হ্যাপি আক্তার: নির্বাচনে প্রার্থী ও সমর্থকসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী কর্মকর্তারাও জড়িয়ে পড়েন বিভিন্ন অনিয়মে। এগুলো ঠেকাতে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের বদলির ক্ষমতা চায় নির্বাচন কমিশন। একইসঙ্গে জাতীয় নির্বাচনে আসনভিত্তিক তদারকির ক্ষমতা রিটার্নিং অফিসারের হাতে দেয়ার বিধান যুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার এবং এর অপব্যবহারে সাত বছরের জেল, প্রার্থীর খেলাপি ঋণ পরিশোধের শর্ত শিথিলসহ গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে ১৭ দফা সংশোধনীর প্রস্তাব করেছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচনে প্রার্থী-সমর্থকদের সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটছে হরহামেশা। শুধু তাই নয়, সুষ্ঠু নির্বাচনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী কর্মকর্তারাও জড়িয়ে পড়েন বিভিন্ন অনিয়মে। আর এসব ঠেকাতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৭ এর ৬ ধারা বলে যে কোনো সময় নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্ব পালনরত যে কোনো কর্মকর্তা বা আইন প্রয়োগকারী ব্যক্তিকে শুধু প্রত্যাহার করতে পারে নির্বাচন কমিশন।
সংশোধনী প্রস্তাবে প্রত্যাহারের সঙ্গে বদলির বিধানও যুক্ত করা হয়েছে এবার। তাহলে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট যে কাউকে নিয়োগ এবং বদলি করতে পারবে কমিশন। নির্বাচনী আসনভিত্তিক রিটার্নিং অফিসার নিয়োগের প্রস্তাব করে ৭ এর ৫ ধারায় এ সংশোধনী আনার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের পাশাপাশি ইভিএম ব্যবহারের জন্য ধারা ২-এ সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেছেন, আইন আগের মতই থাকছে, শুধু আমরা তাদের তদারকির বিষয়টা তুলে ধরেছি। অঞ্চলভেদে তদারকির ভারটা দুইজন রিটার্নিং অফিসারের উপর রাখার প্রস্তাব করেছি আমরা। নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের কথা উল্লেখ করে কবিতা খানম বলেন, ভোট জালিয়াতি বা ব্যালট পেপার ছিনতাই এমন অপরাধ যদি ইভিএমের ক্ষেত্রেও ঘটে থাকে সেখানে ব্যালট এবং ইভিএম দুইটার কোনটি ব্যবহার করা হবে সেই ক্ষমতা কমিশনে রয়েছে।
আরপিওর ১২ এর ১ ধারায় মনোনয়ন পত্র দাখিলের অন্তত ৭ দিন আগে খেলাপি ঋণ পরিশোধের বিধান রয়েছে। সংশোধনী প্রস্তাবে মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন পর্যন্ত এ সুযোগ রাখার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া মনোনয়নপত্র গ্রহণের বিরুদ্ধেও আপিলের সুযোগ রাখতে ১৫ এর ২ ধারা সংশোধনের কথা বলা হয়েছে। এখন কেবল মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ রয়েছে।
আরপিওতে এমন ১৭ বিষয়ে সংশোধনীর প্রস্তাব করে এ সংক্রান্ত নথি ভেটিংয়ের জন্য ২ সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আসছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আরপিওতে এই সংশোধনীর প্রস্তাব করা হয়েছে। সূত্র: ডিবিসি নিউজ