আশিক রহমান: হুমকি দিয়ে ব্যাংক ঋণের সুদহার কমানো যায় না বলে মনে করেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ব্যাংক ঋণের সুদহার বেশি হওয়ার যে মৌলিক কারণগুলো রয়েছে তা যদি আমরা সংশোধন করতে না পারি তাহলে কেবল নির্দেশনা দিয়ে সুদহার কমানো যে সম্ভব নয় তা তো দেখাই যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ব্যাংকের তারল্য যে টান, বৈদেশিক বাণিজ্যে যে ঘাটতি তার পেছনে ভূমিকা রেখেছে তারল্য সংকট। বাংলাদেশ ব্যাংক তো ডলার বিক্রি করছে। এর ফলে টাকাটা বাজার থেকে বেরিয়ে এসেছে। ঋণ খেলাপির কারণেও তারুল্য সংকট হতে পারে। আপনি ক্রেডিট দিলেন, ফেরত নিয়েই তো আবার নতুন করে ঋণ দিবেন। টাকা ফেরত না এলে ঋণ দেওয়ার টাকা থাকে না।
এক প্রশ্নের জবাবে ড. জাহিদ হোসেন বলেন, আমাদের ডিপোজিট গ্রোথ খুব দুর্বল। কারণ সঞ্চয়পত্রের সুদহার অনেকদিন ধরেই উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। সে তুলনায় ডিপোজিটের সুদহার অনেক কমে গেছে। সঞ্চয়পত্রের সুদহার যদি কোনো রকম সংস্কার করা না হয় তাহলে তো ব্যাংকে ডিপোজিট যাবে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি পরিচালনার ক্ষেত্রে যে সমস্ত ইনস্ট্রুমেন্ট ব্যবহার করা হয় সেগুলো তো ব্যবহার করতে হবে। যেমন রেপো। রেপো ব্যবহার করতে গেলে তো ট্রেজারি বিল লাগে, স্বল্প মেয়াদী যে সমস্ত বন্ড তারা ইস্যু করে সেগুলো বাজারে থাকতে হবে। সরকার তো সঞ্চয়পত্র বিক্রি করেই টাকাটা পেয়ে যাচ্ছে। ব্যাংক ট্রেজারি বিল বিক্রি করে তো টাকা গ্রহণ কোনো প্রয়োজন নেই। বরং উল্টোটা হচ্ছে। যেসব ট্রেজারি ম্যাচিউরড করছে নবায়ন করার প্রয়োজন হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, মনিটরিং পলিসির ইনস্ট্রুমেন্টগুলো ঘাটতি দেখা দিয়েছে এখন। সেজন্য সঞ্চয়পত্রের পলিসি সংস্কার ইমিডিয়েট প্রয়োজন। মুদ্রানীতি পরিচালনার ক্ষেত্রে এটা সহযোগিতা করবে, যা এখন একটা বাধা সৃষ্টি করছে। অন্যদিকে সুদহারে যে ভারসাম্যহীনতা, ডিপোজিট আর সঞ্চয়পত্রের রেটের মধ্যে, সেখানে ব্যবধান কমানোর প্রয়োজন আছে। না হলে ব্যাংকে লোকজন টাকা রাখবে কেন?
সুদহার বেশি বলে মানুষ ব্যাংকে টাকা না রেখে সঞ্চয়পত্র কিনছে। সঞ্চয়পত্র থেকে যেহেতু সরকার টাকা পাচ্ছে সেজন্য তাদের ট্রেজারি বিল ইস্যু করতে হচ্ছে না। ট্রেজারি বিল ইস্যু না করার কারণে পলিসি কন্ডাক্ট করা ডিফিকাল্ট হয়ে গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :