আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনের বিরুদ্ধে মালদ্বীপে ভূমি দখলের অভিযোগ এনেছেন দেশটির নির্বাসিত বিরোধী দলীয় নেতা এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ। তিনি বলেন, রাজনৈতিক গোলযোগপূর্ণ ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশটির সার্বভৌমত্বকে খাটো করছে ওই বৃহৎ এশীয় রাষ্ট্র।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বোতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
নাশিদ বলেন, ১,১৯২ কোরাল দ্বীপের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা দেশটির ১৬টি ক্ষুদ্র দ্বীপ লিজ নিয়েছে চীনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। তারা সেখানে বন্দরসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করছে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট অভিযোগ করেন যে চীনের উপস্থিতি সাড়ে তিন লাখ জনসংখ্যার মুসলিম রাষ্ট্রটির পাশাপাশি বৃহত্তর ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে হুমকির সৃষ্টি করতে পারে। চীনের কর্মকাণ্ডকে তিনি ‘ভূমি দখল’ হিসেবে অভিহিত করেন।
নাশিদ বলেন, ‘এটা উপনিবেশবাদ এবং আমরা কখনোই তা মেনে নেবো না। আমরা চাই যে এ অঞ্চলের অন্য দেশগুলো আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে চীনা সম্প্রসারণবাদের বিরুদ্ধে একই সুরে কথা বলুক। আমরা কোন দেশের বিরুদ্ধে নই, প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগের বিরুদ্ধেও নই, আমরা শুধু আমাদের সার্বভৌমত্ব হরণকারীদের বিরুদ্ধে।’
তিনি আরো বলেন যে মালদ্বীপের ৮০% বৈদেশিক ঋণ চীনের কাছে। মালে এই ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে তাকে আরো ভূমি ও অবকাঠামো বেইজিংয়ের হাতে তুলে দিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে নাশিদ শ্রীলংকার সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসা আমলের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। রাজাপাকসা চীনের কাছ থেকে ব্যাপকভাবে ঋণ নেন। ফলে বর্তমান সকারকে ওই ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে প্রকল্প বিক্রি করে দিতে হচ্ছে।
মালদ্বীপে চলতি বছর অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে চান নাশিদ। তিনি জানান যে নির্বাচনে জয়ী হলে চীনের সঙ্গে বর্তমান চুক্তিগুলো নিয়ে দরস্তুতর করবেন। বর্তমান সরকার জনগণকে না জানিয়ে চীনের সঙ্গে চুক্তি করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
২০০৮ সালে মালদ্বীপের প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে বিজয়ী হন নাশিদ। ২০১৩ সালের নির্বাচনে তিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিনের কাছে হেরে যান।
ইয়ামিন সরকার নাশিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনে এবং তাকে কারাদণ্ড দেয়। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু তিনি আর দেশে না ফিরে দুই বছর ধরে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন।
ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত হওয়ায় নাশিদ আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারছেন না। তবে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি হলে এই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে বলে তিনি মনে করেন।