শিরোনাম
◈ পারস্পরিক শুল্ক সংকট: চূড়ান্ত দর-কষাকষিতে বাংলাদেশ ◈ আরব আমিরাতের আবুধাবিতে প্রবাসী বাংলাদেশির ভাগ্যবদল: লটারিতে জিতলেন ৮০ কোটি টাকা ◈ ২৪ ঘণ্টায় গাজায় নিহত ১১৮, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পর্যালোচনায় হামাস ◈ ‘মব এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হলে কঠোর পদক্ষেপ নেবে সেনাবাহিনী’ ◈ হোটেলে নারীকে মারধর করা বহিষ্কৃত যুবদল নেতার বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তারের চেষ্টায় পুলিশ ◈ বনানীর জাকারিয়া হোটেলে ঢুকে নারীদের ওপর যুবদল নেতার হামলা, ভিডিও ◈ দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ জামায়াতের নিবন্ধন পুনর্বহালের গেজেট প্রকাশ ◈ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও শহীদ দিবস পালনের নির্দেশ ◈ তিন দিনের ছুটিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, পাবেন না যারা ◈ উচ্চ ও নিম্ন আদালতকে ফ্যাসিস্টমুক্ত করতে হবে: সালাহউদ্দিন

প্রকাশিত : ২৬ জানুয়ারী, ২০১৮, ০৮:২২ সকাল
আপডেট : ২৬ জানুয়ারী, ২০১৮, ০৮:২২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

হালদায় তিন মাসে ১৬ ডলফিনের মৃত্যু

ডেস্ক রিপোর্ট : দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে একের পর এক মারা পড়ছে মিঠাপানির ডলফিন। তিন মাসে হালদায় ১৬টি ডলফিন মরে ভেসে উঠেছে বলে জানা গেছে। পানির স্তর নেমে যাওয়ায় নদীতে চলাচলকারী যান্ত্রিক নৌযানের পাখার আঘাতে ডলফিন মারা পড়ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। বিপন্ন প্রজাতির এসব প্রাণী রক্ষায় হালদা নদীকে ডলফিনের অভয়ারণ্য ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা।

হালদা পাড়ের বাসিন্দারা জানান, হাটহাজারীর গচ্ছাখালী খালে মাস্টারবাড়ির কালভার্টের নিচ থেকে সম্প্রতি একটি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে স্লুইসগেট এলাকায় আরেকটি মৃত ডলফিন পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে হালদা নদীতে গেল তিন মাসে ১৬টি ডলফিন মরে ভেসে উঠেছে। এর কারণ হিসেবে তারা বলছে নদী থেকে লাগামহীনভাবে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে ব্যবহৃত হচ্ছে ড্রেজার। বালু পরিবহণে ব্যবহৃত হচ্ছে যান্ত্রিক নৌকা। ফলে ড্রেজার ও যান্ত্রিক নৌকার পাখার আঘাতে হালদায় প্রতিনিয়ত মারা পড়ছে ডলফিন। তাদের অভিযোগ, নদী থেকে বালু তুলে এলাকার প্রভাবশালীরা। তারা আইনের তোয়াক্কা করেন না। প্রশাসন নামমাত্র অভিযান চালালেও দায়ীদের কেউ শাস্তির আওতায় আসছে না। হালদার গড়দুয়ারার সাবেক মেম্বার মোঃ মাহবুবুল আলম বলেন, হালদায় আগে অনেক শুশুক দেখা যেত। এখন আর সেভাবে সেগুলোর দেখা মেলে না। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও ওদের দেখা মেলে না। আবার জেলেদের জালেও আটকা পড়ছে শুশুক। নদীতে যান্ত্রিক নৌকা চলাচল বেড়ে যাওয়ায় মা মাছ ও শুশুক দুই-ই কমে গেছে।

এ প্রসঙ্গে হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির কো-অর্ডিনেটর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া বলেন, দিন দিন হালদা নদীতে ডলফিন মারা পড়ছে। আমরা হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে ৬ মাস ধরে হালদার ডলফিন নিয়ে গবেষণা করছি। অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন, যান্ত্রিক নৌ চলাচল এবং স্লুইসগেটের মাধ্যমে নদী ও শাখা খালে পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করায় হালদায় ডলফিন কমে গেছে। গেল তিন মাসে হালদায় ১৬ ডলফিন মারা যাওয়ার রেকর্ড রয়েছে। হালদায় মা মাছ ও ডলফিন মরে ভেসে উঠার এ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। হালদায় বালু ব্যবসায়ীদের উৎপাত রয়েছে। নদীতে যেসব যান্ত্রিক সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয় সেসব সরঞ্জামের সঙ্গে থাকা ডুবন্ত পাখার আঘাতে এসব জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে। আগের সময়ে পাখার আঘাতে মা মাছ মারা গেলেও এখন মরতে শুরু করেছে ডলফিন। এসব জলজ প্রাণী বিলুপ্ত হলে নদী আর নদী থাকবে না, পরিণত হবে মরা নদীতে। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের সাঙ্গু আর কর্ণফুলী নদীতে কয়েক বছর আগে এ প্রাণীর উলোট-পালটের দৃশ্য দেখা গেলেও এখন আর দেখা মিলে না। শুধু হালদা নদীতেই সংখ্যার বিবেচনায় বেশি ডলফিন ছিল। এখন যেভাবে মরতে শুরু করেছে, সেই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে নদীটি ডলফিনশূন্য হয়ে পড়বে। তাই এ ব্যাপারে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির তথ্যমতে, হালদা নদী থেকে উদ্ধার হওয়া মৃত ডলফিনগুলো অতি বিপন্ন প্রজাতির। মিঠা পানির এ প্রজাতির ডলফিনের সংখ্যা সারা বিশ্বে আছে ১ হাজার ২০০। এগুলোর রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের বিভিন্ন নদ-নদীতে। ভারতে এ ডলফিনের স্বীকৃতি রয়েছে জাতীয় জলজ প্রাণী হিসেবে। সে দেশে গঙ্গার একটি অংশে রয়েছে এসব ডলফিনের অভয়াশ্রম। বাংলাদেশের পদ্মা, গঙ্গা শাখা নদীগুলোয় অল্প কিছু ডলফিনের বিচরণ রয়েছে। এর মধ্যে হালদা নদীতেই রয়েছে ২০০ থেকে ২৫০টির মতো।

হাটহাজারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আজহারুল আলম বলেন, হালদায় মিঠাপানির প্রচুর ডলফিন রয়েছে। হঠাৎ করে নদীতে ডলফিন মারা যাওয়ার ঘটনায় মৎস্য অধিদপ্তর উদ্বিগ্ন। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ডলফিনগুলো যান্ত্রিক নৌকার ডুবন্ত পাখার আঘাতে মারা যাচ্ছে। এর বাইরে রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে কিনা, তা-ও পর্যবেক্ষণ করছি।সূত্র : আলোকিত বাংলাদেশ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়