হ্যাপী আক্তার : ২০০৭ সালে দেশের একমাত্র কঠিন শিলা খনি থেকে বাণিজ্যিকভাবে পাথর উত্তোলন করা শুরু করে পেট্রোবাংলা। বেশ কয়েক বছরের প্রশাসনিক জটিলতার নিরসন হলেও, এখন পর্যন্ত লাভের মুখ দেখেনি, দিনাজপুরে দেশের একমাত্র কঠিন শিলা প্রকল্পটি। সব শেষ ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্লেব আকারে পাথর উত্তোলনের অনুমোদন দিলেও সেটিও বাস্তবায়ন হয়নি বহুলাংশে। খনিজ সম্পদ উৎপাদনের দায়িত্বে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার প্রধান, জটিলতার কথা স্বীকার করে বলছেন, আগামীতে প্রশাসনিক সংকট উৎপাদনে বাধা হবে না। এদিকে, খনিজ ও জ্বালানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল হামিদ বিদ্যুৎ জানিয়েছেন- কাক্ষিত উৎপাদন নিশ্চিত করা গেলে, পদ্মা সেতুসহ উন্নয়নমূলক মেগা প্রকল্পে ব্যবহার করা হবে এই খনির পাথর।
বাংলাদেশ তো বটেই, বিশ্বের একমাত্র ভূ-গর্ভস্থ্য কঠিন শিলার খনিটি উত্তরের জেলা দিনাজপুরে। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৪ সালে এখানে কঠিন শিলার বিপুল মজুদের তথ্য উঠে আসে ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের সমীক্ষায়।
দুই দশক পর, ১৯৯৪ সালে উত্তর কোরিয়ার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিকভাবে খনির কার্যক্রম শুরু করলেও, তা হোঁচট খায়। পেরিয়ে যায় বেশ ক’বছর। সবশেষ ২০১৩ সালে পাথর সমৃদ্ধ এই খনির উন্নয়নে বাংলাদেশ ও বেলারুশের যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া ট্রেষ্ট কনসোর্টিয়াম এর সাথে চুক্তি করে খনি কর্তৃপক্ষ ও পেট্রোবাংলা।
সেই থেকে প্রতিদিন তিন শিফটে প্রায় ১ হাজার ফিট নিচ থেকে চলছে উত্তোলন কাজ। শুক্রবার খনিতে নতুন পাথরের স্তর বা স্টোপ উদ্বোধন করে সংশ্লিষ্ট প্রতিমন্ত্রী বললেন- আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় থমকে যাওয়া প্রকল্পটি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, গত তিন বছর যাতব নির্দেশ নিয়ে আসছি। তাই আজকে এই মধ্য পাড়ায় আসা। পদ্মা সেতুর পাথর এখান থেকে নেওয়া যেত। তবে পদ্মা সেতুর পাথর এখন ভূটান, ভারত ও চীন থেকেও আসছে। অন্য দেশ থেকে পাথর আনার কোনো প্রয়োজনই হয় না, দেশে এমন একটি কঠিন শিলা থাকায়।
খনির অচলাবস্থা অপ্রত্যাশিত জানিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার প্রধান বলছেন- সম্প্রসারিত খনি থেকে অচিরেই প্রতিদিন মিলবে প্রায় পাঁচ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি পাথর।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মোঃ ফয়েজউল্লাহ বলেছেন, যে সমস্যাগুলো ছিল তা কাটিয়ে এখন সামনের দিকে এগিয়ে যাব। সম্প্রসারিত খনি থেকে অচিরেই প্রতিদিন মিলবে প্রায় পাঁচ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি পাথর। যে সমস্যাটি পূর্বে ছিল তা আগামীতেও থাকবে না বলে তিনি মনে করেন।
১ দশমিক ৪ বর্গকিলোমিটার ব্যাপ্তির এই খনিতে ১৭২ মিলিয়ন মেট্রিক টন কঠিন শিলার মজুদ রয়েছে। সূত্র : সময় টিভি
আপনার মতামত লিখুন :