্মিলিত পক্ষে যদি যার যার অবস্থানে পরিপূর্ণভাবে অনড় না থেকে কিছুটা সরে, দেশ ও জাতির স্বার্থে, তাহলেই এটা সম্ভব।
তিনি বলেন, সরকার ও জাতীয় এক্যফ্রন্ট, সবাই চাইছে একটি সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। যে নির্বাচনে মানুষ তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে এবং সেই ভোটের মাধ্যমে একটি সরকার নির্বাচিত হবে। যে ৭ দফা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হয়েছে । কিন্তু ৭ দফার মধ্যে এমন কিছু দফা আছে যেগুলো সমাধান এবং সমঝোতা করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে যদি পুরোটা নাও মানা হয়, তবে সংসদ ভেঙে দেওয়ার মত সিদ্ধান্তে যাওয়া সরকারের পক্ষে সম্ভব। যদি বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবি সেটা সম্ভব নাও হয়, তবেও এমন একটি নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা যায়, যেখানে সেই নির্বাচনকালীন সরকারে অন্যদেরকে সম্পৃক্ত করা সম্ভব। যদি আন্তরিকভাবে চাওয়া হয় তাহলে সংবিধানের ভেতরে থেকেও এই সংকটের সমাধান করা সম্ভব। তার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
গোলাম মোর্তোজা বলেন, সরকারের আন্তরিকতার প্রমাণ দেখা যায়, কারণ তারা প্রথম দিকে একটি সংলাপ দিয়েছে এবং পুনরায় তারা আরেকটি সংলাপে সাড়া দিয়েছে। তবে কিছুটা আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের এক ধরনের অনড় অবস্থানের কারণে। তফসিল ঘোষণা পেছাবে কিনা সেটা নির্বাচন কমিশন জোর দিয়ে না বললেও পারতেন। তারা সংলাপ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারতেন। সংলাপের প্রেক্ষিতে যদি সিদ্ধান্ত নিতেন তাহলে ভালো হতো। নির্বাচন কমিশনার তখন বলতে পারতেন কী কারণে কাজটি করা সম্ভব নয়। সেটা না করে নির্বাচন কমিশন বললেন, তফসিল ঘোষণা করা সম্ভব নয়, প্রয়োজনে নির্বাচন পেছানো হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাজ একটি সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা। যেনোতেনো প্রকারের একটি নির্বাচন করে ফেলাই নির্বাচন কমিশনারের কাজ নয়। নির্বাচন কশিনের একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে সংকট থেকে বের হয়ে আসার মত একটি প্রেক্ষাপট তৈরি করা দরকার। নির্বাচন কমিশন এমন কোনো কাজ করতে পারে না, যাতে সংকট থেকে বের হওয়ার পরিবর্তে আরেকটি নতুন সংকট তৈরি হতে পারে। নির্বাচন করা নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব। অবশ্যই সেই নির্বাচনটি হতে হবে সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ, এবং সবার জন্য সমান সুযোগ আছে এমন একটি নির্বাচন।
আপনার মতামত লিখুন :