আনিস রহমান: নতুন প্রশাসনের বিভিন্ন নীতি ও কর্মকাণ্ডে ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকানদের তিক্ত দ্বন্দ্বে বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর দুই দলকে অভিবাসন ও অবকাঠামোসহ বিভিন্ন বিষয়ে সমঝোতা এবং একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মঙ্গলবার মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে প্রথমবারের মতো দেওয়া স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে ট্রাম্প এ আহ্বান জানান। রয়টার্স
“পার্থক্যগুলোকে সরিয়ে রেখে একমত হওয়ার জায়গা খুঁজে নিতে আজ রাতে আমি সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি; যাদের হয়ে আমরা নির্বাচিত হয়েছি সেই জনগণের সেবার জন্যই ওই একতাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে,” বলেন ট্রাম্প।
দায়িত্ব নেওয়ার বছরপূর্তিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টদের কংগ্রেসে এই স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণ দিতে হয়। এবার এমন এক সময়ে ট্রাম্প এ ভাষণ দিলেন যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার সময় তার শিবিরের সঙ্গে রাশিয়ার সংযোগ নিয়ে জোর তদন্ত চলছে।
দায়িত্বের প্রথম বছরের কর্মকাণ্ডে নাগরিকদের সন্তুষ্টির পরিমাণের দিক থেকেও ট্রাম্পের অবস্থান অন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টদের নিচে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
জরিপ সংস্থা গ্যালোপের বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বছর শেষে ট্রাম্পের কাজে নাগরিকদের সন্তুষ্টির হার মাত্র ৩৮ শতাংশ বলে জানানো হয়েছে।
প্রথম বছর শেষে ওবামার কাজে নাগরিকদের সন্তুষ্টির হার ছিল ৪৯ দশমিক ১ শতাংশ।
ট্রাম্প যখন দুই দলকে কাছাকাছি আসার আহ্বান জানাচ্ছেন তখনও ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের মধ্যে বিরোধ স্পষ্ট।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা অনিবন্ধিত অভিবাসীর সন্তানরা ডাকার আওতায় অস্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি পেয়ে আসছে। এরাই ‘ড্রিমার’ নামে পরিচিত।
ওবামা আমলে হওয়া ওই ডাকা কর্মসূচির মেয়াদ চলতি বছরের ৫ মার্চ শেষ হবে। কর্মসূচির মেয়াদ না বাড়লে অনিবন্ধিত ওই তরুণদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিস্কারের মুখে পড়তে হবে।
ট্রাম্প বলছেন, তিনি ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যে ড্রিমারদের নাগরিক করে নিতে একটি পথ বের করবেন, কিন্তু তার বদলে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে অর্থায়ন ও অভিবাসন প্রক্রিয়ায় কড়াকড়ি আরোপের তার প্রস্তাবে ডেমোক্রেটদের রাজি হতে হবে।
নাগরিকত্বের ক্ষেত্রে ‘চেইন মাইগ্রেশন’ প্রক্রিয়ায় নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে চাওয়ার কথাও জানান ট্রাম্প, এসময় বেশ কয়েকজন ডেমোক্রেট সাংসদ প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্যে দুয়ো দেন।
অভিবাসীদের কেউ যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ নাগরিক হওয়ার পর সেই সূত্রে তার পরিবারের সদস্যদেরও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়াকেই ‘চেইন মাইগ্রেশন’ বলা হয়।
ট্রাম্প শুরু থেকেই এ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে, তিনি চান ‘চেইন মাইগ্রেশন’ নয়, মেধার ভিত্তিতে অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হবে।
অন্যদিকে দশককাল ধরে চলে আসা এ প্রক্রিয়ায় কড়াকড়ি আরোপ কিংবা একে বন্ধ করে দেওয়ার বিপক্ষে ডেমোক্রেটরা।
“চলুন ঐক্যবদ্ধ হই, রাজনীতিকে একপাশে সরিয়ে রেখে আমরা আমাদের দায়িত্ব সম্পন্ন করি, ” ভাষণে বলেন ট্রাম্প।