শিরোনাম
◈ বর্তমান ডামি সরকার দেশটিকে একটি লুটপাটের দেশ বানাতে চাচ্ছে: রিজভী ◈ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের শেয়ার হস্তান্তরে স্থিতাবস্থা, কাজ বন্ধ ◈ ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস আজ ◈ জাবালিয়া তুমুল লড়াই অন্তত ১২ ইসরায়েলি সেনা নিহত  ◈ ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে, তদন্ত কমিটি গঠন ◈ দুর্নীতির মামলায় জামিন পেলেন ইমরান খান ◈ ৪৮ ঘণ্টার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা জারি ◈ বিমানের সাবেক এমডিসহ ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট ◈ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রের পথে বাংলাদেশ দল ◈ বাংলাদেশে বাড়িতে সন্তান প্রসবের উচ্চহারে জাতিসংঘের উদ্বেগ, পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ

প্রকাশিত : ২০ মে, ২০১৮, ০২:২২ রাত
আপডেট : ২০ মে, ২০১৮, ০২:২২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সড়কে মৃত্যু মিছিল ঠেকাতে সংশ্লিষ্টদের দায় নিতে হবে

আশিক রহমান: রাজধানীর কারওয়ান বাজারে দুই বাস চালকের প্রতিযোগিতায় প্রাণ দিয়েছেন তিতুমীর কলেজছাত্র রাজীব। বেপরোয়া বাস প্রাণ কেড়েছে গৃহকর্মী রোজিনার। ২২ এপ্রিল বগুড়ায় ট্রাকের ধাক্কায় হাত হারিয়েছে এক শিশু। ওই একইদিন কক্সবাজারে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় পা হারিয়েছেন এক রিকশাচালক। ২৩ এপ্রিল প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে নিহত হয়েছে এক বাস চালক। দুদিন আগে ফার্মগেটে এক রিকশাচালক প্রাণ হারিয়েছে। গত দেড় মাসে সারাদেশে চালকদের বেপরোয়া আচরণের শিকার অন্তত নয়টি ঘটনা মানুষের মনে নাড়া দিয়ে গেছে। এগুলো দুর্ঘটনা না হত্যা অথবা হত্যাচেষ্টা, তা নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে সাধারণ মানুষের মনে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, চালকদের মাদকাক্তি, বেপরোয়া গাড়ি চালানো, চাঁদাবাজী, পথচারীদের অসচেতনতা ও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই সড়কের এই মৃত্যু মিছিল। মৃত্যুমিছিল ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব নিতে হবে। চালকদের জন্য বিশেষ কোর্স ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। আইন মানতে হবে।

মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেন, আগে অমানবিক, নিষ্ঠুর আচরণ হলে সামাজিকভাবে তার জোরাল প্রতিবাদ লক্ষ্য করা যেত, এখন সেই সামাজিক শক্তিটা অনেক দুর্বল হয়ে গেছে। সামাজিক শক্তির সেই প্রাণচাঞ্চল্যতা আমরা এখন লক্ষ্য করি না। কেননা, দেশে আইনের শাসন সাংঘাতিক নাজুক অবস্থায় রয়েছে। আইনের শাসন এতটা নিচে নেমে গেছে যে, প্রত্যেকটি মানুষ নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। আজকে সড়কে যে পরিস্থিতি, চালকদের বেপোরোয়ায় প্রাণ যাচ্ছে মানুষের। কোথায় আমরা কি তার জোরাল প্রতিবাদ-প্রতিরোধ-প্রতিকারের দাবি জানাচ্ছি? উল্লেখযাগ্য নয়।

নগরবিশেষজ্ঞ স্থপতি অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত উদাসীন। বাস কোম্পানি, বাস মালিক, চালক, হেলপার এরা প্রায় সবাই অশিক্ষিত বটে। এবং নিজের ভালোটাও বোঝে না। অসচেতন, আইন-কানুন মানতে উৎসাহী নয়। মানানোও হয় না। কোনো চাপও তাদের উপর নেই। রাজনৈতিক শক্তি ও প্রশাসন অত্যন্ত দুর্বল। যে কারণে সড়কে এ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। মানুষও যথেষ্ট সচেতন নয়। অনেক সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হয়। কিন্তু পরিবহনের ক্ষেত্রে যদি আইনশৃঙ্খলা থাকত তাহলে তারাও আইন মানতে বাধ্য হতো। জেব্রা ক্রসিং অথবা ফুটওভার ব্রিজ ছাড়া পার হতো না। বাস চালকদের সঠিক প্রশিক্ষণ নেই, লাইসেন্সও ঠিক থাকে না। দুর্নীতির কারণে এসব আইন-কানুনও মানানো যাচ্ছে না।

মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির বলেছেন, যারা গাড়ি চালান, বিশেষ করে যারা বাস চালান তাদের গাড়ি চালানোর প্রয়োজনীয় জ্ঞানের প্রচ- অভাব রয়েছে। কীভাবে গাড়ি চালাতে হবে বা নিয়ন্ত্রণ রক্ষা করে চলতে হবে তা তাদের জানা নেই বললেই চলে। ট্রাফিক রোলস কেউ মানে না। যাদের দায়িত্ব ট্রাফিক রোলস মানানোর তারা ঘুষ খেতে ব্যস্ত থাকে। নিয়ম-কানুন কেউ মানে না। সবাই যদি নিয়ম-কানুন মানত তাহলে সড়কে এ ধরনের অমানবিক ঘটনা ঘটত না।

চালক-হেলপার-পথচারীদের মধ্যে কেন বেপরোয়া মনোভাব জানতে চাইলে মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক ডা. মো. তাজুল ইসলাম বলেন, চালক- হেলপারদের জন্য বিশেষ কোর্স ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে। শিক্ষিত করে তুলতে হবে। আমরা জানি, অনেক চালক- হেলপারের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। যাদের শিক্ষা নেই তাদের মধ্যে মানবিক মানসিকতা ডেভেলমেন্ট করবে কীভাবে? উপলব্ধি ক্ষমতা বাড়বে কীভাবে। বাড়বে না। এজন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি বলেন, কেউ যদি মাদকাসক্তপ্রবণ হয়, মানসিকভাবে অসুস্থ থাকে তার চিকিৎসক নিতে হবে। মনোবিদের পরামর্শ নিতে হবে। একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তি কখনো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। পথচারীদের মানসিকতাও পরিবর্তন করতে হবে। যখন তখন রাস্তা পার হওয়ার প্রবণতা পরিত্যাগ করতে হবে। আইন-কানুন মেনে চলা উচিত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়