ডেস্ক রিপোর্ট : ‘আপা আমারে বাঁচান। সৌদিরা আমাকে মেরে ফেলবে। আমারে বাঁচতে দেন আপা। ছোট দুইডা বাচ্চা। কেউ কি নেই আমাকে বাঁচায়’Ñ নিয়োগকর্তার পরিবারের ‘সিরিয়াল টর্চার’ সহ্য করতে না পেরে এক নারী অভিবাসী কর্মী কল্পনার (২২) এমন আকুতি। অভিবাসী নারীকর্মীদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রধানের কাছে গত শুক্রবার কল্পনা তাকে বাঁচাতে ভিডিও কল (ইমো) করেন। নারীকর্মীরা বিদেশ যাওার আগে প্রি-ডিপারচার ব্রিফিং চলাকালে ওই সংস্থার পক্ষ থেকে বিদেশগামী নারীদের কাছে সেল নম্বর দেওয়া হয়। জীবিকার প্রয়োজনে সৌদি আরবে গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে যান এই নারী।
১ মাস ২১ দিন কোনোভাবে পার করে ফোনে জানান, ‘আজ আর পারলাম না আপা। কোথায় যাব, কোথায় আশ্রয় নেব। পুলিশে ধরা দিলে ওরা আমাকে আবার মালিকের বাসায় পাঠিয়ে দেবে। ওরা আমাকে পিটায়ে মেরে ফেলবে। ওরা অমানুষ।’শুধু কল্পনাই নয়, বরিশালের মেয়ে সাজেদা (২১) (ছদ্মনাম)। ১৭ মাস আগে অবিবাহিতা এই নারী পরিবার এবং নিজের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। দিন চারেক আগে তিনি ফেরেন অন্তঃসত্ত্বা হয়ে। এখন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে নিজেকে ঘানার নাগরিক বলে প্রলাপ বকছেন। সাজেদার গর্ভজাত সন্তানের দায়িত্ব নিতে এগিয়ে এসেছে একটি বেসরকারি সংস্থা। অথচ যাদের পাঠানো টাকায় দেশের অর্থনীতির চাকার গতি দুর্দান্ত, সেই সরকারের কোনো দায় নেই এসব সাজেদার প্রতি।
মুখে কুলুপ এঁটে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এরা বিনাটাকায় গেছে, ফিরছেও বিনাটাকায়। অতএব সরকারের কী করার আছে! কথা হলোÑ নির্যাতিতাদের পাঠানো রেমিট্যান্স সরকারের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে সুসংহত করলেও তাদের সুরক্ষা নিয়ে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। অবশ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নমিতা হালদারের নেতৃত্বে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিরসনে করণীয় নিয়ে একাধিক সভা হয়েছে বলে জানা গেছে।