নিজেস্ব প্রতিবেদক : কোটা সংস্কারের আন্দোলনের মধ্যে ছাত্রলীগ নেত্রী ইফফাত জাহান এশাকে হেনস্তার ঘটনা তদন্তে কবি সুফিয়া কামাল হল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে হল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ, ফোন কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি কয়েকজনকে হল থেকে বের করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কয়েকজন শিক্ষার্থীকে তাদের স্থানীয় অভিভাবকের কাছে তুলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন ছাত্রী হলটির আবাসিক শিক্ষক আফরোজা বুলবুল।
কেন দেওয়া হয়েছে- জানতে চাইলে সে বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সবিতা রেজওয়ানা রহমানকে অনেকবার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান হয়রানির অভিযোগটিকে ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দেন।
জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “তদন্ত কমিটি হয়েছে, তদন্তের প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদ তো করতেই পারে।”
গত ১০ এপ্রিলের ঘটনার জের ধরে এই তদন্ত চলছে। সেদিন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা হল ছাত্রলীগের সভাপতি এশার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন
আন্দোলনকারীদের হাত থেকে এশাকে উদ্ধারের পাশাপাশি তাকে তখন সাময়িক বহিষ্কারের কথা জানিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী।
পরে তদন্তের ভিত্তিতে এশার কোনো দোষ না পাওয়ার কথা জানিয়ে তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পাশাপাশি বুধবার অনুষ্ঠিত ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের বৈঠকে এশাকে হেনস্তার জন্য ২৬ শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়।
এরপরই হল কর্তৃপক্ষ হলের শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, তাদের ধমক দিয়ে স্বীকারোক্তি নেওয়ার চেষ্টা চলছে।
এর মধ্যেই বিভিন্ন শিক্ষার্থীর স্থানীয় অভিভাবকদের ডাকা হয় হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
সন্ধ্যার পর থেকে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ব্যাগ নিয়ে হল থেকে বের হতে দেখার কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন একজন দারোয়ান।
আবদুল আউয়াল নামে এক অভিভাবক রাত ১০টার দিকে সাংবাদিকদের বলেন, “আমি আমার বোনকে ফোন দিয়েছিলাম। সে না ধরে তার এক শিক্ষক ধরেন। তিনি আমাকে আসতে বলেন।”
রাত ১২টার দিকে গণিত তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী শারমিনকে নিয়ে তার স্থানীয় অভিভাবক হল থেকে বেরিয়ে আসেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে তারা কোনো কথা বলতে চাননি। শারমিনের অভিভাবক বলেন, তাদের কোনো কথা বলতে মানা করা হয়েছে।
রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে আরেক ছাত্রীকে নিয়ে তার অভিভাবক বেরিয়ে আসেন। সাংবাদিকরা এগিয়ে গেলে তারা কোনো কথা না বলে দ্রুত মোটর সাইকেলে চলে যান।
মো. ফারুক নামে একজন অভিভাবককে রাত সাড়ে ১২টার দিকে হলের সামনে দেখা যায়। ঢাকার ধামরাই উপজেলা থেকে মেয়েকে নিতে আসেন তিনি।
ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, “রাত ৮টার দিকে আমাকে ফোন করে মেয়েকে নিয়ে যেতে বলা হয়। সেজন্য ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে আমাকে আসতে হয়েছে।”
এদিকে হলের ভেতরে শিক্ষার্থীদের জটলা দেখা গেছে। তবে কোনো বিক্ষোভের আওয়াজ পাওয়া যায়নি। সূত্র : বিডি নিউজ
আপনার মতামত লিখুন :