শিরোনাম
◈ হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিভক্তি প্রকট ◈ দুই দানব ব্ল্যাক হোলের খোঁজ পেল বিজ্ঞানীরা, কী ঘটছে মহাবিশ্বে? (ভিডিও) ◈ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২য় উচ্চতর গ্রেডে আইনি ছাড় ◈ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা সুবিধা চালু করেছে মালয়েশিয়া ◈ শান্তির হ্যাটট্রিক, ভুটানকে সহ‌জেই হারা‌লো বাংলাদেশের মে‌য়েরা ◈ মেট্রো স্টেশনে বসছে এটিএম ও সিআরএম বুথ ◈ ১৬ই জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ রহস্যময় নাকামোতো এখন বিশ্বের ১২তম ধনী, বিটকয়েন সম্পদ ১২৮ বিলিয়ন ডলার ◈ শাহবাগ মোড় অবরোধ করলো স্বেচ্ছাসেবক দল ◈ বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালত প্রাঙ্গণে ডিম নিক্ষেপ, কিল-ঘুষি

প্রকাশিত : ১৪ অক্টোবর, ২০১৮, ০২:৪০ রাত
আপডেট : ১৪ অক্টোবর, ২০১৮, ০২:৪০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ডেঙ্গুতে বাড়ছে শিশুমৃত্যু

নিউজ ডেস্ক: ডেঙ্গু জ্বরে দেশে যত মানুষ মারা যাচ্ছে, তার অর্ধেকের বেশি শিশু। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ডেঙ্গুতে মারা গেছে ১৭ জন। এর মধ্যে শিশু ৯ জন। চার ধরনের ডেঙ্গু ভাইরাসের মধ্যে ডেন-৩ নামের ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। যেসব রোগী দ্বিতীয়বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে, তাদের পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলছেন, যে দেশে একবার ডেঙ্গু ঢোকে, সে দেশ থেকে এই রোগ চিরতরে বিদায় হয় না। মানুষকে সচেতন করে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমানোই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ।

সরকারের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে গত বৃহস্পতিবার পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে ডেঙ্গুতে মোট ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ১৫ বছরের মধ্যে ডেঙ্গুতে এবারই সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ৬ হাজার ৮৭৭ জন। আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা আছে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে একটি শিশু মারা গেছে। তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার ফলাফল এখনো সরকারের নিয়ন্ত্রণকক্ষে এসে পৌঁছায়নি। চিকিৎসকেরা ধারণা করছেন, শিশুটির মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গু হতে পারে। ধারণা সঠিক হলে মৃত্যুর সংখ্যা ১৮ হবে।

হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চিকিৎসক আয়শা আক্তার বলেন, ১৪টি সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতাল এবং ৩৫টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ও আক্রান্তের তথ্য হালনাগাদ করা হয়। ওই হাসপাতালগুলো ডেঙ্গুসহ আরও কিছু সংক্রামক রোগে আক্রান্ত রোগীর তথ্য সরকারকে পাঠায়।

তবে ডেঙ্গু রোগে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান পূর্ণাঙ্গ নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। বিষয়টি অস্বীকার করেননি স্বাস্থ্য খাতের সরকারি কর্মকর্তারাও। তাঁরা বলছেন, দেশের সব হাসপাতাল ও ক্লিনিক যেন সংক্রামক রোগের তথ্য সরকারকে জানায় সে জন্য রোগ নিয়ন্ত্রণ দপ্তর থেকে সব জেলার সিভিল সার্জনদের সম্প্রতি চিঠি দেওয়া হয়েছে।

ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা জানা পরিসংখ্যানের চেয়ে অন্তত ১০ গুণ বেশি হবে বলে মনে করেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ কাজী তারিকুল। তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ডেঙ্গু বিষয়ক জাতীয় নির্দেশিকার তৃতীয় ও চতুর্থ সংস্করণের প্রধান সম্পাদকও। এই চিকিৎসক বলেন, অনেক সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারের তথ্য সরকারের কাছে আসছে না। এই রোগ নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে মানুষকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

ডেঙ্গুতে মৃত ব্যক্তিদের বয়স বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ৯ জনের বয়স ১২ বছরের কম। সবচেয়ে কম বয়সী শিশুটি ছিল ১ বছর ৭ মাসের। সবচেয়ে বেশি বয়সী ছিলেন ৫৫ বছর বয়সী মহিলা। মৃতদের মধ্যে ২৭ বছর বয়সী একজন চিকিৎসকও আছেন।

ডেঙ্গুতে শিশুরা কেন বেশি মারা যাচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তরে ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লা বলেন, শিশুর রোগ প্রতিরোধ বা রোগের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা বয়স্কদের তুলনায় কম। এবং মেডিসিন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক কাজী তারিকুল ইসলাম বলেন, রাজধানী ঢাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি বেশ জটিল আকার ধারণ করেছে। রোগের ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে। এতে আগের চেয়ে বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার প্রতিক্রিয়া অনেকটা সুনামির মতো। প্রথমবারের চেয়ে দ্বিতীয়বারের ভয়াবহতা প্রায় ২০০ গুণ বেশি। অল্প সময়ের মধ্যে রক্তক্ষরণ দেখা দিতে পারে। অনেক রোগীর পেটে বা বুকে পানি জমে যায়। দ্বিতীয়বারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মৃত্যুর হারও বেশি।

একবার যে দেশে ডেঙ্গু ঢোকে সে দেশ থেকে ডেঙ্গু চিরতরে বিদায় হয় না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। তাঁরা বলছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। ২০০০ সালে সরকার ও নাগরিক সমাজ মানুষকে সচেতন করার বড় উদ্যোগ নিয়েছিল। এখনো সেই ধরনের উদ্যোগের প্রয়োজন।

চিকিৎসকদের পরামর্শ হচ্ছে, জ্বর হলে কোনো অবহেলা করা যাবে না। প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনো ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করাও ঠিক হবে না। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।সূত্র: প্রথম আলো

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়